সিরীয় বিদ্রোহীদের জোটকে ইসলামপন্থীদের প্রত্যাখ্যান-বিষয়টিকে বিদ্রোহীদের জন্য বড় ধাক্কা বলছেন বিশ্লেষকরা

আত্মপ্রকাশের দুই সপ্তাহেরও কম সময়ের মধ্যে প্রথম বড় ধরনের বাধার মুখে পড়েছে সিরিয়ার সরকারবিরোধী পক্ষগুলোর নতুন জোট। 'ন্যাশনাল কোয়ালিশন অব ফোর্সেস অব দ্য সিরিয়ান রেভল্যুশন অ্যান্ড অপজিশন' (এনসি) নামের এ জোটকে স্বীকৃতি দিতে অস্বীকার করেছে দেশটির ইসলামপন্থী বিদ্রোহী গ্রুপগুলো।
এর মধ্যে আল-নুসরা ফ্রন্ট ও লিওয়া আল-তাওহিদ নামের দুটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ গ্রুপও রয়েছে। এ ঘটনাকে এনসির জন্য বড় আঘাত হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকরা।
এদিকে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি বলেছেন, সংঘাত পরিহার করলেই কেবল সিরীয় বিদ্রোহীদের সঙ্গে প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ সরকারের আলোচনা সম্ভব। বাইরে থেকে অস্ত্র প্রবেশের পথ বন্ধ করাই সিরিয়া সংকটের একমাত্র সমাধান বলেও মত দেন তিনি।
চলমান সহিংসতায় গত সোমবার দামেস্কের উপকণ্ঠে দারায়া নামক স্থানে ৪৭ বিদ্রোহী মারা গেছে বলে জানিয়েছে সরকারপন্থী শাম এফএম রেডিও।
গত ১১ নভেম্বর কাতারের রাজধানী দোহায় আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মপ্রকাশ করে এনসি। আসাদবিরোধী এ জোটকে ইতিমধ্যে সিরীয় জনগণের একমাত্র বৈধ প্রতিনিধি হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে ফ্রান্স, তুরস্কসহ উপসাগরীয় দেশগুলো।
সিরিয়ার ইসলামপন্থী ১৪টি গ্রুপ গতকাল মঙ্গলবার ইন্টারনেটে পোস্ট করা একটি ভিডিও চিত্রে এনসিকে স্বীকৃতি না দেওয়ার ঘোষণা দেয়। তাদের একজন মুখপাত্র বলেন, 'এনসি নামের ষড়যন্ত্রমূলক প্রকল্পকে আমরা যৌথভাবে প্রত্যাখ্যান করছি এবং সিরিয়াকে ইসলামী রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দিচ্ছি।'
বৈরুতের আমেরিকান বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক হিলাল খাশান বলেন, 'ইসলামপন্থীদের এ ঘোষণা এনসির জন্য বড় একটি ধাক্কা। পরিস্থিতি এমনটা হতে পারে- এটি আঁচ করেই হয়তো এনসিকে সিরিয়ার জনগণের একমাত্র বৈধ প্রতিনিধি হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার ব্যাপারে সতর্ক অবস্থায় আছে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য।' তিনি জানান, আসাদ বাহিনীকে পরাস্ত করতে পশ্চিমাদের কাছ থেকে সামরিক সহায়তা চায় এনসি। এর ফলে ইসলামপন্থীদের ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন ব্যাহত হতে পারে_এমন চিন্তা থেকেই তারা হয়তো এনসির বিরোধিতা করছে। তবে খাশান এও জানান, পশ্চিমারা বিদ্রোহীদের সহায়তা করতে চাইলে ইসলামপন্থীদের বিরোধিতা খুব একটা প্রভাব ফেলতে পারবে না। সে ক্ষেত্রে ইসলামপন্থীদের সঙ্গে ভারসাম্য রক্ষায় সেক্যুলার গ্রুপগুলোর হাতে অস্ত্র দিতে হবে বলে তিনি মত দেন।
ইরানের রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশন প্রেস টিভির বরাত দিয়ে চীনের বার্তা সংস্থা সিনহুয়া গতকাল জানায়, ইরানের সর্বোচ্চ নেতা খামেনি বলেছেন, বিরোধীদের হাতে বাইরে থেকে অস্ত্র আসবে, আর কোনো দেশের সরকার তা রোধ করবে না, এটা হতে পারে না। তিনি বলেন, আসাদবিরোধীরা অস্ত্র পরিত্যাগ করার পর সরকারকে তাদের কথা শোনার দাবি জানাতে পারে। সরকারও সে ক্ষেত্রে বিরোধীদের আলোচনার টেবিলে বসার ব্যাপারটির অনুমোদন দেবে। সূত্র : এএফপি, জিনিউজ।

No comments

Powered by Blogger.