দেশজুড়ে ব্যাপক লোডশেডিং-বেলা তিনটা থেকে রাত ৯টা সিএনজি স্টেশন বন্ধ থাকবে

ঢাকাসহ সারা দেশ ব্যাপক লোডশেডিংয়ের কবলে পড়েছে। গতকাল বুধবার দিন-রাতনির্বিশেষে সর্বত্র প্রায় প্রতি ঘণ্টায় লোডশেডিং হয়েছে। ঢাকার কয়েকটি এলাকা থেকে প্রথম আলোর কার্যালয়ে টেলিফোন করে গ্রাহকেরা জানতে চান বিদ্যুৎ পরিস্থিতির আসলে কোনো উন্নতি হয়েছে কি না।

এদিকে গতকাল বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত সভায় আজ থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ানোসহ সংকট নিরসনে কয়েকটি ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
পিডিবি সূত্র জানিয়েছে, আগের কয়েক দিনের তুলনায় গতকাল বিদ্যুতের উৎপাদন কিছুটা কম হয়েছে। তাদের হিসাবে, গতকাল দেশে বিদ্যুতের সর্বোচ্চ চাহিদা ছিল পাঁচ হাজার ৭০০ মেগাওয়াট। উৎপাদনের লক্ষ্য ধরা হয়েছিল চার হাজার ৯৮৫ মেগাওয়াট। ঘাটতি থাকে ৭১৫ মেগাওয়াট।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে ছয় হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিকল্পনা করা হয়েছে। এ জন্য বিদ্যুৎকেন্দ্রে গ্যাসের সরবরাহ বাড়ানো হবে। সব তেলচালিত কেন্দ্র প্রয়োজনে সর্বোচ্চ ক্ষমতায় চালানো হবে। বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ে গতকাল অনুষ্ঠিত এক সভায় ওই পরিকল্পনা চূড়ান্ত করা হয়। এশিয়া কাপ ক্রিকেটের ফাইনাল খেলা দেখা নির্বিঘ্ন করতে এই উদ্যোগ বলে জানা গেছে।
এ ছাড়া, গতকালের সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, সেচ মৌসুম শেষ না হওয়া (মে মাস) পর্যন্ত প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত নয়টা পর্যন্ত সারা দেশের সব সিএনজি স্টেশন বন্ধ রাখতে হবে। এত দিন সন্ধ্যা ছয়টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত কলকারখানা বন্ধ রাখার যে আদেশ ছিল, তা সন্ধ্যা ছয়টা থেকে সকাল ছয়টা পর্যন্ত বাড়ানোর জন্য সরকারের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট গ্রাহকদের অনুরোধ জানানো হবে।
এর বাইরে রাত আটটায় দোকানপাট বন্ধ করা, বিদ্যুতের সর্বোচ্চ চাহিদার সময় (সন্ধ্যা ছয়টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত) শীতাতপ নিয়ন্ত্রণযন্ত্র, বৈদ্যুতিক ওভেন, ওয়াশিং মেশিন না চালানো এবং ওয়েল্ডিং ও বৈদ্যুতিক ইস্ত্রির দোকান বন্ধ রাখার আগের আদেশ বহাল থাকবে।
গতকাল দুপুর থেকে ঢাকার বারিধারা, বাড্ডা, সাতারকুল, মিরপুরের বিভিন্ন এলাকা, মোহাম্মদপুর, বাসাবো, মুগদাপাড়া, পুরান ঢাকার লালবাগ, নারিন্দা প্রভৃতি এলাকা থেকে গ্রাহকেরা টেলিফোনে প্রতি ঘণ্টায় লোডশেডিংয়ের খবর জানিয়েছেন। লোডশেডিংয়ের কারণে কোনো কোনো এলাকায় পানি সরবরাহ ও বাড়ির ট্যাংকে পানি ওঠানোও বিঘ্নিত হয়েছে।
বিদ্যুৎ বিতরণকারী সংস্থাগুলোর সূত্র জানায়, পিডিবির হিসাব অনুযায়ী, বিদ্যুতের উৎপাদন ঘাটতি ৭১৫ মেগাওয়াট হলে সারা দেশে সারা দিন ধরে প্রতি ঘণ্টায় লোডশেডিং হওয়ার কথা নয়। চাহিদা ও উৎপাদনের হিসাবে ব্যাপক গরমিল না হলে এতটা লে ডশেডিং হওয়ার কথা নয়।

No comments

Powered by Blogger.