সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ ডলফিনের বসতি by এ কে আজাদ

সুন্দরবনের শেলা নদীতে ছড়িয়ে পড়া তেলের কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে ডলফিনের অভয়ারণ্য হিসেবে চিহ্নিত চাঁদপাই এলাকা। ঢাংমারি ও দুধমুখী অভয়ারণ্য এলাকা তেমন ক্ষতি না হলেও মাঝারি মাত্রায় ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। ট্যাংকার ডুবির কারণে পুর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জ এলাকার সাতটি পয়েন্ট বা এলাকা ও শরণখোলা রেঞ্জের ছয়টি এলাকার বৃক্ষে ওই তেলের প্রভাব পড়েছে। ছড়িয়ে পড়া তেল সুন্দরবনের জীববৈচিত্রের ওপরে কী ধরনের প্রভাব ফেলেছে, তার প্রাথমিক হিসাব করে এসব তথ্য জানিয়েছে বন বিভাগ। জেলেরা গত রবিবার শেলা নদীতে একাধিক মরা ডলফিন দেখার কথা জানিয়েছেন গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে। তবে বন বিভাগের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সোমবার পর্যন্ত কোন জলজ প্রাণীর মৃতদেহ উদ্ধার করতে পারেনি কেউ। ওয়াল্ড লাইফ কনজার ভেটিব সোসাইটির প্রধান রুবায়েত মুনসুর জানান, যে এলকায় ট্যাংকারটি ডুবেছে সেই এলাকা ইরাবতিসহ ৬ প্রকারের ডলফিনের অভয়ারণ্য এরাকা হিসেবে চিহিৃত। এতে বনজ ও জলজ প্রাণীদের মধ্যে সবচেয়ে ডলফিনেরই বেশী ক্ষতি হয়েছে। ট্যাংকার ডুবির সঙ্গে সঙ্গে তেলের কারণে ডলফিনের চলা ফেরা ও বিচারণ স্থান পরিবর্তন হয়েছে। তবে পানির অক্সিজেন পরিবর্তন হওয়ায় এখন আবার ফিরে আসতে শুরু করেছে তারা। পূর্ব সুন্দরবনের ডলফিনের জন্য চাদঁপাই থেকে আন্দরমানিক ৫শ ৬০ হেক্টর, ঢাংমারী থেকে ঘাগরা পর্যন্ত ৩শ ৪০ হেক্টর ও দুধমুখী থেকে সুপতি পর্যন্ত ১শ ৭০ হেক্টর খাল অভয়ারণ্য ঘোষণা করা হয়েছে সরকারি ভাবে। তবে ঘটনার দিন থেকে এ পর্যন্ত বনের ওই সব এলাকায় পরিবেশবিদ,বনবিভাগ,ওয়াল্ড লাইফ, জীব বৈচিত্র গবেষনাসহ বেশ কয়েকটি টিম সর্বক্ষণিক মনিটরিং করছে। গত ৯ই ডিসেম্বর ভোররাতে বনের মৃগামারী এরাকায় ওটি সাউদার্ন ষ্টার-৭ ডুবির পর থেকে রাষ্ট্রয়ত্ত তেল কোম্পানি পদ্মা অয়েল তেল ক্রয় কেন্দ্র খোলেন। আজ প্রতিষ্ঠানটি তার তিনটি বিক্রয় কেন্দ্র থেকে মোট ৮ হাজার ২শ লিটার তেল সংগ্রহ করেছে। ৪৮ হাজার ৪শ লিটার তেল সংগ্রহ করা হলে এখনও বনের মধ্যে ৩ লাখ ৯ হাজার ২শ ৬৪ লিটার তেল ভাসমান অবস্থায় রয়েছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
এদিকে, শেলা নদীতে ডুবে যাওয়া ওই ট্যাংকার ওটি সাউদার্ন স্টার-৭-এর মাস্টার (চালক) মোখলেসুর রহমানের (৫৫) লাশ ময়নাতদন্ত শেষে আজ তার দেশের বাড়িতে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। মোখলেসুর রহমান বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার লক্ষ্মীপাশা গ্রামের ইজ্জত আলীর ছেলে।

No comments

Powered by Blogger.