মধ্যপ্রাচ্যে আবার ব্রিটিশ ঘাঁটি

ব্রিটিশ নৌবাহিনীর একটি জাহাজ
মধ্যপ্রাচ্যে আবার স্থায়ী সামরিক ঘাঁটি গড়তে যাচ্ছে যুক্তরাজ্য। বাহরাইনের সঙ্গে এ-সংক্রান্ত একটি চুক্তি সই করেছে দেশটি। ১৯৭১ সালে ব্রিটিশ বাহিনী আনুষ্ঠানিকভাবে মধ্যপ্রাচ্য ছাড়ার পর এই প্রথম এ ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হলো। খবর রয়টার্স ও বিবিসির। যুক্তরাজ্য বলেছে, এই ঘাঁটি হবে ‘ব্রিটিশ নৌবাহিনীর পায়ের ছাপের সম্প্রসারণ। এটা পারস্য উপসাগর ও যুক্তরাজ্যে স্থিতিশীলতা জোরদার করবে।’ ব্রিটিশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় গত শুক্রবার জানিয়েছে, চলতি সপ্তাহে স্বাক্ষরিত হওয়া চুক্তিটির ফলে পারস্য উপসাগরে একটি নিজস্ব ঘাঁটি গড়তে পারবে ব্রিটিশ রাজকীয় নৌবাহিনী। বাহরাইনের মিনা সালমান বন্দরভিত্তিক এই ঘাঁটিতে অন্যান্য ধরনের যুদ্ধজাহাজের পাশাপাশি থাকবে বিমানবাহী রণতরী। চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফিলিপ হ্যামন্ড বলেছেন, এই ঘাঁটি ‘পারস্পরিক কৌশলগত ও আঞ্চলিক হুমকি মোকাবিলায় পারস্য উপসাগরীয় মিত্রদেশগুলোর সঙ্গে যুক্তরাজ্যের ক্রমবর্ধমান অংশীদারত্বের একটা উদাহরণ। মানামায় এক নিরাপত্তাবিষয়ক সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘পারস্য উপসাগরীয় এলাকায় আমাদের গত ৩০ বছরের অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।’
বিবিসির নিরাপত্তাবিষয়ক প্রতিনিধি ফ্র্যাঙ্ক গার্ডনার বলেছেন, ওই এলাকায় যুক্তরাজ্যের অস্থায়ী উপস্থিতি এরই মধ্যে রয়েছে। খনিজ সম্পদ খোঁজার কাজে ব্যবহৃত চারটি ব্রিটিশ জাহাজ মিনা সালমান বন্দরে অবস্থান করে। তবে অঞ্চলটিতে যুক্তরাষ্ট্রের নৌ উপস্থিতির কারণে পেছনে পড়ে আছে যুক্তরাজ্য। সেই পরিস্থিতিতে পরিবর্তন আনতেই নতুন পদক্ষেপ। বাহরাইনে নতুন এই স্থাপনা হবে বিশ্বে ব্রিটিশ নৌবাহিনীর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘাঁটিগুলোর একটি। এটি আঞ্চলিক সব ধরনের প্রয়োজন মেটাতে ব্যবহার করা হতে পারে। এর মধ্যে রয়েছে, ইরাকে চলমান ব্রিটিশ সামরিক তৎপরতায় সহায়তা করা। ইরাকে জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের (আইএস) বিরুদ্ধে মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোটের পক্ষে বর্তমানে বিমান হামলায় সক্রিয় রয়েছে ব্রিটিশ যুদ্ধবিমানগুলো। পাশাপাশি জলদস্যুতা মোকাবিলা ও নজরদারির মতো কাজেও এই ঘাঁটি ব্যবহার করা হতে পারে। মধ্যপ্রাচ্য এলাকায় আইএসের উত্থানে সৃষ্ট নিরাপত্তা হুমকির কারণেই রাজতন্ত্র বাহরাইনের সরকার ব্রিটিশ বাহিনীকে ডেকে এনে তাদের মাটিতে ঘাঁটি গড়তে দিচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে।

No comments

Powered by Blogger.