রাবি ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত কর্মীর বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত এক কর্মীর বিরুদ্ধে নারী নিপীড়ন ও হয়রানির অভিযোগ এনেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী। গতকাল বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন হয়রানি ও নিপীড়ন নিরোধ কমিটির কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী ছাত্রী। এর আগে জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে গত ৪ঠা  নভেম্বর মতিহার থানায় একটি সাধারণ ডায়েরিও করেন তিনি। অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর নাম মাহফুজুর রহমান এহসান। তিনি ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী এবং ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত কর্মী। এক শিক্ষার্থীকে অপহরণের ঘটনায় এহসানকে গত ১৯শে আগস্ট সংগঠন থেকে তাকে বহিষ্কার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি মিজানুর রহমান রানা। একই বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ওই ছাত্রী জানান, তিনি ও মাহফুজুর রহমান এহসান ২০১০-১১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। পড়ালেখার সুবাদে তৃতীয় বর্ষে তাদের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে ওঠে। একপর্যায়ে তারা প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। ওই ছাত্রীর অভিযোগ, সম্পর্কের কিছুদিন পর তিনি জানতে পারেন এহসান মাদকাসক্ত এবং ক্যাম্পাসে বিভিন্ন অপকর্মে জড়িত। এতে তিনি তার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেন। এ নিয়ে তাদের মধ্যে দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়। এহসান সম্পর্ক স্বাভাবিক রাখার জন্য তাকে বিভিন্নভাবে চাপ ও হুমকি দেন। এ ঘটনার জেরে তিনি গত ২৭ জুলাই নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে এহসানের বিরুদ্ধে মামলা করেন। তিনি অভিযোগ করেন, এহসান তার ছবি ও নাম ব্যবহার করে ফেসবুকে ভুয়া আইডি খুলে তাকে হেয় প্রতিপন্ন করতে থাকেন। এছাড়া তাকে ও তার পরিবারের সদস্যদের কাছে চিঠি লিখে হুমকি দেয়া হয়। এ নিয়ে বিভাগের শিক্ষকদের মাধ্যমে তাকে নিবৃত্ত করার চেষ্টা করা হলেও তার হয়রানি বাড়তে থাকে বলে অভিযোগ করেন তিনি। এ ঘটনায় তিনি নিরাপত্তা চেয়ে গত ৪ঠা নভেম্বর মতিহার থানায় একটি জিডি (জিডি নং ১৪৯) করেন। মাহফুজুর রহমানের হয়রানিতে তিনি ক্যাম্পাসে চলাফেরায় নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন দাবি করে তিনি এর প্রতিকার চেয়ে গতকাল বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন হয়রানি ও নিপীড়ন নিরোধ কমিটির কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। এ প্রসঙ্গে অভিযুক্ত মাহফুজুর রহমান এহসান বলেন, তার সঙ্গে আমার কিছুদিনের সম্পর্ক ছিল। তারপর সে হঠাৎ করে সম্পর্ক ছিন্ন করে এবং আমার নামে মামলা করে। কি কারণে সে মামলা ও জিডি করেছে আমি জানি না। তার বিরুদ্ধে ওই ছাত্রীর অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন দাবি করে তিনি বলেন, বরং ওই ছাত্রীর পরিবার থেকে আমাকে বিভিন্নভাবে হুমকি দেয়া হয়েছে।
এ ঘটনায় আমি কয়েক মাস আগে মামলাও করেছিলাম। যৌন হয়রানি ও নিপীড়ন নিরোধ কমিটির সভাপতি অধ্যাপক মাহবুবা কানিজ কেয়া বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে যৌন হয়রানি ও নিপীড়ন সংক্রান্ত কয়েকটি অভিযোগ নিয়ে আমরা কাজ করছি। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত এসব অভিযোগের ব্যাপারে কিছু বলা যাবে না।

No comments

Powered by Blogger.