বঙ্গভবনে শেরিং তোবগে- ভুটানের সক্রিয়তা চাইলেন প্রেসিডেন্ট

দক্ষিণ এশীয় দেশগুলোর মধ্যে আন্তঃযোগাযোগ বাড়াতে ভুটানকে সহযোগিতা করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদ। সফররত ভুটানের প্রধানমন্ত্রী শেরিং তোবগে গতকাল বঙ্গভবনে গেলে তার প্রতি এ আহ্বান জানান তিনি। সাক্ষাতের পর প্রেসিডেন্টের প্রেসসচিব ইহসানুল করিম গণমাধ্যমকে বলেন, প্রেসিডেন্ট এই অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে যোগাযোগ বাড়াতে বাংলাদেশের আগ্রহের কথা তুলে ধরেন। পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনা, জলবিদ্যুৎ প্রকল্প এবং যোগাযোগ ক্ষেত্রে আঞ্চলিক সহযোগিতার জন্য তিনি এ সময় ভুটানের সক্রিয় এবং কার্যকর অংশগ্রহণও প্রত্যাশা করেন। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় ভুটানের তৎকালীন রাজা জিগমে দর্জি ওয়াংচুক এবং সে দেশের জনগণের সমর্থনের কথা কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করেন প্রেসিডেন্ট। চূড়ান্ত বিজয়ের আগেই বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়ার বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই স্বীকৃতি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে উৎসাহ জুগিয়েছে। আবদুল হামিদ মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারত-ভুটান সীমান্তে তার কাজের অভিজ্ঞতাও দেশটির নতুন প্রধানমন্ত্রীর কাছে তুলে ধরেন। বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট ভুটানের রাজাকে শুভেচ্ছা জানিয়ে তার এই বার্তা প্রধানমন্ত্রীকে পৌঁছে দেয়ার অনুরোধ জানান। শেরিং তোবগে প্রেসিডেন্টকে জানান, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তার ফলপ্রসূ বৈঠক হয়েছে। দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা দিন দিন বৃদ্ধি পাবে বলেও আশা প্রকাশ করেন ভুটানের প্রধানমন্ত্রী। জাতীয় স্মৃতিসৌধ এবং জাতীয় জাদুঘর দেখে তিনি ‘অভিভূত’ হয়েছেন বলেও জানান শেরিং তোবগে। তিনি বাংলাদেশের প্রেসিডেন্টকে তার দেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান।
জাতীয় জাদুঘর পরিদর্শন: এদিকে সফরের দ্বিতীয় দিনে গতকাল সকালে রাজধানীর  শাহবাগস্থ জাতীয় জাদুঘর পরিদর্শন করেন ভুটানের প্রধানমন্ত্রী। পরিদর্শনকালে ভুটান সরকারের অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রীসহ সফররত দেশটির উচ্চ পর্যায়ের ৩০ জন কর্মকর্তা তার সঙ্গে ছিলেন। ভুটানের প্রধানমন্ত্রীর বৌদ্ধ ঐতিহ্য এবং সংস্কৃতির আগ্রহের কথা চিন্তা করে জাদুঘর কর্র্তৃপক্ষ একটি বিশেষ প্রদর্শনীর আয়োজন করে। এতে বৌদ্ধ সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের নিদর্শন প্রস্তর ও ব্রোঞ্জের নির্মিত ভাস্কর্য, তাম্রশাসন, টেরাকোটা প্রদর্শিত হয়। জাতীয় জাদুঘর থেকে জানানো হয়, ভুটানের প্রধানমন্ত্রী শেরিং তোবগে জাদুঘরের গ্যালারি এবং প্রধান লবিতে প্রদর্শিত বৌদ্ধ ঐহিত্য সংস্কৃতির নানা নিদর্শন দেখে অভিভূত হন এবং বাংলাদেশ একটি ঐতিহ্যবাহী জনপদ বলে মত প্রকাশ করেন। গ্যালারি পরিদর্শন শেষে প্রধানমন্ত্রী তোবগে পরিদর্শন বইতে স্বাক্ষর করেন। অতিথিদের জাদুঘরে অভ্যর্থনা জানান সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. রণজিৎ কুমার বিশ্বাস এবং জাদুঘরের মহাপরিচালক ফয়জুল লতিফ চৌধুরী। এ সময় ভুটানের প্রধানমন্ত্রীকে জাদুঘরের পক্ষ থেকে একটি বৌদ্ধ মূর্তির রেপ্লিকা উপহার দেয়া হয়।
বিরোধী নেতা ও মন্ত্রীদের সাক্ষাৎ: এদিকে ভুটানের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন সংসদের বিরোধী দলের নেতা রওশন এরশাদ। গতকাল সন্ধ্যায় রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে ওই সাক্ষাৎ হয়। সেখানে দ্বিপক্ষীয় বিষয়াদি নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। ওদিকে গতকাল বিকালে বঙ্গভবন থেকে ফেরার পর ভুটানের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে পৃথক সাক্ষাৎ করে সরকারের অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ও বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমদ। এর আগে দুপুরে ভুটানের প্রধানমন্ত্রী গাজীপুরে স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের কারখানা পরিদর্শনে যান। 

No comments

Powered by Blogger.