তৃণমূলের নেতাদেরকে শেখ হাসিনা-খালেদার দুর্নীতির বিচার করা না গেলে অন্যদেরও করা যাবে না

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, পুত্রদের দুর্নীতির বিচার ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচারপ্রক্রিয়া বন্ধ করতেই বিএনপি নেত্রী আন্দোলন করছেন। খালেদা জিয়া ও তাঁর ছেলেদের দুর্নীতির বিচার করা না গেলে অন্যদের দুর্নীতিরও বিচার করা যাবে না। দেশে দুর্নীতি, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিচার হবেই।


গণভবনে গতকাল রবিবার চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় বৈঠকের সূচনা বক্তব্যে দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, অনির্বাচিত আর কেউ যাতে অসাংবিধানিকভাবে ক্ষমতা দখল করতে না পারে সে জন্য সংবিধানে 'সেফটি ক্লজ' দেওয়া হয়েছে। সংবিধানের ৭ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী জনগণকেই সব ক্ষমতার মালিক করা হয়েছে।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিপক্ষে নিজের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করে শেখ হাসিনা বলেন, ২০০১-২০০৬ সালের বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার ছিল জাতির জন্য বিভীষিকা। তাদের ভোটচুরির কারসাজির কারণেই দেশে ওয়ান-ইলেভেন এসেছে। এরপর দুই বছরের জন্য যে তত্ত্বাবধায়ক সরকার আসে, তা ছিল জাতির জন্য আরেকটি বিভীষিকা।
বিএনপির সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের প্রতি ইঙ্গিত করে শেখ হাসিনা বলেন, আজ উচ্চকণ্ঠ তাঁদেরই শোনা যায়, যাঁরা দুর্নীতির দায়ে সাজাপ্রাপ্ত। যাঁরা দুর্নীতির জন্য অভিযুক্ত, তাঁরাই আবার নীতির কথা শোনান। '১৮ দলের মতো এত সংখ্যক নেতা-কর্মী অতীতে গ্রেপ্তার হয়নি'- মওদুদ আহমদের এমন বক্তব্যের প্রসঙ্গ তুলে ধরে তিনি বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর আওয়ামী লীগের কোনো নেতা-কর্মী গ্রেপ্তারের বাইরে ছিলেন না। ১৯৭৯ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারাসহ জেলা পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের জেলে ঢোকানো হয়। পরে নির্বাচন চলে এলে জিয়াউর রহমান তাঁদের ছেড়ে দেওয়া শুরু করেন। এরপর ১৯৮৩ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি আমাদের ৪০ জনকে একসঙ্গে বন্দি করা হয়।
শেখ হাসিনা বলেন, সরকার যখন উন্নয়নের কাজ করছে তখনই বিএনপি বাসে আগুন দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে মারছে। তারা নিজেরা খুনোখুনি করে ও মানুষ হত্যা করে আওয়ামী লীগের ওপর দোষ চাপাতে চাইছে। এই দোষ আমরা নেব কেন? হত্যা, দুর্নীতি আর লুটপাটই তাদের চরিত্র।
আওয়ামী লীগ সভাপতির ভাষণের পর রুদ্ধদ্বার বৈঠকে অংশ নেন দলের চুয়াডাঙ্গা জেলা, উপজেলা, থানা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড নেতৃবৃন্দ, দলসমর্থিত সংসদ সদস্য ও জনপ্রতিনিধি, জেলা পরিষদের প্রশাসক এবং সহযোগী সংগঠনের নেতারা।
মতবিনিময় সভা পরিচালনা করেন দলের খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক। শেখ হাসিনার বক্তব্যের পর জেলার সাংগঠনিক প্রতিবেদন তুলে ধরেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আজাদুল ইসলাম আজাদ। এ ছাড়াও জেলা সভাপতি সোলায়মান হক জোয়ারদার ছেলুন এমপিসহ উপজেলা-থানার সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক ও মহিলা আওয়ামী লীগ নেতারা বক্তব্য দেন।
সভায় আওয়ামী লীগ নেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, কাজী জাফরউল্লাহ, মাহবুব-উল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, অ্যাডভোকেট আবদুল মান্নান খান, ক্যাপ্টেন (অব.) এ বি তাজুল ইসলাম, ফরিদুন্নাহার লাইলী, মৃণাল কান্তি দাস, অসীম কুমার উকিল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

No comments

Powered by Blogger.