জাহাজ ছিনতাই-আরব সাগরের জলদস্যু by মশিউল আলম

পাঁচ থেকে দশজন পুরুষের একেকটি দল, বয়স ২০ থেকে ৩৫ বছরের মধ্যে। কাঁধে রকেটের ডগায় বসানো গ্রেনেড (আরপিজি), হাতে একে-৪৭ রাইফেল, উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন দুরবিন, স্যাটেলাইট ফোন, কোমরে টিটি-৩০ ধরনের সেমি-অটোমেটিক পিস্তল ও ড্যাগার।


স্কিফবোট বা স্পিডবোটে চেপে তারা দাপিয়ে বেড়াচ্ছে আরব সাগর, ক্রমেই তাদের দৌরাত্ম্যের পরিধি বাড়ছে। তাদের ছোট্ট জলযানটিতে থাকে কিছু খাবার ও পানি, জ্বালানিভরা ড্রাম, হ্যান্ডগ্রেনেড-ভরা বাক্স, লম্বা-শক্ত রশির রোল ও নাইলনের দড়ি দিয়ে তৈরি মই। তারা গৃহযুদ্ধকবলিত সোমালিয়ার নৈরাজ্যের সন্তান; অধিকাংশই আগে ছিল জেলে বা জেলে-পুত্র। এখন তাদের পরিচয় আরব সাগরের জলদস্যু: সোমালি পাইরেটস। তাদের দাপটে সমুদ্রপথে দেশ-দেশান্তরে পণ্য পরিবহনের ব্যয় ও সময় প্রায় পাঁচ বছর ধরে ক্রমাগত বেড়ে চলেছে। ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম অর্গানাইজেশন, জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য সংস্থা, বিশ্বের বিভিন্ন বড় বড় দেশের সরকার, উপকূল নিরাপত্তা রক্ষাকারী বাহিনী, নৌবাহিনী ও জাহাজ পরিবহন কোম্পানিগুলোর বিরাট মাথাব্যথার কারণ হয়েছে এই জলদস্যুরা।
এই মুহূর্তে তাদের হাতে আটক রয়েছে বিভিন্ন দেশের ৩৬টি জাহাজ, সেগুলোর একটি বাংলাদেশের। এ দেশের ২৬ জনসহ বিভিন্ন দেশের জিম্মি নাবিকের সংখ্যা সাড়ে ছয় শতাধিক। এগুলোর কোনোটি ছিনতাই হয়েছে মাত্র ১৩ দিন আগে, কোনোটি এক বছরের বেশিও আগে। গত বছরের ৮ মে জার্মান পতাকাবাহী একটি কেমিক্যাল ট্যাংকার ছিনতাই হওয়ার প্রায় আট মাস পর ৫৫ লাখ মার্কিন ডলার মুক্তিপণ দিয়ে ছাড়া পেয়েছে গত ২৮ ডিসেম্বর। এমটি ম্যারিয়েটা মারগারেইট নামের ওই জাহাজটিতে অন্যান্য দেশের নাবিকদের সঙ্গে বাংলাদেশেরও দুজন ছিলেন। তাঁদের একজন প্রকৌশলী গিয়াসউদ্দিন আজম খান গত সপ্তাহে চট্টগ্রামে নিজ বাড়িতে স্বজনদের মধ্যে ফিরে এসেছেন। তিনি সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, গত ৪ ডিসেম্বর এমভি জাহান মণি নামের যে বাংলাদেশি বাণিজ্যিক জাহাজটি ২৬ জন নাবিকসহ ছিনতাই হয়ে সোমালি উপকূলে এখনো আটক রয়েছে, সেটিসহ ছিনতাই হওয়া আরও পাঁচ-ছয়টি জাহাজ নাবিকসুদ্ধ আটক রয়েছে তারই কাছাকাছি জায়গায়, ম্যারিয়েটা মারগারেইট আটক ছিল। এমভি জাহান মণির একজন নাবিকের সঙ্গে তাঁর ফোনে কথা হয়েছে, তিনি গিয়াসউদ্দিনকে জানিয়েছেন, জাহান মণিতে আটক নাবিকেরা ভালো আছেন, জলদস্যুরা মুক্তিপণ পেলেই জাহাজটি ছেড়ে দেবে। কিন্তু জলদস্যুদের সঙ্গে জাহান মণির মালিকপক্ষের মুক্তিপণ নিয়ে যে দর-কষাকষি চলছে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে, তাতে মনে হয় বিষয়টির নিষ্পত্তি হতে আরও সময় লাগবে। মালিক কর্তৃপক্ষ বলছে, জলদস্যুরা দাবিকৃত অঙ্কের মুক্তিপণ (প্রায় ৬৩ কোটি টাকার সমপরিমাণ মার্কিন ডলার) চটজলদি আদায় করার মতলবে চাপ প্রয়োগের কৌশল হিসেবে নানা কথা বলছে। কিন্তু জিম্মি নাবিকেরা টেলিফোনে যে দুবার স্বজনদের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ পেয়েছেন, তখন তাঁরা জানিয়েছেন, তাঁরা বেশ কষ্টে আছেন। ২৬ জনের মধ্যে ২৪ জনকেই গাদাগাদি করে রাখা হয়েছে একটি সংকীর্ণ জায়গায়, জাহাজটিতে তীব্র পানিসংকট দেখা দিয়েছে, সপ্তাহে একবার গোসল করার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে, খাদ্যদ্রব্যের পরিমাণও শেষ হয়ে আসছে।
বাংলাদেশের সরকারের পক্ষ থেকেও এ বিষয়ে বিশেষ কানো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি; নৌপরিবহনমন্ত্রী বিবিসিকে বলেছেন, এ বিষয়ে সরকারের কিছু করার নেই। পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিপু মনি অবশ্য জিম্মি নাবিকদের পরিবারগুলোকে আশ্বাস দিয়েছেন, নাবিকদের মুক্তি ও নিরাপদে দেশে ফিরে আসা নিশ্চিত করতে সরকার সম্ভাব্য সবকিছু করবে; সরকার সমুদ্রে জলদস্যুতা প্রতিরোধসংক্রান্ত আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। প্রধানমন্ত্রীর কাছে নাবিকদের স্বজনদের কান্নাজড়িত আবেদন-নিবেদনের সচিত্র খবর সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।
বাংলাদেশের কোনো জাহাজের জলদস্যুদের কবলে পড়ার ঘটনা এই প্রথম, কিন্তু আরব সাগরে জলদস্যুতার বিষয়টি সাম্প্রতিক নয়। প্রায় এক দশক ধরে সোমালি জলদস্যুদের দৌরাত্ম্য চলছে। এ মাসের গোড়ার দিকে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে এমন খবর প্রকাশিত হয়েছে যে সোমালি জলদস্যুরা তাদের তৎপরতার পরিধি ব্যাপকভাবে বাড়িয়ে চলেছে। এমভি জাহান মণির ছিনতাই হওয়ার ঘটনাটিও তাদের তৎপরতার পরিধি বাড়ার একটি দৃষ্টান্ত। জাহাজটি ছিনতাই হয়েছে ভারতের লাক্ষাদ্বীপ থেকে মাত্র ১৭০ মাইল ও কোচিন বন্দর থেকে ৩০০ মাইল দূরের জলসীমা থেকে। অর্থাৎ সোমালি উপকূল থেকে প্রায় দেড় হাজার নটিক্যাল মাইল পাড়ি দিয়ে এসে জলদস্যুরা এ জাহাজটি ছিনতাই করে নিয়ে গেছে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের অ্যান্টি-পাইরেসি কম্বাইন্ড টাস্কফোর্স ও ন্যাটোর সম্মিলিত বাহিনীর যুদ্ধজাহাজসহ স্বতন্ত্রভাবে রাশিয়া, চীন, ভারত প্রভৃতি দেশের মোট ৪০টি যুদ্ধজাহাজ এডেন উপসাগরসহ ভারত মহাসাগরজুড়ে মোতায়েন রয়েছে। তবুও জলদস্যুদের তৎপরতা কমার বদলে বেড়েই চলেছে। সমস্যা হচ্ছে, জলদস্যুরা কোনো জাহাজে একবার উঠে পড়তে পারলে আর বল প্রয়োগ করে তাদের নিরস্ত করার সুযোগ থাকে না, কারণ জাহাজের নাবিকদের প্রাণও তাতে ঝুঁকির মধ্যে পড়ে যায়। জলদস্যুরা ছোট ছোট স্পিডবোট ও স্কিফবোটে চড়ে একে-৪৭ ও রকেট-প্রপেল্ড গ্রেনেড নিয়ে জাহাজগুলো ছিনতাই করার চেষ্টা করে, সব চেষ্টা সফল হয় না। ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম ব্যুরোর এক প্রতিবেদন বলছে, ২০০৮ সালে মোট ২৯৩টি জাহাজ ছিনতাই করার চেষ্টা করে জলদস্যুরা ছিনতাই করতে পেরেছিল ৪২টি। ২০০৯ সালে আক্রমণের সংখ্যা ছিল ৩০৯, ছিনতাই হয়েছিল ৪৭টি জাহাজ। জলদস্যুরা জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য সংস্থার খাদ্যবাহী জাহাজগুলোও ছিনতাই করে। ছিনতাই হওয়া জাহাজ মুক্তিপণ না দিয়ে উদ্ধার করার ঘটনা অত্যন্ত বিরল।
গত বছর মে মাসে ‘মস্কো ইউনিভার্সিটি’ নামে রাশিয়ার একটি তেলবাহী জাহাজ লাইবেরিয়া যাচ্ছিল, পথে সোমালি জলদস্যুরা সেটি ছিনতাই করে। এডেন উপসাগরে টহলরত রুশ অ্যান্টি-সাবমেরিন ডেস্ট্রয়ার মার্শাল শাপোশনিকভ থেকে হেলিকপ্টারে একদল কমান্ডো বাহিনী গিয়ে হামলা চালায়। একজন জলদস্যু মারা যায়, বাকি আটজন আত্মসমর্পণ করে। জাহাজটির ২৩ জন নাবিকের সবাই অক্ষতভাবে উদ্ধার পান। ছিনতাই হওয়ার মাত্র ২০ ঘণ্টার মধ্যে এই উদ্ধার অভিযানটি শেষ হয়। কিন্তু এটি একটি অত্যন্ত বিরল ঘটনা। রুশ নেভির কমান্ডো দলটি সফল হয়েছিল এ জন্য যে জলদস্যুরা জাহাজটিতে উঠে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে সব নাবিক জাহাজটির নিরাপদ কক্ষে ঢুকে পড়েছিলেন। ফলে হেলিকপ্টার থেকে যখন উদ্ধারকারী কমান্ডো বাহিনী জলদুস্যদের ওপর আক্রমণ চালায়, দুই পক্ষে যখন প্রচণ্ড গুলিবিনিময় চলে, তখন জাহাজের নাবিকেরা নিরাপদে লুকিয়ে ছিলেন।
কিন্তু এ ধরনের বিরল উদ্ধার অভিযানের দৃষ্টান্ত সোমালি জলদস্যুদের মোটেও নিরুৎসাহিত করেনি।
কেন? এই ‘পেশা’ এতই লাভজনক যে জীবনের ঝুঁকি তুচ্ছ। এক সোমালি জলদস্যু বিবিসিকে বলেছেন, ‘আমি এক গরিব জেলের ছেলে। আগে সাগরে মাছ ধরতাম। এখন আমার দুটো লরি আছে, একটা বিলাসবহুল গাড়ি আছে এবং শহরে আমি নিজে একটা বিজনেস ফার্ম খুলেছি। আমি আরও ধনী হতে চাই। তারপর বিয়ে করব, জাহাজ ছিনতাই করা ছেড়ে দিয়ে ব্যবসায় মন দেব।’ সোমালিয়ার উপকূলীয় কয়েকটি শহর এখন ‘পাইরেট সিটি’ হিসেবে পরিচিতি পেয়ে গেছে। জলদস্যুদের ভাড়া পাওয়া যায়, মহাজনেরা তাদের পেছনে বিনিয়োগ করেন। ১০-১৫ হাজার ডলার প্রাথমিক বিনিয়োগ, তা দিয়ে অস্ত্রশস্ত্র কেনা, স্পিডবোট ভাড়া নেওয়া হয়। ছয়-সাতজন হলেই একটা গ্রুপ তৈরি হয়ে যায়, তারা স্পিডবোটে করে বেরিয়ে পড়ে মোটামুটি এক মাসের টার্গেট করে। একটা জাহাজ ছিনতাই করতে পারলে যে মুক্তিপণ আদায় হয়, তার ৩০-৪০ শতাংশ নেয় মহাজন, বাকিটা ভাগ করে নেয় জলদস্যুরা। তারা মুক্তিপণের অঙ্ক বাড়াচ্ছে লাফিয়ে লাফিয়ে। ২০০৩-০৪ সালের দিকে ১০ থেকে ১৫ লাখ মার্কিন ডলার পেলেই জলদস্যুরা একটি জাহাজ ছেড়ে দিত। এখন জাহাজ ও দেশ ভেদে মুক্তিপণের অঙ্ক বেড়ে দুই থেকে আড়াই কোটি ডলার পর্যন্ত উঠেছে। এ জন্য দরিদ্র, যুদ্ধবিধ্বস্ত, বেকারত্ব-জর্জরিত সোমালি যুবকেরা ক্রমেই বেশি বেশি করে জলদস্যুতার প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছে।
এই সোমালি জলদস্যুদের উত্থানের কিছু কারণ আছে। গত শতকের নব্বইয়ের দশকে সোমালিয়া গৃহযুদ্ধে পর্যুদস্ত হয়ে পড়লে সোমালি সমুদ্র উপকূল অরক্ষিত হয়ে পড়ে, বিভিন্ন দেশের মাছধরা ট্রলার তাদের জলসীমায় গিয়ে মাছ ধরা শুরু করে। অনেক দেশের জাহাজ বিষাক্ত বর্জ্য ফেলে যায়। ফলে একটা সময় যখন সোমালি জেলেদের জীবিকার সংকট দেখা দেয়, তখন তারা জলদস্যু হয়ে ওঠা শুরু করে। এমন ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে। সোমালি জলদস্যুরা নিজেদের কখনোই জলদস্যু বলে মনে করে না, তারা নিজেদের কোস্টগার্ড বা উপকূলরক্ষী বলে দাবি করে। বিদেশি জাহাজ ছিনতাই করার মধ্য দিয়ে তারা দেশের সেবা করছে বলে প্রচার করে। এই দেশসেবার বিনিময়ে তারা খুব দ্রুত ধনী হতে পারছে, বড় বাড়ি কিনতে পারছে, দেশের সবচেয়ে সুন্দরী মেয়েদের বিয়ে করতে পারছে। স্থানীয় অধিবাসীদের কাছে তারা হিরো, তারা মনে করে এই জলদস্যুরা দেশের সমুদ্র উপকূল পাহারা দিচ্ছি। এক জলদস্যু বিবিসিকে বলেছে, ‘আমাদের প্রতি স্থানীয় লোকজনদের সমর্থন বিরাট। কারণ আমাদের হাতে টাকা এলে প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ নানাভাবে তারাও উপকৃত হয়; বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়স্বজনের মাধ্যমে টাকা-পয়সার সঞ্চালন বাড়ে। এটা আমাদের অর্থনীতিতে অবদান রাখছে। হাজার হাজার সোমালি তরুণ-যুবক জীবিকার সন্ধানে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সাগর পাড়ি দিয়ে অবৈধভাবে বিভিন্ন দেশে ঢোকার চেষ্টা করছে। একই সাগরে আমরাও আরও ভালো জীবিকার সন্ধানে জীবনের ঝুঁকি নিচ্ছি।’ যুক্তরাজ্যের ডিএফআইডির এক প্রতিবেদন বলে, সোমালি উপকূলে বিদেশি মাছধরার ট্রলারগুলোর অবৈধভাবে টুনা ও চিংড়ি শিকারের ফলে সোমালিয়া ২০০৩-০৪ অর্থবছরে ১০ কোটি মার্কিন ডলার রাজস্ব হারায়। তবে সোমালি উপকূলে বিদেশি ট্রলারের অবৈধ মাছধরা বা বিষাক্ত বর্জ্য ফেলার খবর এখন আর পাওয়া যায় না। সোমালি জলদস্যু বা তাদের ভাষায় ‘উপকূলরক্ষীদের’ তৎপরতায় সেসব বন্ধ হয়েছে। কিন্তু তাদের হাতে বিদেশি জাহাজ ছিনতাইদের ঘটনা কীভাবে বন্ধ হতে পারে? বিশ্বের বেসরকারি শিপিং কোম্পানিগুলোর সংগঠন ইন্টারন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অব ইনডিপেনডেন্ট ট্যাংকার ওনার্সের পক্ষ থেকে জাতিসংঘের কাছে আবেদন জানানো হয়েছে, জলদস্যুতা প্রতিরোধে আন্তর্জাতিক টহলব্যবস্থার সমন্বয়কারীর দায়িত্ব যেন জাতিসংঘ নেয়। তারা সোমালিয়ার বিরুদ্ধে নেভাল ব্লকেড বা সামুদ্রিক অবরোধ আরোপেরও দাবি জানিয়েছে। কিন্তু ন্যাটো বলেছে, সোমালিয়ার বিশাল সমুদ্র উপকূলজুড়ে অবরোধ আরোপ করা বাস্তবে সম্ভব হবে না। শিপিং কোম্পানিগুলোর ওই সংগঠন এমন প্রস্তাবও করেছে, আন্তর্জাতিক স্থলবাহিনী পাঠিয়ে সোমালিয়ার পাইরেট সিটিগুলোয় জলদস্যুদের ঘাঁটিগুলো ধ্বংস করে দেওয়া হোক। কিন্তু এ প্রস্তাবও বাস্তবসম্মত বলে স্বীকৃতি পায়নি।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, সোমালি যুবকদের জলদস্যুবৃত্তি বন্ধ করার কোনো সামরিক উদ্যোগ স্থায়ীভাবে সফল হবে না। এই সমস্যার সমাধান খুঁজতে হবে সোমালিয়ার রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও আর্থসামাজিক উন্নয়নের প্রয়াসের মধ্য দিয়ে। একটি স্থিতিশীল সরকার দরকার, যা সুশাসন নিশ্চিত করবে, দারিদ্র্য কমানোর উদ্যোগ নেবে, কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে। বেকার দরিদ্র যুবকদের স্বাভাবিক জীবন-জীবিকা নিশ্চিত করা না হলে তাদের জলদস্যু হওয়া ঠেকানো সম্ভব নয়।
কিন্তু সে তো অনেক দীর্ঘ প্রক্রিয়ার বিষয়। তত দিন তারা আরব সাগরে দস্যুবৃত্তি চালিয়েই যাবে। রাশিয়া, চীন, ভারত ও ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলো নিজেদের জাহাজগুলোর নিরাপত্তা বাড়ানোর নানা উদ্যোগ নিচ্ছে। জার্মানির শিপিং কোম্পানিগুলো প্রাইভেট সিকিউরিটি ফার্ম থেকে নিরাপত্তারক্ষী ভাড়া করছে। ভারত আরও একটি যুদ্ধজাহাজ নামিয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশ কী করবে? কী হবে আমাদের সমুদ্রগামী জাহাজগুলোর নিরাপত্তার বিষয়টি?
মশিউল আলম: সাংবাদিক।
mashiul.alam@gmail.com

No comments

Powered by Blogger.