যে খবর নাড়া দেয়-মায়েশার জন্য

আদরের সোনামণি মায়েশা, তোমার জন্যই এই লেখা। ২৩ এপ্রিল প্রথম আলোর প্রথম পৃষ্ঠায় ছাপা হওয়া তোমার ছবিটি দেখে মন ভরে গেল। মা-বাবার মাঝখানে কী অপার আনন্দে নিজেকে ভাসিয়ে দিয়েছ তুমি! তোমার মুখের ওই হাসিতে সোনা ঝরে, ওই হাসির দেখা যে পেয়েছে, তার মনের সকল দুঃখ কিছু সময়ের জন্য দূর হয়ে যায়।


তোমার ছবিটির দিকে তাকাই, তাকিয়েই থাকি, তাকিয়েই থাকি... মনের জন্য এ রকম স্বস্তিদায়ক ছবি পৃথিবীতে কটা আছে?
মায়েশা, ভালো লাগছে এই ভেবে, তুমি বুঝতেও পারোনি তোমার জীবনের নির্দিষ্ট এই ১৭টি ঘণ্টা কীভাবে কেটেছে। আট মাস বয়সে সেটা বোঝাও যায় না। হয়তো মায়ের নিরাপদ কোলে যাওয়ার জন্য ছটফট করেছ, কিন্তু তোমাকে নিয়ে ওরা কী করতে পারে, সে বিষয়ে তোমার মনে কোনোরকম দুশ্চিন্তা জায়গা করে নেয়নি। ইলেকট্রনিক মিডিয়ার স্ক্রলজুড়ে এই পুরোটা সময় ছিলে তুমি। ছিলে সংবাদে। পত্রিকায় তোমার হতবিহ্বল মা-বাবার ছবি দেখে দীর্ঘশ্বাস লুকিয়েছে কত মানুষ!
মায়েশা, ভালো লাগছে এই ভেবে, তুমি এই জীবন-নাটকের মূল চরিত্র হয়েও কী অনায়াস ভঙ্গিমায় সকল নাটকীয়তা থেকে দূরে থাকতে পারলে! তুমি জানতেও পারলে না, কী উৎকণ্ঠায় কেটেছে তোমার মা-বাবা-স্বজনদের জীবনের এই ১৭টি ঘণ্টা। জানতেও পারলে না, সারা দেশের মানুষ তোমাকে জীবিত ফিরে পাওয়ার জন্য সংশয় বুকে নিয়ে কী অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করেছে। তোমার ফিরে আসা, এই সুসংবাদের আকালে যে কত বড় সুসংবাদ, সেটা কি তুমি বুঝতে পারছ?
মায়েশা, উৎকণ্ঠা, সংশয়, ভয়, আশঙ্কা—এগুলো আমাদের; ওই মিষ্টি সোনাঝরা হাসিটি তোমারই থাকুক। ওই হাসি থেকেই আমরা বেঁচে থাকার আনন্দ ভাগ করে নিতে পারব।
 জাহীদ রেজা নূর

No comments

Powered by Blogger.