কল্যাণমুখী শ্রম আইন চাই by অলিউর রহমান ফিরোজ

শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য এবং তাদের মুক্তির লক্ষ্যে ১৮৮৬ সালের ১ মে শ্রমিকদের বুকের তাজা রক্ত ঝরেছিল। শ্রমিকের বুকের রক্তে লেখা সে ইতিহাস এখন শ্রমিকরা তাদের বুকে লালন করে চলেছেন। ১৮৮৯ সালের ১৪ জুলাই প্যারিসে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক শ্রমিক সম্মেলনে শিকাগোর রক্তঝরা অর্জনকে স্বীকৃতি দিয়ে ঘোষণা করা হয় আন্তর্জাতিক শ্রমিক সংহতি দিবস হিসেবে।


১৮৯০ সাল থেকে বিশ্বের অধিকাংশ দেশে প্রতি বছর পালিত হতে থাকে মে দিবস নামে। আমাদের দেশে বিভিন্ন ব্যানারে শ্রমিকদের স্বার্থ রক্ষায় সভা-সমাবেশ, আলোচনা সভা ঘটা করে পালন করে থাকে বিভিন্ন সংগঠন। তাতে করে আমাদের গার্মেন্ট খাতের শ্রমিকদের কাজের সময়সীমা এবং তাদের রক্তঝরা ঘামের সঠিক মজুরি আজও বাস্তবায়ন হয়নি। দুর্মূল্যের বাজারে এমনিতেই তাদের হিমশিম খেতে হয়, এখন সেখানে যদি তাদের বেতন কাঠামো কাজের পরিধি অনুসারে পরিশোধ করা না হয়, তাহলে তাদের রাস্তায় নামা ছাড়া তো আর কোনো গত্যন্তর থাকে না। দেশে দেশে, সমাজে সমাজে আজও শোষণ ও শ্রমের মজুরি আত্মসাতের চূড়ান্ত অবসান হয়নি। বরং রাষ্ট্র তথা সমাজ ব্যবস্থার শিরা-উপশিরায় সেটি অব্যাহত আছে। তাই মানুষে মানুষে শোষণ যতদিন থাকবে, ততদিন মহান মের অঙ্গীকারের বাণী জাগ্রত থাকবে। মহান মের এ ঐতিহাসিক দিবসে আসুন আমরা সরকার, মালিক, শ্রমিকসহ সব পক্ষ সবার স্বার্থে অঙ্গীকারবদ্ধ হই_ একটি জনকল্যাণমুখী, মানবিক ও উৎপাদনমুখী শ্রম আইন প্রণয়ন করতে, অসৎ মালিক ও শ্রমিক উভয়কে প্রতিরোধের মাধ্যমে সুষ্ঠু শিল্প সম্পর্কের বিকাশ ঘটাতে, সভ্যতা বিনির্মাণের নিয়ামক শক্তি দেশের লাখো কোটি শ্রমিকের ভাত-কাপড়-শিক্ষা-স্বাস্থ্য ও বিশ্রামের সুযোগ নিশ্চিত করতে, সর্বস্তরে মৌলিক মানবাধিকার বাস্তবায়নের মাধ্যমে দেশে গণতন্ত্র ও শান্তির অগ্রযাত্রাকে বেগবান করতে। দেশের শ্রমজীবী মানুষের স্বার্থ রক্ষায় রাষ্ট্রের ভূমিকা সবচেয়ে বেশি। এ ক্ষেত্রে রাষ্ট্র এগিয়ে এসে শ্রমজীবী মানুষের ন্যায়সঙ্গত মজুরি বোর্ড গঠন এবং তাদের নির্দিষ্ট পরিমণ্ডলে কাজের সময়সীমা বেঁধে দেওয়ার সব আয়োজন সম্পন্ন করবেন দেশের শ্রমজীবী মানুষ- সরকারের কাছে সেটাই প্রত্যাশা করে।
য় মিরাপাড়া, রিকাবীবাজার, মুন্সীগঞ্জ

No comments

Powered by Blogger.