ইউনিয়ন তথ্যকেন্দ্র-শুভ উদ্যোগে অনাকাঙ্ক্ষিত বিঘ্ন

ইউনিয়ন তথ্য ও সেবাকেন্দ্র শুরুতেই হোঁচট খেয়েছে। জনগণের দোরগোড়ায় আধুনিক তথ্যসেবা পেঁৗছে দেওয়ার উদ্যোগের আনুষ্ঠানিক শুরু গত নভেম্বরে একসঙ্গে সাড়ে চার হাজার সেবাকেন্দ্র উদ্বোধনের মাধ্যমে। শনিবার সমকালে 'তথ্য সেবাকেন্দ্রগুলো দাঁড়াতেই পারছে না' শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়, অনেক কেন্দ্রের কম্পিউটার, ল্যাপটপসহ

অন্যান্য সরঞ্জাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বা সচিবের 'ব্যক্তিগত' সম্পত্তি হয়ে গেছে। তথ্যপ্রযুক্তির সুফল দেশের সর্বত্র পেঁৗছে দেওয়ার অঙ্গীকারের সঙ্গে এ চিত্র মোটেই সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। এটা ঠিক যে, সাড়ে চার হাজারের বেশি ইউনিয়নে তথ্যপ্রযুক্তির সুফল পেঁৗছে দেওয়ার কাজ সহজ নয়। ইন্টারনেট ব্যবহার, সরকারি ফরম ইন্টারনেটের মাধ্যমে সংগ্রহ করা, জন্ম নিবন্ধন, ভোটার তালিকা হালনাগাদ করা, নাগরিকত্বের সনদপত্র প্রদান, সরকারি ও পাবলিক পরীক্ষার ফল জানা, ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রবাসী আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে কথা বলা ইত্যাদি সেবা ধীরে ধীরেই নিশ্চিত করতে হবে। এ জন্য কেন্দ্রগুলোর কাজে ধারাবাহিকতা থাকতে হবে। বাজেট বরাদ্দ করার পাশাপাশি বিদ্যুৎ সুবিধার ব্যবস্থা করতে হবে। পল্লী বিদ্যুতের অব্যাহত সংযোগ প্রদান হয়তো সম্ভব হবে না। কিন্তু বিদ্যুতের বিকল্প উৎস এখন আর অসম্ভব নয়। দক্ষ কর্মী নিয়োগও গুরুত্বপূর্ণ। কর্মীদের একদিকে যেমন প্রযুক্তি সম্পর্কে ওয়াকেফহাল থাকতে হবে, তেমনি জনসাধারণ যেসব সেবার জন্য আসবে তা নিশ্চিত করার কৌশলও জানা চাই। প্রকৃতপক্ষে এ ক্ষেত্রে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা অপরিহার্য। সেবা গ্রহণের বিনিময়ে জনসাধারণের কাছ থেকে কিছু চার্জ গ্রহণের প্রয়োজন রয়েছে। তবে এ বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টির প্রতি মনোযোগ প্রদান করতে হবে। সমকালের প্রতিবেদনে বলা হয়, ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় তাদের সাড়ে আট হাজার পোস্ট অফিসকে ই-সেবাকেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে যাচ্ছে। এ বিষয়ে একটি উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদনের জন্য একনেকে পাঠানো হয়েছে। ডাকঘরের অবকাঠামো সুবিধা কাজে লাগিয়ে প্রান্তিক জনগণকে তথ্যপ্রযুক্তির সেবা পেঁৗছে দেওয়ার কাজ অপেক্ষাকৃত সহজ হতে পারে। তবে এ ক্ষেত্রেও মনে রাখা চাই_ অতি উৎসাহ মহৎ লক্ষ্য অর্জনেও বিঘ্ন ঘটায়।
 

No comments

Powered by Blogger.