বিরোধী দলের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী-হুমকি দিয়ে লাভ নেই, বিরোধ মেটাতে সংসদে থাকতে হবে

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধান বিরোধী দল বিএনপির সংসদে ফেরা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেছেন, বেতন-ভাতা ঠিক রাখতে দীর্ঘদিন অনুপস্থিত থাকার পর তারা সংসদে ফিরেছে। তারা মানুষের কথা বলতে সংসদে ফেরেনি। অতএব, বিএনপি সংসদে ফিরে আসায় বিভ্রান্ত হবেন না।

প্রধানমন্ত্রী গতকাল বুধবার বিকেলে বরিশাল নগরের বঙ্গবন্ধু উদ্যানে ১৪ দল আয়োজিত জনসভায় এ কথা বলেন। তিনি বিরোধী দলের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনারা সংসদে এসে আপনাদের সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন না করলে সরকারি কোষাগার থেকে আপনাদের বেতন-ভাতা গ্রহণ জনগণ মেনে নেবে না।’
শেখ হাসিনা অভিযোগ করেন, বিরোধীদলীয় নেতা দেশের মানুষকে শিক্ষিত নয়, অশিক্ষিত দেখতে চান। নিজের ছেলেদের শিখিয়েছেন মানি লন্ডারিং, টাকা পাচার ও দুর্নীতি। ২০০১ সালে ক্ষমতা গ্রহণের পর বিএনপি হত্যা, জঙ্গিবাদ, বাংলা ভাই ছাড়া দেশকে আর কিছু দিতে পারেনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের আন্দোলনের হুমকি দিয়ে কোনো লাভ হবে না। আলোচনার মাধ্যমে সব বিরোধ অবসানে আপনাদের সংসদে থাকতে হবে।’
বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক ও সিটি করপোরেশনের মেয়র শওকত হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন দলের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য সাংসদ আমির হোসেন, তোফায়েল আহমেদ, স্থানীয় সরকারমন্ত্রী ও দলের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, সাবেক চিফ হুইপ আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ, স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক, হুইপ আ স ম ফিরোজ, পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুবুর রহমান, ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি সাংসদ রাশেদ খান মেনন, জাসদের সভাপতি সাংসদ হাসানুল হক ইনু, সাংসদ তালুকদার মো. ইউনুস, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম প্রমুখ।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মিয়ানমারের কাছ থেকে আমরা আমাদের সমুদ্রসীমা আদায় করেছি। ২০১৪ সালে ভারতের কাছ থেকেও আমাদের অধিকার আদায় করব। তিস্তা ও অন্যান্য পানি চুক্তির ন্যায্য হিস্যা আদায়ে আমরা কাজ করছি।’
প্রধানমন্ত্রী বরিশালে তাঁর সরকারের উন্নয়নকাজের কথা তুলে ধরে বলেন, ‘বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চল সব সময় অবহেলিত ছিল। আজ মেরিন একাডেমির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়েছে। আগামী শিক্ষাবর্ষে এখানে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করা হবে। আমরা টার্মিনাল নির্মাণ করেছি।’
তবে বরিশালবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি ভোলার গ্যাস এনে গ্যাসভিত্তিক শিল্প গড়ে তোলাসহ বরিশালবাসীর অন্যান্য দাবির ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর কোনো আশ্বাস মেলেনি।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী সকাল সাড়ে ১০টায় নগরের মুক্তিযোদ্ধা পার্কের উদ্বোধন করেন। পৌনে ১১টায় আধুনিক নৌবন্দর ভবন উদ্বোধন, ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট, মেরিন একাডেমি ও অডিটরিয়ামের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। দুপুর ১২টায় সার্কিট হাউসের সম্মেলনকক্ষে আওয়ামী লীগ এবং সাড়ে ১২টায় প্রশাসনের কর্মকর্তাতের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
বরিশাল সার্কিট হাউসে দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে বৈঠককালে শেখ হাসিনা মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের জন্য দায়ী ব্যক্তিদের বিচারের পক্ষে জনমত গঠনে কাজ করার আহ্বান জানান।

No comments

Powered by Blogger.