প্রিজন সেলে গোলাম আযম-কারা কর্তৃপক্ষের কাছে মেডিকেল বোর্ডের মত যাবে আজ

গোলাম আযমকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএসএমইউ) রাখা হবে কি না, সে বিষয়ে আজ সিদ্ধান্ত হবে। মেডিকেল বোর্ডের মতামত পাওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে আজ কারা কর্তৃপক্ষকে জানাতে পারে। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গত বুধবার জামিনের আবেদন নাকচ করে গোলাম আযমকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।


কারা কর্তৃপক্ষ ওই দিনই তাঁকে বিএসএমএমইউতে পাঠায়। গতকাল শুক্রবার মেডিসিন অনুষদের ডিন অধ্যাপক এ বি এম আব্দুল্লাহকে প্রধান করে তিন সদস্যের মেডিকেল বোর্ড গঠন করে বিএসএমএমইউ কর্তৃপক্ষ। বোর্ডের অন্য সদস্যরা হলেন কার্ডিওলজি বিভাগের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান অধ্যাপক সজল কৃষ্ণ ব্যানার্জী এবং ন্যাফ্রোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক হাবিবুর রহমান।
বোর্ড গঠনের পর তিন সদস্য বিএসএমএমইউর প্রিজন সেলের তৃতীয় তলায় গোলাম আযমের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেন। এ ছাড়া গোলাম আযমের রক্ত পরীক্ষা, এক্স-রে, আল্ট্রাসনোগ্রাম ও ইকোকার্ডিওগ্রামও করা হয়েছে।
গোলাম আযমের শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে মেডিকেল বোর্ডের মতামত জানতে চাইলে বিএসএমএমইউর উপাচার্য অধ্যাপক প্রাণ গোপাল দত্ত প্রথম আলোকে বলেন, মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা জানিয়েছেন গোলাম আযম যেসব ওষুধ সেবন করছেন, তা অন্য যেকোনো জায়গায় থেকে সেবন করা যায়। এ জন্য এ বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকার দরকার নেই।
গতকাল বিকেলে হূদ্যন্ত্র পরীক্ষার জন্য গোলাম আযমকে পুলিশ প্রহরার বিশ্ববিদ্যালয়ের ডি-ব্লকের চতুর্থ তলায় নেওয়া হয়। ইকোকার্ডিওগ্রাম করার জন্য আগে থেকেই সবকিছু তৈরি ছিল। মিনিট বিশেক তাঁকে সেখানে রাখা হয়। পরীক্ষার ফলাফল জানতে চাইলে কার্ডিওলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক দিপল কৃষ্ণ অধিকারী বলেন, গোলাম আযমের হূদ্যন্ত্রের ক্রিয়া স্বাভাবিক এবং হূদ্যন্ত্রের ‘ভালভ’ ও ‘চেম্বার’ ভালো আছে।
গত বুধবার গোলাম আযমকে বিএসএমএমইউতে আনার পর থেকে একাধিক চিকিৎসক ও কর্মকর্তা বিরক্তি প্রকাশ করেছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন অধ্যাপক বলেছেন, ‘বিএসএমএমইউ বিশেষায়িত হাসপাতাল। এখানে জটিল রোগীর চাপ অনেক বেশি। সবাইকে মানসম্পন্ন সেবা দেওয়া সম্ভব হয় না। এই পরিস্থিতিতে গোলাম আযমের মতো সুস্থ মানুষকে এই হাসপাতালে পাঠানো সরকারের উচিত হয়নি।’
একটি সূত্র বলছে, চিকিৎসকদের এই মনোভাব আঁচ করতে পেরে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ গতকাল শুক্রবার ছুটির দিন হলেও মেডিকেল বোর্ড গঠন করে। আজ শনিবার সব পরীক্ষার রিপোর্ট নিয়ে মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা বসবেন। বোর্ডের মতামতের ওপর ভিত্তি করে কর্তৃপক্ষ গোলাম আযমকে রাখা না-রাখার সিদ্ধান্ত নেবে।
এ ব্যাপারে বিএসএমএমইউর পরিচালক আবদুল মজিদ ভূঁইয়া গতকাল রাতে প্রথম আলোকে বলেন, মেডিকেল বোর্ডের মতামত ও পরীক্ষা-নিরীক্ষার রিপোর্ট তাঁরা কারা কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠাবেন।

No comments

Powered by Blogger.