হুমকি দিয়ে বেকায়দায় মমতা

কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন সংযুক্ত প্রগতিশীল মোর্চা (ইউপিএ) সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাবের ডাক তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্য বুমেরাং হয়ে দেখা দিতে পারে। নানা হিসাবের পর এমনটাই ভাবছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। এ প্রস্তাবে এখনো স্পষ্ট করে সমর্থন দেয়নি প্রধান বিরোধী দল ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)।
বামপন্থী দলগুলো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা না দিলেও একটি বিষয় পরিষ্কার, মমতার সঙ্গী হচ্ছেন না তারা। প্রয়োজনে পার্লামেন্টের অধিবেশনে অনুপস্থিত থাকবে বামপন্থী দলগুলো।
ভোটের হিসাব তো পরে, অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে এগোনোর ক্ষেত্রে গোড়ার হিসাবেই গলদ আছে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ লোকসভায় অনাস্থা প্রস্তাব তুলতে ৫০ এমপির সমর্থন দরকার। লোকসভায় তৃণমূলের আসন সংখ্যা ১৯টি। বাকি এমপিদের সমর্থন তারা কী করে যোগাড় করবে ,তা এখনো নিশ্চিত নয়।
প্রস্তাব তোলার ক্ষেত্রে তৃণমূলকে সমর্থন করার খুব একটা আগ্রহ নেই বিজেপির। দলের এক শীর্ষ নেতা জানান, আজ মঙ্গলবার বিষয়টি নিয়ে দলীয় সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করতে বৈঠকে বসবেন তাঁরা। তাঁর কথায়, 'অনাস্থা প্রস্তাব এমনভাবে আনতে হবে, যাতে সরকার পড়ে যায়। অর্থাৎ প্রস্তাব তোলা এবং পাস করানোর জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যাক এমপির সমর্থন থাকতে হবে। অন্যথায় সরকার পড়বে না এবং নিয়মানুযায়ী আগামী ছয় মাস সরকারের বিরুদ্ধে আর অনাস্থা প্রস্তাব আনা যাবে না। ফলে শেষ পর্যন্ত কংগ্রেসই লাভবান হবে।'
মমতা অবশ্য এরই মধ্যে সমর্থনের জন্য বিরোধীদলীয় নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছেন। গত রবিবারই তিনি লোকসভায় বিরোধীদলীয় নেত্রী সুষমা স্বরাজের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেন।
বিজেপির তুলনায় বাম দলগুলোর অবস্থান অনেকটাই স্পষ্ট। সিপিআইয়ের (এম) পলিটব্যুরো সদস্য সীতারাম ইয়েচুরি বলেন, 'তৃণমূল কংগ্রেসের কথা ও কাজে মিল নেই। কাজেই আমরা অপেক্ষা করব।' দলের শীর্ষ নেতারা এটাও জানিয়ে দিয়েছেন, সরকার বাঁচানোর দায় নেই তাঁদের। আবার তৃণমূলকে সহায়তারও কোনো কারণ নেই। কাজেই অনাস্থার ভোট হলে তাঁরা কোনো পক্ষকেই সমর্থন দেবেন না। সিপিআই (এম) মনে করে, বিজেপির সমর্থন ছাড়া মমতার পক্ষে এ প্রস্তাব তোলা সম্ভব নয়। আর ধর্মীয় কট্টরপন্থী দল বিজেপির প্রত্যক্ষ সংশ্লিষ্টতার কোনো প্রস্তাবে সায় নেই তাদের।
অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে সমাজবাদী পার্টির প্রধান মুলায়েম সিং যাদব এবং বহুজন সমাজ পার্টির নেত্রী মায়াবতী এখনোও কোনো সিদ্ধান্ত নেননি। বিজেপি ও বাম দলগুলোর অবস্থা পর্যবেক্ষণের পর নিজেদের অবস্থান চূড়ান্ত করবেন তাঁরা।
'প্রধানমন্ত্রীও লোকপালের আওতায় থাকবেন'
উচ্চকক্ষ রাজ্যসভা নির্বাচন কমিটি গতকাল দুর্নীতিবিরোধী লোকপাল ও লোকযুক্ত বিলের একটি খসড়া প্রতিবেদন চূড়ান্ত করেছে। এতে প্রধানমন্ত্রীকেও এ কমিটির পর্যালোচনার আওতায় আনার প্রস্তাব দেওয়া হয়। এ ছাড়া আগামী এক বছরের মধ্যে রাজ্যগুলোতে লোকযুক্ত কমিটি গঠনের কথা বলেছেন তারা। সূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস।

No comments

Powered by Blogger.