হালদার কান্না by বারেক কায়সার

হালদা। মমতাময়ী এক নদীর নাম। বাংলাদেশের কোটি টাকার মিঠা পানির কার্প জাতীয় মাছের একমাত্র প্রাকৃতিক প্রজনন ক্ষেত্র হালদা। বিজ্ঞানীদের শঙ্কা, নিরিবিলি সোনার খনিটি হয়তো আর নির্মল থাকবে না। বিলুপ্ত হতে পারে দুই পাশের জীববৈচিত্র্য। সময় থাকতে নজর না দিলে একদিন হালদার পরিণতি হতে পারে বুড়িগঙ্গার মতো 'নির্মম'।


পত্রিকার খবর অনুযায়ী, হাটহাজারী ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্রে যথাযথ সতর্কতা অবলম্বন না করে অপরিকল্পিতভাবে রেলওয়ে ওয়াগন থেকে ফার্নেস অয়েল স্থানান্তরের সময় তেল মাটিতে পড়ে গড়দুয়ারা অংশের চেংখালী খাল হয়ে হালদা নদীতে পতিত হয়েছে। ফলে নদীর মা-মাছ এবং জীববৈচিত্র্য হুমকির মধ্যে পড়েছে। তেলের কারণে খাল ও নদীদূষণের শিকার হয়ে মারাত্মক পরিবেশগত হুমকির সম্মুখীন হয়েছে। দূষণের ফলে নদী থেকে সংগৃহীত মাছের ডিমের রেণু পরিচর্যায় ব্যাঘাত সৃষ্টির পাশাপাশি নদীর মাছ ও রেণুর মৃত্যুঝুঁকি বৃদ্ধি পেয়েছে।
এবার দেখি আইন কী বলে? পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫-এর ১২ ধারার বিধানমতে, যে কোনো প্রকল্প গ্রহণের আগে পরিবেশ অধিদফতর থেকে প্রথমত অবস্থানগত ছাড়পত্র এবং প্রকল্পের কাজ সমাপ্তির পর পরিবেশগত ছাড়পত্র গ্রহণের আইনগত বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
তবে হাটহাজারী ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র এ ক্ষেত্রে অবস্থানগত ছাড়পত্র অথবা পরিবেশগত ছাড়পত্রের কোনোটিই গ্রহণ করেনি, যা পরিবেশ সংরক্ষণ আইনের ১৫ ধারার বিধান মতে শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
এখন প্রশ্ন হলো, সম্ভাবনাময় হালদা কি বাঁচবে না? এ নদী বাঁচলে শুধু একটি নদীই বেঁচে যাবে না। দেশ পাবে একটি প্রাকৃতিক সম্পদ। রক্ষা পাবে ঐতিহ্য। হালদা বাঁচলে বদলে যাবে ফটিকছড়ি, হাটহাজারী আর রাউজান উপজেলার মানুষের জীবন-জীবিকা, বেঁচে যাবে কোটি টাকার মাছ। হালদার জন্য শুভ কামনা।
স বারেক কায়সার : শিক্ষার্থী
যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
 

No comments

Powered by Blogger.