দুনিয়া ধ্বংসের গুজব
সাধের এ পৃথিবী একদিন ধ্বংস হবে। এটা আমাদের সবারই জানা। তবে কবে ধ্বংস হবে তা আমরা বলতে পারি না। জানিও না। কিন্তু মাঝে-মধ্যেই আমরা গুজব শুনি ওইদিন পৃথিবী ধ্বংস হবে। আসলে কি তা ঠিক? হলিউডের '২০১২-অ্যান্ড অব দ্য ওয়ার্ল্ড' নামক চলচ্চিত্রটি নতুন করে আবার তৈরি করেছিল দুনিয়া ধ্বংসের গুজব। এ চলচ্চিত্রটি গুজবকে সম্বল করে কয়েক দফায় ভালো ব্যবসাও করেছে। এ ছাড়া আরও একটি গুজব শোনা যাচ্ছে।
সুমেরীয় সভ্যতার যুগেই নাকি 'নিবিরু' নামে একটি গ্রহাণুর দেখা পেয়েছিল মানুষ। ২০১২ খ্রিস্টাব্দেই যার সঙ্গে সংঘর্ষ হবে পৃথিবীর। নাসা অবশ্য নিবিরুর অস্তিত্ব উড়িয়ে দিয়েছে। এ ছাড়াও একটি গুজব মানুষকে বেশ ভয় পাইয়ে দিয়েছিল। সেটা হলো, সুইজারল্যান্ডের সীমান্তবর্তী এলাকার মাটির তলার লার্জ হাড্রন কোলাইডার। যাতে তৈরি হতে পারে ব্ল্যাকহোল কিংবা বিপুল পরিমাণ অন্টি-ম্যাটার। নিমেষেই উড়ে যেতে পারে পৃথিবী। এ ধরনের ভবিষ্যদ্বাণীর সংখ্যা মোটেও কম নয়।
লিডসের ডিম
১৮০৬ খ্রিস্টাব্দে ইংল্যান্ডের লিডস শহরে হঠাৎ গুজব ছড়িয়ে পড়েছিল যিশু ফিরে আসছেন। আগুনের মত ছড়াল এ খবর। একটি মুরগির ডিমে লেখা 'যিশু আসছেন'! এটা শুনেই অনেকে ধরে নিল নিশ্চয় সামনে কোনো বিপদ অপেক্ষা করছে। চারদিকে রীতিমতো হৈচৈ পড়ে গেল। পৃথিবী নাকি কিছুক্ষণের মধ্যেই ধ্বংস হচ্ছে। পরে জানা গেল, ডিমের মালিক লেখাটির ব্যাপারে কিছুই জানেন না। গুজব ছড়িয়েছেন অন্য আরেকজন!
মিলারের এপ্রিল ফুল
বাইবেল গবেষণা করতে করতে ইংল্যান্ডের কৃষক উইলিয়াম মিলারের মাথায় হঠাৎ কি ভূত চেপেছিল, কে জানে? বলে বসলেন, ১৮৪৩ খ্রিস্টাব্দের ২১ মার্চ থেকে ১৮৪৪ খ্রিস্টাব্দের ২১ মার্চের মধ্যে কোনো একদিন পৃথিবী গায়েব হয়ে যাবে। এ নিয়ে দু'হাতে লিখতেও শুরু করেন তিনি। কয়েক মাসের মধ্যে সহস্রাধিক অনুসারীও জুটে গেল তার। পরে নির্দিষ্ট দিনক্ষণও বের করলেন সবাই মিলে। ১৮৪৩ খ্রিস্টাব্দের ২৩ এপ্রিলেই নাকি দুনিয়া ধ্বংস হবে। ওই তারিখের পর দুনিয়া যেমন ছিল তেমনি থাকল। হারিয়ে গেল মিলারের দলটি।
মরমন নাটিকা
'আমি ঈশ্বরের সঙ্গে কথা বলেছি। ঈশ্বর আমাকে বলেছেন, আগামী ৫৬ বছরের মধ্যে যিশু ফিরে আসছেন'। ১৮৩৫ খ্রিস্টাব্দে মরমন চার্চের প্রতিষ্ঠাতা জোসেফ স্মিথ অন্য ধর্মাযাজকদের নিয়ে এক বৈঠকে এ কথা বললেন। ফের গুজব রটে গেল পৃথিবী ধ্বংস হচ্ছেই!
ধূমকেতুর বিষ
১৮৮১ খ্রিস্টাব্দে হঠাৎ করেই গুজব ছড়িয়ে পড়ল হ্যালির ধূমকেতু নিয়ে। এক জোতির্বিজ্ঞানী এটি আবিষ্কার করেছিলেন বলে প্রকাশ্যে দাবিও করেছিলেন। তার কথায় ধূমকেতুর লেজ থেকে 'সায়ানোজেন' নামে এক ধরনের গ্যাস নির্গত হচ্ছে। ১৯১০ খ্রিস্টাব্দের মধ্যেই ধূমকেতুটির পৃথিবীর পাশ দিয়ে ছুটে যাওয়ার কথা ছিল। এই গ্যাসই ধ্বংস করবে পৃথিবী! নিউইয়র্ক টাইমসের মতো বিখ্যাত পত্রিকা এ খবরটি প্রথম পৃষ্ঠায় ছাপতে বাধ্য হয়েছিল! খবর প্রকাশের পর এক বছর মানুষ ভয়ে সিটিয়ে ছিল। কিন্তু বিষয়টি যে পুরোপুরি গুজব, তা বুঝতে বেশিদিন সময় লাগেনি কারও।
মনের এলিয়েন
১৯৯৭ খ্রিস্টাব্দ। গুজব ছড়ল হেল-বপ ধূমকেতুর পেছনে নাকি একটি এলিয়েন স্পেসশিপ আসছে। গুজবে ঘি ঢেলে দিল এক রেডিওর টক শোতে অংশ নেওয়া কয়েক বক্তা। আতঙ্ক ছড়িয়ে দ্রুত। প্রচারে নেমে পড়েন বিশ্বখ্যাত জ্যোতির্বিদরা। সান দিয়াগোর 'হেভেনস গেট' নামে এক ইউএফও সংগঠনের সদস্যরা এ উত্তেজনা আর সামলাতে পারলেন না। তারা সাড়ম্বরে ঘোষণা দিলেন, পৃথিবীর সমাপ্তি অতি নিকটে। দুঃখজনক বিষয়টি হলো, এ গুজবে কান দিয়ে তখন আত্মহত্যা করেছিলেন সংগঠনটির ৩৯ সদস্য!
নস্ট্রাদামুসের ভুল
মাইকেল ডি নস্ট্রাদামুসের অনেকের ভবিষ্যদ্বাণী ফলে গেলেও পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যাওয়া সম্পর্কিত মন্তব্যে প্রতিবারই 'জিরো' পেয়েছেন। ১৯৯৯ খ্রিস্টাব্দের জুলাইয়ে তারা ঘোষণা করেন, দ্রুত ত্রাসের রাজা পৃথিবীতে নেমে আসবে। তাদের এ ভবিষ্যদ্বাণী অসংখ্য ভক্তের মনে ভ্রান্তবিশ্বাসের জন্ম দিয়েছিল!
ওয়াই টু কে
নস্ট্রাদামুসের অনুসারীদের ভুল ভাঙলেও সামনের বছরই ছিল পৃথিবী ধ্বংসের আরেকটি তারিখ। ১ জানুয়ারি ২০০০। সবার আশঙ্কা ছিল, এ তারিখে কম্পিউটার ১৯০০ এবং ২০০০-এর পার্থক্য মোটেও বুঝবে না। ফলে সৃষ্টি হবে 'ব্ল্যাকআউট'। নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে নিউক্লিয়ার রিয়েক্টর ও পারমাণবিক বোমাগুলো! বিশ্বজুড়ে চলবে ধ্বংসলীলা। হলো না কিছুই।
নুনের বই
১৯৯৭ খ্রিস্টাব্দে রিচার্ড নুন '৫/৫/২০০০ :মহাপ্রলয়' নামে একটি বই লিখেছিলেন। গ্রন্থটিতে আছে, ওইদিন অ্যান্টার্কটিকার ৩ মাইল পুরু বরফের স্তর ধ্বংস হবে। সব গ্রহ চলে আসবে এক সারিতে। পুরো পৃথিবী ঘুমিয়ে পড়বে শীতল ঘুমে। হয়নি কিছুই। শুধুই ভ্রান্তকথন।
ফয়সাল আহমেদ
লিডসের ডিম
১৮০৬ খ্রিস্টাব্দে ইংল্যান্ডের লিডস শহরে হঠাৎ গুজব ছড়িয়ে পড়েছিল যিশু ফিরে আসছেন। আগুনের মত ছড়াল এ খবর। একটি মুরগির ডিমে লেখা 'যিশু আসছেন'! এটা শুনেই অনেকে ধরে নিল নিশ্চয় সামনে কোনো বিপদ অপেক্ষা করছে। চারদিকে রীতিমতো হৈচৈ পড়ে গেল। পৃথিবী নাকি কিছুক্ষণের মধ্যেই ধ্বংস হচ্ছে। পরে জানা গেল, ডিমের মালিক লেখাটির ব্যাপারে কিছুই জানেন না। গুজব ছড়িয়েছেন অন্য আরেকজন!
মিলারের এপ্রিল ফুল
বাইবেল গবেষণা করতে করতে ইংল্যান্ডের কৃষক উইলিয়াম মিলারের মাথায় হঠাৎ কি ভূত চেপেছিল, কে জানে? বলে বসলেন, ১৮৪৩ খ্রিস্টাব্দের ২১ মার্চ থেকে ১৮৪৪ খ্রিস্টাব্দের ২১ মার্চের মধ্যে কোনো একদিন পৃথিবী গায়েব হয়ে যাবে। এ নিয়ে দু'হাতে লিখতেও শুরু করেন তিনি। কয়েক মাসের মধ্যে সহস্রাধিক অনুসারীও জুটে গেল তার। পরে নির্দিষ্ট দিনক্ষণও বের করলেন সবাই মিলে। ১৮৪৩ খ্রিস্টাব্দের ২৩ এপ্রিলেই নাকি দুনিয়া ধ্বংস হবে। ওই তারিখের পর দুনিয়া যেমন ছিল তেমনি থাকল। হারিয়ে গেল মিলারের দলটি।
মরমন নাটিকা
'আমি ঈশ্বরের সঙ্গে কথা বলেছি। ঈশ্বর আমাকে বলেছেন, আগামী ৫৬ বছরের মধ্যে যিশু ফিরে আসছেন'। ১৮৩৫ খ্রিস্টাব্দে মরমন চার্চের প্রতিষ্ঠাতা জোসেফ স্মিথ অন্য ধর্মাযাজকদের নিয়ে এক বৈঠকে এ কথা বললেন। ফের গুজব রটে গেল পৃথিবী ধ্বংস হচ্ছেই!
ধূমকেতুর বিষ
১৮৮১ খ্রিস্টাব্দে হঠাৎ করেই গুজব ছড়িয়ে পড়ল হ্যালির ধূমকেতু নিয়ে। এক জোতির্বিজ্ঞানী এটি আবিষ্কার করেছিলেন বলে প্রকাশ্যে দাবিও করেছিলেন। তার কথায় ধূমকেতুর লেজ থেকে 'সায়ানোজেন' নামে এক ধরনের গ্যাস নির্গত হচ্ছে। ১৯১০ খ্রিস্টাব্দের মধ্যেই ধূমকেতুটির পৃথিবীর পাশ দিয়ে ছুটে যাওয়ার কথা ছিল। এই গ্যাসই ধ্বংস করবে পৃথিবী! নিউইয়র্ক টাইমসের মতো বিখ্যাত পত্রিকা এ খবরটি প্রথম পৃষ্ঠায় ছাপতে বাধ্য হয়েছিল! খবর প্রকাশের পর এক বছর মানুষ ভয়ে সিটিয়ে ছিল। কিন্তু বিষয়টি যে পুরোপুরি গুজব, তা বুঝতে বেশিদিন সময় লাগেনি কারও।
মনের এলিয়েন
১৯৯৭ খ্রিস্টাব্দ। গুজব ছড়ল হেল-বপ ধূমকেতুর পেছনে নাকি একটি এলিয়েন স্পেসশিপ আসছে। গুজবে ঘি ঢেলে দিল এক রেডিওর টক শোতে অংশ নেওয়া কয়েক বক্তা। আতঙ্ক ছড়িয়ে দ্রুত। প্রচারে নেমে পড়েন বিশ্বখ্যাত জ্যোতির্বিদরা। সান দিয়াগোর 'হেভেনস গেট' নামে এক ইউএফও সংগঠনের সদস্যরা এ উত্তেজনা আর সামলাতে পারলেন না। তারা সাড়ম্বরে ঘোষণা দিলেন, পৃথিবীর সমাপ্তি অতি নিকটে। দুঃখজনক বিষয়টি হলো, এ গুজবে কান দিয়ে তখন আত্মহত্যা করেছিলেন সংগঠনটির ৩৯ সদস্য!
নস্ট্রাদামুসের ভুল
মাইকেল ডি নস্ট্রাদামুসের অনেকের ভবিষ্যদ্বাণী ফলে গেলেও পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যাওয়া সম্পর্কিত মন্তব্যে প্রতিবারই 'জিরো' পেয়েছেন। ১৯৯৯ খ্রিস্টাব্দের জুলাইয়ে তারা ঘোষণা করেন, দ্রুত ত্রাসের রাজা পৃথিবীতে নেমে আসবে। তাদের এ ভবিষ্যদ্বাণী অসংখ্য ভক্তের মনে ভ্রান্তবিশ্বাসের জন্ম দিয়েছিল!
ওয়াই টু কে
নস্ট্রাদামুসের অনুসারীদের ভুল ভাঙলেও সামনের বছরই ছিল পৃথিবী ধ্বংসের আরেকটি তারিখ। ১ জানুয়ারি ২০০০। সবার আশঙ্কা ছিল, এ তারিখে কম্পিউটার ১৯০০ এবং ২০০০-এর পার্থক্য মোটেও বুঝবে না। ফলে সৃষ্টি হবে 'ব্ল্যাকআউট'। নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে নিউক্লিয়ার রিয়েক্টর ও পারমাণবিক বোমাগুলো! বিশ্বজুড়ে চলবে ধ্বংসলীলা। হলো না কিছুই।
নুনের বই
১৯৯৭ খ্রিস্টাব্দে রিচার্ড নুন '৫/৫/২০০০ :মহাপ্রলয়' নামে একটি বই লিখেছিলেন। গ্রন্থটিতে আছে, ওইদিন অ্যান্টার্কটিকার ৩ মাইল পুরু বরফের স্তর ধ্বংস হবে। সব গ্রহ চলে আসবে এক সারিতে। পুরো পৃথিবী ঘুমিয়ে পড়বে শীতল ঘুমে। হয়নি কিছুই। শুধুই ভ্রান্তকথন।
ফয়সাল আহমেদ
No comments