রোহিঙ্গা-সংশ্লিষ্ট এনজিওগুলোর ওপর নজরদারির তাগিদ

রোহিঙ্গাদের নিয়ে কাজ করে এমন বেসরকারি সংস্থাগুলোকে (এনজিও) আরো নজরে রাখতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসনকে পরামর্শ দিয়েছে সরকার। রোহিঙ্গা ইস্যুতে সম্প্রতি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত আন্তমন্ত্রণালয় বৈঠকে ওই বেসরকারি সংস্থাগুলোর ব্যাপারে আলোচনা হয়েছে বলে কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানিয়েছে।


নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কূটনীতিক গতকাল মঙ্গলবার কালের কণ্ঠকে বলেন, কক্সবাজার ও বান্দরবান এলাকায় কাজ করে এমন কিছু দেশি- বিদেশি এনজিওর বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় অভিযোগ এসেছে। মিয়ানমারে সাম্প্রতিক দাঙ্গার পর নতুন করে শরণার্থী আনতে বিভিন্ন মহলের চাপের সঙ্গেও তাদের সম্পৃক্ততা পাওয়া যাচ্ছে।
এনজিওগুলোর বিরুদ্ধে কী ধরনের অভিযোগ আছে জানতে চাইলে ওই কূটনীতিক বলেন, মানব ও মাদক পাচারসহ নানা ধরনের অভিযোগ রয়েছে। বিশেষ করে কিছু এনজিও আছে, যারা সীমান্তের ওপার থেকে বাংলাদেশে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশে কেবল উৎসাহিত করাই নয়, দালালের মাধ্যমে এপারে আনাও নিশ্চিত করে।
ওই কূটনীতিক আরো বলেন, রোহিঙ্গাদের নিয়ে কাজ করে এমন অনেক এনজিওই সরকারি অনুমতি নেয়নি। সে হিসাবে তাদের কার্যক্রম নিয়েই প্রশ্ন আছে। তিনি বলেন, এনজিওগুলোর কার্যক্রম শরণার্থী শিবির ছাড়িয়ে সীমান্ত পর্যন্ত চলে গেছে। বিশেষ করে অনিবন্ধিত রোহিঙ্গাদের নিয়ে যারা কাজ করে তাদের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ বেশি।
কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানিয়েছে, ওই এনজিওগুলো বিদেশি বিশেষজ্ঞদের তাদের কাজের এলাকায় নিয়ে যায়। সীমান্ত এলাকা বা স্পর্শকাতর এলাকাগুলোতে বিদেশিদের যাওয়ার আগে প্রশাসনকে অবহিত করার জন্য নির্দেশনা রয়েছে।
সূত্র আরো জানায়, দেশি এনজিওগুলো নির্দেশনা মানলেও বিদেশিরা অনেক ক্ষেত্রেই এ ব্যাপারে উদাসীন। সংশ্লিষ্ট দূতাবাসগুলো বিদেশি এনজিওগুলোকে পৃষ্ঠপোষকতা দেয়। বিদেশি কূটনীতিকরা অনেক সময় না জানিয়েই সীমান্ত বা স্পর্শকাতর এলাকা সফর করেন। কখনো কখনো আবার গন্তব্যে রওনা হওয়ার মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগে প্রশাসনকে জানান।
কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানিয়েছে, এনজিওগুলো মানবিক সেবা দেওয়ার দাবি করে। তবে তারা নিজেদের কার্যক্রম টিকিয়ে রাখার স্বার্থেই রোহিঙ্গা সমস্যাকে জিইয়ে রাখার পক্ষে কাজ করে বলে বিভিন্ন মহলের অভিযোগ রয়েছে। সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশ আশা করে, এনজিওগুলো বৈধভাবে তাদের কাজ করবে এবং তা বাংলাদেশের স্বার্থবিরোধী হবে না।
সংশ্লিষ্ট একটি সূত্রে জানা যায়, রোহিঙ্গাদের নিয়ে যেসব এনজিও কাজ করছে তাদের ওপর স্থানীয় জনগণ ক্ষুব্ধ। সরকার এ বিষয়ে আগে থেকেই অবগত আছে। মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশে দাঙ্গা-পরবর্তী সময়ে সৃষ্ট অস্থিতিশীলতার মধ্যে নতুন করে সংকট এড়াতেই এনজিওগুলোর ব্যাপারে সতর্ক হতে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের তাগিদ দেওয়া হয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.