টে লি ফো নে না গ রি ক ম ন্ত ব্য-ছাত্ররাজনীতি সংশোধন ও পরিমার্জন করা উচিত

প্রিয় পাঠক, আপনাদের সরাসরি মন্তব্য নিয়ে আমাদের নিয়মিত আয়োজনে এবার শিক্ষাঙ্গনে ছাত্র হত্যা ও সন্ত্রাস: আপনার মন্তব্য কী? প্রশ্নে টেলিফোনের মাধ্যমে মন্তব্য আহ্বান করা হয়েছিল। এ ব্যাপারে আপনারা উত্সাহব্যঞ্জক সাড়া দিয়েছেন। মন্তব্যগুলোর কিছু অংশ গতকাল ছাপা হয়েছে, আজ বাকি অংশ প্রকাশিত হলো।
বশির উদ্দিন, শিক্ষক, মাগুরা।
আমি বর্তমান সরকারের একজন সমর্থক হিসেবে বলতে চাই ছাত্ররাজনীতির অবস্থা এমন হলে তা বন্ধ করে দেওয়া উচিত।
ইউসুফ, শিক্ষার্থী
ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট।
বর্তমান সময়ে ছাত্রসংগঠনের মধ্যে যে কোন্দল দেখা দিয়েছে, তা নিরসনে সরকারকে নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করতে হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবু বকর ও ফারুকের হত্যাকাণ্ডের নিরপেক্ষ তদন্ত ও বিচার দাবি করছি।
এম ইকবাল আহমেদ, ব্যবসায়ী
দক্ষিণখান, ঢাকা।
ছাত্ররা জাতির ভবিষ্যত্ কর্ণধার। জাতিকে উন্নত করতে হলে ছাত্রদের সব সুযোগ-সুবিধা দিতে হবে। শিক্ষাঙ্গনে হত্যা ও সন্ত্রাস অনুচিত। ছাত্রসংগঠনগুলোর অভ্যন্তরীণ ও দলগত সংঘাত-সহিংসতায় মেধাবী ছাত্ররা প্রাণ হারিয়েছে। এটা আমি মানতে পারি না। আমি মনে করি, ছাত্ররাজনীতি চিরতরে বন্ধ করে দেওয়া উচিত।
সুমন, শিক্ষার্থী, কলতা বাজার, ঢাকা।
শুধু শিক্ষাঙ্গন নয়, প্রতিটি হত্যা ও সন্ত্রাসী কার্যক্রমের সঠিক তদন্ত ও বিচার হওয়া উচিত। এ বিষয়ে সরকার আন্তরিক হবে।
মো. জাহাঙ্গীর হোসেন, প্রকৌশলী
বনানী, ঢাকা।
বর্তমানে ছাত্ররাজনীতির নামে যা চলছে, তা কোনোভাবে মেনে নেওয়া যায় না। ছাত্র নামধারী সন্ত্রাসী যে দলেরই হোক, তার নিরপেক্ষ তদন্ত ও বিচার হওয়া উচিত।
এম এ ওয়াহাব, সংবাদপত্র এজেন্ট
সরিষাবাড়ী, জামালপুর।
দেশ ও জাতির স্বার্থে শিক্ষাঙ্গন থেকে সংঘাত বন্ধ করা উচিত। এ জন্য ছাত্র-শিক্ষক-অভিভাবক-প্রশাসন একত্রে বসে আলোচনার মাধ্যম সিদ্ধান্ত নেওয়া যেতে পারে। জাতীয় স্বার্থে সরকার ও বিরোধী দলকে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ভূমিকা নিতে হবে। অপরাধীদের সঠিক বিচার হলেই এ ধরনের সন্ত্রাস বন্ধ হবে।
রানা, ব্যবসায়ী, কুলাউড়া, সিলেট।
বাংলাদেশ থেকে ছাত্ররাজনীতি বন্ধ করে দেওয়া উচিত বলে আমি মনে করি। এ দিয়ে আমাদের কোনো উপকার হয় না।
মো. আমিনুর রহমান, শিক্ষার্থী
শাবিপ্রবি, সিলেট
শিক্ষাঙ্গনে ছাত্রহত্যা ও সন্ত্রাসের জন্য দায়ী ছাত্ররাজনীতি। ছাত্ররাজনীতি বন্ধ না করলে এ ধরনের ঘটনা নিয়মিতই ঘটতে থাকবে। দেশের সংকটের সময়ে ছাত্ররা এগিয়ে আসবে, এই অজুহাতে অনেকে ছাত্ররাজনীতিকে সমর্থন দিচ্ছে। যদি কখনো এমন সময় আসে, তখন দেখা যাবে সাধারণ ছাত্ররাই এগিয়ে আসে আর দলীয় ছাত্ররা স্বার্থ নিয়ে ব্যস্ত থাকে।
মো. মনিরুজ্জামান, কবি, গল্পকার ও উপন্যাসিক
কাজীপুর, সিরাজগঞ্জ।
অতীত ঐতিহ্যকে ছাপিয়ে ছাত্ররাজনীতি অবশ্য দেশবাসীর উদ্বেগের অন্যতম কারণ। ছাত্ররাজনীতিতে প্রবেশ করেছে অছাত্র নেতৃত্ব, যারা কেবলই রাজনৈতিক দলের লেজুড়বৃত্তিতে ব্যস্ত। তাই ছাত্রসমাজের প্রতি আমাদের আবেদন, আর নয় ছাত্ররাজনীতির নামে এ ধরনের আত্মঘাতী রাজনীতি।
শফিউল আবেদীন, ব্যবসায়ী
দক্ষিণ চর্থা, কুমিল্লা।
শিক্ষাঙ্গনে রাজনীতি চিরতরে বন্ধ করে দিতে হবে। শিবিরকে ক্যাম্পাসে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করতে হবে। কারণ শিবির প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ক্যাম্পাস অস্থিতিশীল করে তুলে।
মো. জিয়াউর রহমান, শিক্ষার্থী
সিরাজগঞ্জ সরকারি কলেজ।
আর কত ছাত্রের লাশ দেখবে জাতি। বন্ধ হোক শিক্ষাঙ্গনে সন্ত্রাস ও রাজনীতি। পূরণ হোক পিতা-মাতার স্বপ্ন। মেধাবীদের পদচারণে মুখরিত হোক শিক্ষাঙ্গন।
মো. জহরুল ইসলাম, শিক্ষার্থী
সিরাজগঞ্জ সরকারি কলেজ।
আমি চাই না ছাত্ররাজনীতি বন্ধ হোক। কিন্তু সেই ছাত্ররাজনীতি হতে হবে অধিকার আদায়ে। ছাত্রশিবির যে রাজনীতি করছে, তা সম্পূর্ণই ’৭১-এর প্রতিফলন, তা অবশ্যই ঠেকাতে হবে।
এম এইচ ফণী, শিক্ষার্থী
সাগরদীঘি, টাঙ্গাইল।
শিক্ষাঙ্গনে ছাত্রহত্যা কোনো দেশ ও জাতির কাছে কাম্য নয়। এসব সন্ত্রাসী খুনির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি।
কবির আহমেদ, আইনজীবী
জজ কোর্ট, সিলেট।
আমার মতে, এখন ছাত্ররাজনীতি বন্ধ করে দেওয়া উচিত। আশা করব, এ সরকারই এই পদক্ষেপ নেবে।
সঞ্জয়, আলোকচিত্রশিল্পী
স্টেশন রোড, চট্টগ্রাম।
শিক্ষাঙ্গনে ছাত্রহত্যা ও সন্ত্রাস—এগুলো ছাত্রসংগঠনগুলোর সঙ্গে রাজনৈতিক দলের লেজুড়বৃত্তির বহিঃপ্রকাশ। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের জামায়াত-শিবিরের নৃশংস ও বর্বর হত্যাকাণ্ড ’৭১-এর বর্বরতাকে স্মরণ করিয়ে দেয়। রাজনৈতিক দলগুলো আন্তরিকভাবে চাইলে এবং প্রশাসন কঠোর হলে এ ধরনের ঘটনা বন্ধ হবে।
নাজিয়া তাবাসুম, শিক্ষার্থী
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
ছাত্ররাজনীতি বন্ধ না করে সংশোধন ও পরিমার্জন করা উচিত। ছাত্ররা যেন সরকার প্রবর্তিত নির্দিষ্ট সীমারেখার ভেতর রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশ নিতে পারে। শিক্ষাঙ্গনে যে ছাত্রহত্যা ও সন্ত্রাসের মতো আতঙ্কের যেন পুনরাবৃত্তি না হয়।
মামুন সরকার, শিক্ষার্থী
সিরাজগঞ্জ সরকারি কলেজ।
বর্তমান শিক্ষাঙ্গনের সন্ত্রাস ও বর্বরোচিত হামলায় মেধাবী ছাত্রদের প্রাণ হারানো রোধে ছাত্রহত্যার রাজনীতি বন্ধ করার জন্য বর্তমান সরকারের কাছে আবেদন জানাই। পাশপাশি আর যাতে কোনো শিক্ষার্থী লাশ হয়ে বাড়ি না ফেরে, যেন আর কোনো মায়ের বুক খালি না হয় তা নিশ্চিত করতে হবে।
আব্দুর রহিম, শিক্ষার্থী
বগুড়া।
বর্তমান কলুষিত ছাত্ররাজনীতির মূল কারণ দলীয় হস্তক্ষেপ। আমাদের দেশের ছাত্ররাজনীতির ঐতিহাসিক পটভূমি রয়েছে, বর্তমানে সে ধারা আর নেই। ছাত্ররাজনীতির ক্ষেত্রে দলীয় গঠনতন্ত্রে পরিবর্তন আনা খুবই জরুরি বলে আমি মনে করি।
আব্দুর রহিম, শিক্ষার্থী
বকশীবাজার, ঢাকা।
আমি মনে করি, ছাত্ররাজনীতি বন্ধ করা উচিত। ছাত্রদের শুধু সাংস্কৃতিক ও শিক্ষামূলক কার্যক্রমে অংশ নেওয়া উচিত।
আফরোজা রিনা, চাকরিজীবী, মাদারীপুর।
বর্তমানে ছাত্ররাজনীতির নামে যা ঘটছে, তাতে ছাত্ররাজনীতি কলুষিত হচ্ছে। এভাবে নিরীহ ছাত্রদের প্রাণহানি আমাদের ব্যথিত করে। শিক্ষাঙ্গনে এ ধরনের কার্যক্রম কঠোরভাবে দমন করা উচিত।
এস এম অপূর্ণ দুলাল, শিক্ষার্থী
বাগমারা, রাজশাহী।
১৯৫২ থেকে ১৯৯০ পর্যন্ত যে ছাত্ররাজনীতি হয়েছে, তা এখন আর নেই। সুতরাং আপাতত ছাত্ররাজনীতি বন্ধ করে দেওয়া উচিত।
নাজমুল আলম সিদ্দিকী, শিক্ষার্থী
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়।
প্রথমত, মৌলবাদী জামায়াত-শিবিরের কার্যক্রম বন্ধ করতে হবে। দ্বিতীয়ত, অন্য সংগঠনগুলো থেকে যারা ছাত্রদের কল্যাণভিত্তিক, আদর্শিক রাজনীতির চেষ্টা করে তাদের যথাযথভাবে বাছাইয়ের মাধ্যমে নেতৃত্বে আনতে হবে। যেসব নেতা চাটুকারিতার ভিত্তিতে নেতৃত্ব দেন, তাঁদের নিষিদ্ধ করতে হবে।
মাহবুব আহমেদ, শিক্ষার্থী
শ্যামলী, ঢাকা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৃত ছাত্ররা কখনো সন্ত্রাস করতে পারে না। যারা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত, তারা সমগ্র দেশের ছাত্রদের জন্য কলঙ্ক। আমি মনে করি তদন্তের নামে সময় দীর্ঘ না করে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব প্রকৃত সন্ত্রাসীদের শনাক্ত করে তাদের প্রকৃত শাস্তি দেওয়া উচিত। আর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ছাত্র নামধারী সন্ত্রাসীদের ছাত্রত্ব বাতিল করে তাদের শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ বাতিল করা উচিত।
মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম, শিক্ষার্থী
সরকারি হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ, মিরপুর, ঢাকা।
শিক্ষাঙ্গনে ছাত্রহত্যা ও সন্ত্রাস একটি ঘৃণ্য ও মর্মান্তিক ঘটনা। আমরা শিক্ষাঙ্গনে প্রবেশ করি জ্ঞান অর্জনের জন্য। লাশ হয়ে চিরবিদায়ের জন্য নয়। মা-বাবার স্বপ্নকে গলাটিপে হত্যা করার জন্য নয়। শিক্ষাঙ্গনে প্রবেশ করলে বাধ্যতামূলক রাজনীতি করতে হবে—এমন নীতি পরিহার করা উচিত। তাই সরকারের কাছে আবেদন, শিক্ষাঙ্গনে যারা সন্ত্রাস করবে তাদের কঠোরভাবে প্রতিরোধ করা উচিত।
নাজমুল ইসলাম, শিক্ষার্থী
উল্লাপড়া বিজ্ঞান কলেজ, সিরাজগঞ্জ।
আমরা চাই সন্ত্রাসমুক্ত শিক্ষাঙ্গন। আর কোনো আবু বকর বা ফারুকের লাশ দেখতে চাই না।
মো. মোস্তাফিজুর রহমান, চাকরিজীবী
সেনপুর চিনিকল, রংপুর।
ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে। দেশের সংকটময় মুহূর্তে ছাত্রদের রাজনীতির মাধ্যমে অংশ নিতে হবে, এটা ঠিক নয়। কারণ এসব ক্ষেত্রে সাধারণ ছাত্রদের অংশগ্রহণই থাকে বেশি। অতএব ছাত্ররাজনীতির প্রয়োজন নেই।
মো. ওমর ফারুক, শিক্ষার্থী
উল্লাপাড়া বিজ্ঞান কলেজ, সিরাজগঞ্জ।
ভাষা আন্দোলনের শহীদদের আত্মা কষ্ট পাচ্ছে। একটি পরিবারের স্বপ্নকে বিবর্ণ করে দেওয়া কলঙ্কযুক্ত ছাত্ররাজনীতি থেকে আমাদের যেকোনো মূল্যে বেরিয়ে আসতে হবে।
ওয়াহিদ মুরাদ
স্বরূপকাঠি, পিরোজপুর।
শিক্ষাঙ্গনে সন্ত্রাস বন্ধ করার জন্য সরকারকে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে। চাঁদাবাজি-টেন্ডারবাজি যাতে ছাত্ররা করতে না পারে, সে জন্য অবশ্যই ছাত্ররাজনীতি দলীয় প্রভাবমুক্ত রাখতে হবে। সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বন্ধের জন্য অবশ্যই প্রশাসনের শক্তিশালী ভূমিকা নিতে হবে। প্রমাণ সাপেক্ষে সন্ত্রাসী গুন্ডাদের অবশ্যই বিচারের সম্মুখীন করতে হবে। আমরা মনে করি, সন্ত্রাস বন্ধের জন্য সচেতন নাগরিকের ঐকান্তিক সহযোগিতা এবং গোপন ভিত্তিতে তথ্য নিয়ে প্রয়োজনীয় সন্ত্রাস বন্ধের ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে।

No comments

Powered by Blogger.