উ. কোরিয়ায় কয়েক শ সেন্ট্রিফিউজ দেখেছেন মার্কিন বিশেষজ্ঞ

যুক্তরাষ্ট্রের এক পরমাণুবিজ্ঞানী চলতি মাসে উত্তর কোরিয়ায় কয়েক শ সেন্ট্রিফিউজ দেখেছেন। গত শনিবার সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ কথা জানা গেছে। ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করার কাজে এই সেন্ট্রিফিউজ যন্ত্র ব্যবহার করা হয়। পরমাণু বোমা তৈরির একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যায় হলো ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করা।
ওই সূত্র জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সিগফ্রিড হেকার নামের ওই পরমাণু বিশেষজ্ঞকে উত্তর কোরিয়ার ইয়ংবিয়ন পরমাণু স্থাপনা পরিদর্শনে নিয়ে যান সে দেশের কর্মকর্তারা। সেখানে একটি কক্ষে তিনি দেখেন, কয়েক শ সেন্ট্রিফিউজ বসানো রয়েছে। উত্তর কোরিয়ায় তিনি একটি মার্কিন প্রতিনিধিদলের সদস্য হিসেবে সফরে ছিলেন। কর্মকর্তারা হেকারকে জানান, তাঁদের দুই হাজার সেন্ট্রিফিউজ কাজ করছে। তবে উত্তর কোরিয়া পরিদর্শনকারী ওই মার্কিন প্রতিনিধিদল এই দাবির সত্যতা নিশ্চিত করতে পারেনি।
যুক্তরাষ্ট্র ২০০২ সাল থেকে ধারণা করে আসছিল, উত্তর কোরিয়ায় এ ধরনের কর্মসূচি চালু ছিল। কিন্তু মার্কিন ওই বিশেষজ্ঞের দাবি এখন নতুন বিতর্কের সৃষ্টি করবে বলে ধারণা করছেন বিশ্লেষকেরা। উত্তর কোরিয়ায় প্লুটোনিয়াম-নির্ভর পরমাণু বোমা তৈরির চেষ্টা চালিয়ে আসছে। এখন মার্কিন বিজ্ঞানীর এই দাবি সত্য হলে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করার মাধ্যমে পরমাণু বোমা তৈরির আরেকটি পথও খোলা রয়েছে দেশটির জন্য।
একটি সূত্র বলেছে, ওই স্থাপনাটি তাদের কাছে (পরিদর্শক দল) একটি পরমাণু স্থাপনা বলেই মনে হয়েছে। আরেকটি সূত্র জানিয়েছে, ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করার ওই স্থাপনা কতটা আধুনিক ও উন্নত, তা দেখে বিস্মিত হয়েছেন হেকার। তবে ওই স্থাপনায় শুধু স্বল্পমাত্রায় ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করা হয় কি না, তা যাচাই করে দেখার সুযোগ পাননি তিনি। হেকার জানান, ওই স্থাপনায় ইউরেনিয়াম সাড়ে তিন শতাংশ পর্যন্ত সমৃদ্ধ করা হচ্ছে। পরমাণু বোমা তৈরির জন্য ৯০ শতাংশ সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম দরকার। তবে উত্তর কোরীয় কর্তৃপক্ষ কী কারণে হেকারকে তাদের ওই স্থাপনা দেখতে দিয়েছেন, তা পরিষ্কার জানা যায়নি।
উত্তর কোরিয়া সফর থেকে ফিরে হেকার কয়েক দিন আগে হোয়াইট হাউসকে এই খবর জানান। এর পরিপ্রেক্ষিতে তৎপর হয়ে ওঠে মার্কিন প্রশাসন। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, উত্তর কোরিয়ার বিশেষ দূত স্টিফেন বসওয়ার্থ সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার জন্য শনিবার এক সফর শুরু করেছেন। তিনি দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান ও চীন সফর করবেন।

No comments

Powered by Blogger.