ডি ভিলিয়ার্সে চাপা পড়ল পাকিস্তান

চা-বিরতির সময় গ্রায়েম স্মিথের সঙ্গে এবি ডি ভিলিয়ার্সের কী আলোচনা হয়েছিল কে জানে। দক্ষিণ আফ্রিকান অধিনায়ক হয়তো বলেছিলেন, ‘রেকর্ড গড়ার সময় পাবে, কিন্তু ট্রিপল সেঞ্চুরির নয়।’ এ জন্যই হয়তো তিন শ করতে না পারার হতাশা নয়, রেকর্ডের আনন্দে ভেসেই মাঠ ছাড়লেন ডি ভিলিয়ার্স। ২৬ বছর বয়সী ব্যাটসম্যানের উল্লাস দেখে মনে হলো, জাভেদ মিয়াঁদাদের ২৮০ রানে ইমরান খান বা শচীন টেন্ডুলকারের ১৯৪ রানে রাহুল দ্রাবিড়ের ইনিংস ঘোষণা করে দেওয়ার মতো বিতর্ক এবার হবে না। আগের দিন সকালে ৩ উইকেট পড়ার পর উইকেটে গিয়েছিলেন, ডি ভিলিয়ার্স কাল মাঠ ছাড়লেন হার না-মেনেই।
মাঠ ছাড়ার সময় পুরো দক্ষিণ আফ্রিকা দল নিচে নেমে এসে অভিনন্দন জানাল ডি ভিলিয়ার্সকে। সবার আগে জড়িয়ে ধরলেন স্মিথ, যাঁর ২৭৭ রানকে পেছনে ফেলে দেশের হয়ে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংসের রেকর্ড গড়েছেন ডি ভিলিয়ার্স। স্মিথের ইনিংস ঘোষণার সময়টা নিয়ে অবশ্য কেউ চাইলে প্রশ্ন তুলতেই পারেন। ৩৬৯ বলে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় দ্বিশতক ছোঁয়ার পর ডি ভিলিয়ার্স ৭৭ রান করেছেন মাত্র ৪৯ বলে, শেষ ৩০ রান এসেছে ১১ বলে। যে গতিতে এগোচ্ছিলেন, তাতে তিন শর জন্য হয়তো আর দু-তিনটি ওভারই যথেষ্ট ছিল। কিন্তু ‘ব্যক্তির চেয়ে দল বড়’—স্মিথের হাতে চিরায়ত এই যুক্তি তো আছেই।
তবে পাকিস্তানের জন্য দুঃসহ দিনটাও তানভির আহমেদ কখনোই ভুলতে পারবেন না ব্যক্তিগত কারণে। ৩২ ছুঁইছুঁই বয়সে এসে শৈশবের স্বপ্ন সত্যি হওয়ার আনন্দে টেস্ট শুরুর আগের রাতে ঘুমাতে পারেননি। প্রথম দিনের চার উইকেটের সঙ্গে কাল নিলেন দুটি, কুয়েতে জন্ম নেওয়া করাচির পেসারের আরও অনেক রাত কাটবে অভিষেকের সুখস্বপ্নে। অভিষেকে পাকিস্তানের হয়ে তাঁর চেয়ে ভালো বোলিংয়ের রেকর্ড আছে আর তিনজনের—মোহাম্মদ জাহিদ (৭/৬৬), মোহাম্মদ নাজির (৭/৯৯), ও আরিফ বাট (৬/৮৯)।
পাকিস্তানকে কম যন্ত্রণা দেয়নি দক্ষিণ আফ্রিকার লেজও। বোথার সঙ্গে ৪২, স্টেইনের সঙ্গে ৫৯, হ্যারিসের সঙ্গে ৩৫ রানের জুটির পর ডি ভিলিয়ার্স-মরকেলের অবিচ্ছিন্ন শেষ উইকেট জুটিতে এসেছে রেকর্ড ১০৭! ১৯২৯ সালে ওয়েন স্মিথ-বেলের ১০৩ রানই ছিল শেষ উইকেটে এর আগে প্রোটিয়াদের একমাত্র শতরানের জুটি। প্রথম ওভারে হাফিজকে হারানোর ধাক্কা সামলে দিনটা নিরাপদে পার করেছেন তৌফিক ও আজহার।

No comments

Powered by Blogger.