কোটার অতিরিক্ত ১০ হাজার যাত্রীর হজে যাওয়া অনিশ্চিত by ফয়েজ উল্লাহ ভূঁইয়া

নির্ধারিত কোটার চেয়ে হজযাত্রীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় প্রায় ১০ হাজার হজযাত্রীর এবার হজে যাওয়া নিয়ে অনিশ্চিয়তা দেখা দিয়েছে। সউদি সরকার এসব হজযাত্রীর অতিরিক্ত কোটা বরাদ্দ না দিলে এবার তারা হজে যেতে পারবেন না। আগামী ৪ মার্চ জেদ্দায় সউদি-বাংলাদেশ দ্বিপক্ষীয় হজ চুক্তি হওয়ার কথা রয়েছে। তখন অপেক্ষমাণ আরো ১০ হাজার হজযাত্রীর হজে গমনের লক্ষ্যে অতিরিক্ত কোটা বাড়ানোর প্রস্তাব জানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।
গত ২৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেটে প্রায় ৮৭ হাজার হজযাত্রী মুয়াল্লেম ফি জমা দিয়েছেন। গতকাল মুয়াল্লেম ফি জমার শেষ দিনে কত হজযাত্রীর মুয়াল্লেম ফি জমা পড়েছে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক কর্তৃপক্ষ তার হিসাব দিতে পারেনি। রাতে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সোনালী ব্যাংকে মুয়াল্লেম ফি জমা নেয়া হচ্ছিল।
ধর্ম মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সাত সদস্যবিশিষ্ট কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে ৪৩০টি হজ এজেন্সিকে ১৫ হাজার ৬২৫ জন হজযাত্রীর মুয়াল্লেম ফি সংশ্লিষ্ট ব্যাংকে জমা দেয়ার নিদের্শনা জারি করা হয়েছে। মতিঝিলের সোনালী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে গতকাল রাত পর্যন্ত এসব হজযাত্রীর মুয়াল্লেম ফি জমা দিতে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। হাব ও হজ অফিসে নিবন্ধনবঞ্চিত আরো ২০০ হজ এজেন্সির হজযাত্রীর মুয়াল্লেম ফি গতকালও জমা দেয়া সম্ভব হয়নি। এসব হজ এজেন্সির মালিক-প্রতিনিধিদের গতকাল মুয়াল্লেম ফি জমা দেয়ার আদেশের জন্য হাব, আশকোনার হজ অফিস ও ধর্ম মন্ত্রণালয়ে ছোটাছুটি করতে দেখা গেছে। গতকাল মুয়াল্লেম ফি জমা শেষ দিনে এসব হজযাত্রীদের মুয়াল্লেম ফি জমা দেয়া সম্ভব না হওয়ায় তারা চরম উৎকণ্ঠায় দিন কাটাচ্ছেন।
ধর্ম মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, এবার হজযাত্রীর সংখ্যা বেড়ে গেছে। এ জন্য প্রায় ১০ হাজার হজযাত্রীর হজে যাওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এসব হজযাত্রী যাতে এবার হজে যেতে পারেন তার জন্য দ্বিপক্ষীয় হজ চুক্তির সময়ে আরো ১০ হাজার কোটা বাংলাদেশী হজযাত্রীদের জন্য বাড়ানোর প্রস্তাব উত্থাপন করা হবে। সউদি সরকার বাংলাদেশী হজযাত্রীদের কোটা বৃদ্ধির প্রস্তাবটি অনুমোদন করলে যেসব হজযাত্রীর মুয়াল্লেম ফি জমা দেয়া সম্ভব হয়নি তারা হজে যেতে পারবেন। এ জন্য এসব হজযাত্রীকে অপেক্ষা করতে হবে।
হাব সভাপতি মো: ইব্রাহিম বাহার এ ব্যাপারে বলেন, যেসব হজ এজেন্সির হজযাত্রীদের মুয়াল্লেম ফি জমা দেয়া সম্ভব হয়নি তাদের হজে পাঠানোর জন্য সউদির সাথে দ্বিপক্ষীয় হজ চুক্তিতে আরো ১০ হাজার হজযাত্রীর কোটা বাড়ানোর প্রস্তাব উত্থাপনের দাবি জানানো হয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়ে। বাকি হজযাত্রীদের জন্য নিবন্ধন ও মুয়াল্লেম ফি জমার তারিখও বাড়ানোর দাবি জানানো হয়েছে সরকারের কাছে। হাব সভাপতি বলেন, যেসব দেশ থেকে কম হজযাত্রী হজে যাবে সেসব দেশের কোটা থেকে সউদি সরকার বাংলাদেশকে কোটা বাড়িয়ে দিলে আমাদের সব হজযাত্রীই হজে যাওয়ার সুযোগ পাবেন।
হাব মহাসচিব শেখ আব্দুল্লাহ জানান, শনিবার বিকেল থেকে হজ অফিসে পরিচালক হজ মিজানুর রহমানকে প্রধান করে গঠিত সাত সদস্যের কমিটি সারা রাত সমন্বয় করে নিবন্ধিত প্রায় আট হাজার ভুয়া নিবন্ধন বাতিল করেছে। কমিটির সুপারিশেই ৪৩০টি হজ এজেন্সির মধ্যে ১৫ হাজার ৫৬২ জন হজযাত্রীর মুয়াল্লেম ফি জমা দেয়ার জন্য কোটা বণ্টন করে দেয়া হয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.