খালেদা জিয়ার কার্যালয়ে তল্লাশি- সঙ্কটকে ঘনীভূত করবে

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার গুলশান কার্যালয়ে তল্লাশি চালানোর অনুমতি দিয়েছেন নিম্ন আদালত। পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এই অনুমতি দেয়া হয়। বিএনপি চেয়ারপারসন দুই মাস ধরে এই কার্যালয়ে অবস্থান করছেন। সরকার বালুর ট্রাক দিয়ে তাকে এই অফিসে অবরুদ্ধ করে রেখেছিল। ৫ জানুয়ারি সমাবেশে যাতে তিনি যোগ দিতে না পারেন, সেজন্য তাকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছিল। এ সময় সমাবেশে যাতে কেউ যোগ দিতে না পারে সেজন্য সরকারিভাবে সারা দেশের সাথে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল। অবরুদ্ধ বেগম খালেদা জিয়া সরকারি অবরোধ ঘুরিয়ে ২০ দলীয় জোটের ডাকে অবরোধ আহ্বান করেন। সেই অবরোধ এখনো চলছে একনাগাড়ে। পুলিশ যখন তাকে এই অফিস থেকে বের হতে বাধা দিয়েছিল, তখন তিনি অফিসে অবস্থানের সিদ্ধান্ত নেন। অফিসে অবস্থানকালে তিনি ছেলে আরাফাত রহমান কোকোকে হারিয়েছেন। কিন্তু অফিস থেকে বের হননি। সেখানে একটানা অবস্থান করেই আন্দোলন পরিচালনা করছেন। যে অফিসে তাকে আটকে রাখা হয়েছিল, সেই অফিস থেকে তাকে বের করার জন্য সরকার মরিয়া হয়ে উঠেছে। এ জন্য নানা কলাকৌশল অবম্বলন করা হচ্ছে।
বেগম খালেদা জিয়ার সাথে বিএনপির কয়েকজন নেতা ও অফিস স্টাফসহ ৫০ জন অবস্থান করছেন অফিসে। দোতলা ছোট অফিসে এত লোকের থাকা কষ্টকর। এর মধ্যে কয়েকদিন আগে পুলিশ অফিসে খাবার সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে। এর আগে কেটে দেয়া হয়েছিল বিদ্যুৎ, টেলিফোন, ইন্টারনেট ও ক্যাবল টিভির সংযোগ। এ সবই করা হয়েছে বেগম খালেদা জিয়াকে তার অফিস থেকে বের হতে বাধ্য করার জন্য।
দীর্ঘ সময় ধরে খালেদা জিয়া নিজের অফিসে অবস্থান করায় তা কারো নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে বিবেচিত হয়েছেÑ এমন অভিযোগ কেউ করেনি। এর মধ্যে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও বিদেশী অতিথিরা তার সাথে দেখা করেছেন। কিন্তু হঠাৎ কেন সেখানে পুলিশের তল্লাশির প্রয়োজন হলো, তা বোধগম্য নয়। এর পেছনে যে রাজনৈতিক অভিসন্ধি আছে, তা এখন স্পষ্ট। কিন্তু পুলিশের এ ধরনের তৎপরতা চলমান রাজনৈতিক সঙ্কটকে আরো ঘনীভূত করবে। বিএনপিসহ ২০ দলীয় জোটের নেতাকর্মীসহ গণতন্ত্রমনা মানুষকে আরো বিক্ষুব্ধ করে তুলবে। আমরা আশা করব, সরকার পুলিশ ও বিচার বিভাগকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার থেকে বিরত থাকবে।

No comments

Powered by Blogger.