বিকল্প কর্মসূচি বের করুন- আবার অবরোধ কাম্য নয়
আমরা চাই সব দলের অংশগ্রহণে নির্বাচন। প্রধান বিরোধী দলকে বাদ দিয়ে নির্বাচন শেষ পর্যন্ত প্রহসনে পরিণত হয়। এর গ্রহণযোগ্যতা থাকে না।
অতীতে বারবার তা দেখা গেছে। তাই বিরোধী দলের আন্দোলনের যৌক্তিক ভিত্তি রয়েছে। কিন্তু কোনো রাজনৈতিক আন্দোলন যেন নাশকতা, পেট্রলবোমা, রেললাইন উপড়ে ফেলে মানুষ মারার আন্দোলনে পরিণত না হয়, সেটাও তাদের দেখতে হবে। দায়িত্বশীল কোনো রাজনৈতিক দল এ দায়িত্ব এড়িয়ে যেতে পারে না।
বিএনপির নেতৃত্বাধীন ১৮-দলীয় জোট আগামীকাল শনিবার থেকে আবারও ৭২ ঘণ্টার অবরোধ ডাকায় প্রশ্ন ওঠে, বারবার একই ধরনের কর্মসূচি দিয়ে, সাধারণ মানুষের ব্যাপক প্রাণহানি ঘটিয়ে কি কোনো সমাধানে পৌঁছা যাবে? এর পরিণাম যে আরও নাশকতা, তাতে সন্দেহ নেই। জনসমর্থনপুষ্ট একটি রাজনৈতিক দল এ ধরনের সহিংসতা ও নাশকতার পথে নামতে পারে না। কারণ, কিছু সমাজবিরোধী লোক এ ধরনের বিচার-বিবেচনাহীন কর্মসূচির সুবিধা নিয়ে নানা অঘটন ঘটায়। এর পরিণামে দল জনসমর্থন হারায়।
গত আট দিনের অবরোধে অন্তত ৫০ জন প্রাণ হারিয়েছেন। অনেকেই আহত হয়ে মৃত্যুর প্রহর গুনছে। এরপর আবার শনিবার থেকে টানা ৭২ ঘণ্টার অবরোধ দেওয়া সমীচীন কি না, তা বিরোধী দলকে ভেবে দেখতে হবে।
বিরোধী দলের বিকল্প কর্মসূচি বের করা দরকার। সমঝোতার জন্য আলোচনার দরজাও খোলা রাখতে হবে। গণতান্ত্রিক দেশে আলোচনার মাধ্যমে যেকোনো সমস্যার মীমাংসা করা সম্ভব। এ ক্ষেত্রে সরকারের দায়িত্বই বেশি। পাশাপাশি বিরোধী দলকেও নমনীয় মনোভাব নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে। অন্যদিকে সরকারকেও সহনশীল হতে হবে। শুধু পুলিশি ব্যবস্থায় এ ধরনের সমস্যার সমাধান হয় না।
বিরোধী দলের একই ধরনের সহিংস কর্মসূচির পুনরাবৃত্তি কাম্য নয়। আর একটি মৃত্যুও নয়। রেললাইন উপড়ে ফেলার মতো অমানবিক নাশকতার পথ পরিত্যাগ করতে হবে। বাসে পেট্রলবোমা ছুড়ে নিরীহ যাত্রী হত্যা এখনই বন্ধ করতে হবে।
এই বিবেচনায় বিরোধী দল শনিবার থেকে ৭২ ঘণ্টার অবরোধ প্রত্যাহার করে বিকল্প কর্মসূচি গ্রহণ করুক। নিরীহ মানুষ প্রাণে বাঁচুক।
No comments