দরবারের দুই কোটি টাকা লুট -জুলফিকার কারাগারে রিমান্ড আবেদনের শুনানি সোমবার

চট্টগ্রামের তালসরা দরবার থেকে দুই কোটি টাকা লুটের ঘটনায় অভিযুক্ত র‌্যাব-৭-এর তৎকালীন অধিনায়ক লে. কর্নেল (বরখাস্ত) জুলফিকার আলী মজুমদারের জামিন আবেদন নাকচ করে তাঁকে কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। গতকাল শুক্রবার শুনানির পর চট্টগ্রামের বিচারিক হাকিম আবু সালেম মো. নোমান এই আদেশ দেন।


এর আগে আনোয়ারা থানার পুলিশ জুলফিকারকে সাত দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করে। মামলার মূল নথি আনোয়ারা থানা ভবন থেকে আদালতে উপস্থাপন না করায় বিচারিক হাকিম আগামী সোমবার রিমান্ড শুনানির দিন ধার্য করেন। গতকাল জামিনের আবেদন জানিয়ে আসামি জুলফিকারের কৌঁসুলি ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী আদালতে বলেন, ‘সেনা কর্মকর্তা জুলফিকার ষড়যন্ত্রের শিকার। তিনি সেনাবাহিনীর চৌকস কর্মকর্তা ছিলেন। এক-এগারোর সময় দুর্নীতি দমন কমিশনের পদস্থ কর্মকর্তা ছিলেন। ওই সময় মহল বিশেষের স্বার্থে আঘাত আসায় তাঁকে তালসরা ঘটনায় ফাঁসানো হয়েছে।’ পরে সাংবাদিকদের কৌঁসুলি ইফতেখার সাইমুল বলেন, ‘তালসরা দরবারে কারা দুই কোটি টাকা দিয়েছে এবং এ টাকার উৎস কী, সেটা অবশ্যই তদন্ত করতে হবে। ওই দরবারে বিদেশি নাগরিকেরা থাকেন। টাকাগুলো রোহিঙ্গা কিংবা মিয়ানমারের বিদ্রোহী গোষ্ঠীর কি না, তা তদন্ত করে দেখতে হবে। আমাদের দেশে ব্যাংক থেকে পাঁচ লাখ টাকা তোলার সময় নানা অনুসন্ধান করা হয়। আর দুই কোটি টাকার উৎসের তদন্ত হবে না, তা হতে পারে না।’ রিমান্ডের আবেদনে আনোয়ারা থানার পুলিশ জুলফিকারকে অভিযুক্ত করে। আবেদনে বলা হয়, জুলফিকার প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ছিলেন এবং তাঁর নির্দেশে দরবারের টাকা লুট করা হয়, যার সাক্ষ্য-প্রমাণ পাওয়া গেছে। এই আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে দরবারের লুণ্ঠিত দুই কোটি সাত হাজার টাকার বিষয়ে আসামি কত পেয়েছেন এবং জড়িত অন্য আসামিদের কত টাকা ভাগ দেওয়া হয়েছে, তার হিসাবসহ লুণ্ঠিত টাকা উদ্ধার করা সম্ভব হবে।’ রিমান্ড আবেদনে আরও বলা হয়, মামলার সুষ্ঠু তদন্ত ও ন্যায়বিচারের স্বার্থে জুলফিকার আলী মজুমদারকে বিশদভাবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের রিমান্ডে নেওয়া প্রয়োজন। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত আসামিকে জেলহাজতে আটক রাখার প্রার্থনাসহ তাঁর (জুলফিকার) জামিন আবেদনের বিরোধিতা করা হচ্ছে। আবেদনে বলা হয়, ‘এই আসামি ময়মনসিংহ সেনানিবাসে সেনা তত্ত্বাবধান থেকে চাকরিচ্যুত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশের কাছে হস্তান্তরের আগেই পালিয়ে যান। আবার জামিনে মুক্ত হলে ফেরারি তথা বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার সমূহ সম্ভাবনা বিদ্যমান।’ প্রসঙ্গত, আনোয়ারার তালসরা দরবার থেকে গত বছরের ৪ নভেম্বর দুই কোটি সাত হাজার টাকা লুট করে র‌্যাবের একটি দল। এ ঘটনায় গত ১৩ মার্চ তালসরা দরবারের গাড়িচালক ইদ্রিস আলী বাদী হয়ে মামলা করেন। আসামিদের মধ্যে ১০ জন র‌্যাবের সদস্য ও দুজন র‌্যাবের সোর্স। তাঁদের মধ্যে প্রধান আসামি চাকরিচ্যুত লে. কর্নেল জুলফিকার আলী মজুমদার। জুলফিকার আলী মজুমদারকে গত ৩০ এপ্রিল সেনাবাহিনী থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.