ক্রিকেটের বর্ষপঞ্জি নিয়ে ঢিলেমি

প্রতিবারই প্রতিশ্রুতি পাওয়া যায়—আগামী বছর থেকে ঠিক সময়ে হয়ে যাবে বর্ষপঞ্জি। প্রতিশ্রুতি প্রতিশ্রুতিই থাকে। মৌসুম গড়িয়ে আরেক মৌসুম চলে এলেও তৈরি হয় না ঘরোয়া ক্রিকেটের বর্ষপঞ্জি। এবারও ঘটনা সেটিই। ২০১১-১২ মৌসুমের জন্য বর্ষপঞ্জি তৈরির প্রক্রিয়া এখন পর্যন্ত যে অবস্থায়, তাতে আগামী আগস্ট-সেপ্টেম্বরের আগে সেটি চূড়ান্ত হওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ।
বিসিবির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মনজুর আহমেদ ১০ মে বর্ষপঞ্জির সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের ডেকে বলেছিলেন, যত দ্রুত সম্ভব যার যার কমিটির বর্ষপঞ্জি ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগে জমা দিতে হবে। কিন্তু খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সিসিডিএম আগামী মৌসুমে তাদের পরিকল্পনা সম্পর্কে এখনো কিছুই জানায়নি। উইমেন্স উইং জানিয়েছে কাল বিকেলে। এর আগে গত শনিবার গেম ডেভেলপমেন্ট ও গত পরশু টুর্নামেন্ট কমিটি বর্ষপঞ্জি জমা দিলেও টুর্নামেন্ট কমিটির বর্ষপঞ্জিতে এখনো কিছু জিনিস এদিক সেদিক হতে পারে।
এই বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী আগামী ১৬ অক্টোবর জাতীয় ক্রিকেট লিগের চার দিনের ম্যাচ দিয়ে শুরু হওয়ার কথা ঘরোয়া মৌসুম। রংপুর বিভাগ ও ঢাকা মহানগর যোগ হয়ে এবার জাতীয় লিগে দল হওয়ার কথা মোট ৮টি। পরিবর্তন আসতে পারে ফরম্যাটেও। তবে একটা বিষয় মোটামুটি নিশ্চিত, বর্ষপঞ্জিতে উল্লেখ থাকলেও ভেন্যু জটিলতা এবং সময়-সংকটের কারণে আসন্ন মৌসুমে জাতীয় লিগে ওয়ানডে টুর্নামেন্ট না থাকার সম্ভাবনাই বেশি।
আইসিসির ভবিষ্যৎ সফর পরিকল্পনার (এফটিপি) মাধ্যমে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের সূচি আগেই জানা থাকে। এর সঙ্গে সিসিডিএম, টুর্নামেন্ট কমিটি, গেম ডেভেলপমেন্ট কমিটি ও উইমেন্স উইংয়ের আওতাধীন খেলাগুলোর সমন্বয় ঘটিয়ে ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগ চূড়ান্ত করে ঘরোয়া ক্রিকেটের বর্ষপঞ্জি। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সেই বর্ষপঞ্জি ওয়ার্কিং কমিটির সুপারিশ নিয়ে অনুমোদিত হতে হবে বোর্ড সভায়। ক্রিকেট বোর্ডের বার্ষিক বাজেট তৈরির জন্যও নতুন আর্থিক বছরের আগে বর্ষপঞ্জি চূড়ান্ত হওয়া প্রয়োজন। এবারও সেটা হচ্ছে না বলে অনেক বিভাগই তাদের বাজেট চূড়ান্ত করতে পারছে না বলেবোর্ড সূত্রে জানা গেছে।
বর্ষপঞ্জি তৈরির কাজে ধীরগতির বিষয়টি স্বীকার করে কাল বিসিবির প্রধান নির্বাহী মনজুর আহমেদ বললেন, ‘আশা করি, আগস্ট মাসের মধ্যে এটা চূড়ান্ত হয়ে যাবে।’
অন্যান্য নিয়মিত আসরের সঙ্গে ঘরোয়া বর্ষপঞ্জিতে এবার থাকবে বিপিএল। সম্পূর্ণ পৃথক আয়োজক কমিটির তত্ত্বাবধানে হওয়ার কথা নতুন এই টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট। তবে ফ্রাঞ্চাইজিভিত্তিক টুর্নামেন্টটির সময় এখনো চূড়ান্ত হয়নি। ‘আগামী তিন বছর জানুয়ারি মাসে আমাদের কোনো আন্তর্জাতিক খেলা নেই। সে হিসেবে প্রথম তিন বছর এটা জানুয়ারিতে হতে পারে। তবে কিছুই এখনো চূড়ান্ত নয়’—বলেছেন প্রধান নির্বাহী।
আগামী তিন বছর যেমন জানুয়ারিতে খেলা নেই, তেমনি পরের দুই বছরও ফেব্রুয়ারিতে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট নেই বাংলাদেশ দলের। কিন্তু বিসিবির পরিকল্পনা টেলিভিশন সম্প্রচারসহ বিপিএলের অন্যান্য স্বত্ব্ব আগামী পাঁচ বছরের জন্য একবারে বিক্রি করে দেওয়া। সেজন্য প্রতিবছরই একটা নির্দিষ্ট সময়ে বিপিএল আয়োজন করা যায় কি না, সেটি খতিয়ে দেখছে বিসিবি। বিপিএলের দায়িত্বে থাকা বোর্ডের সহসভাপতি আহমেদ সাজ্জাদুল আলম জানিয়েছেন, এ মাসের মধ্যেই এসব চূড়ান্ত হয়ে যাবে।

No comments

Powered by Blogger.