জার্মানরা এখনো ঐক্যবদ্ধ হয়নি: মার্কেল -বার্লিন প্রাচীর পতনের দুই দশক পূর্তি

জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মার্কেল বলেছেন, বার্লিন প্রাচীরের পতনের ২০ বছর পার হলেও জাতি হিসেবে জার্মানরা এখনো ঐক্যবদ্ধ হয়ে উঠতে পারেনি। বার্লিন প্রাচীরের পতনের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে গতকাল সোমবার আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
১৯৮৯ সালের ৯ নভেম্বর বার্লিন প্রাচীর ভেঙে ফেলা হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর পূর্ব জার্মানির নিয়ন্ত্রণ নেয় তত্কালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন। স্নায়ুযুদ্ধ চলার সময় পশ্চিম জার্মানির পুঁজিবাদী অর্থনীতির প্রভাব ঠেকাতে ১৯৬১ সালে বার্লিন প্রাচীর নির্মাণ করেন পূর্ব জার্মানির শাসকেরা।
পূর্ব জার্মানিতে সমাজতান্ত্রিক শাসনের শৃঙ্খলে বেড়ে ওঠা বর্তমান চ্যান্সেলর মার্কেল বলেন, ‘জার্মানির একীভূত হওয়া এখনো সম্পন্ন হয়নি। দুই অংশের জীবনযাত্রার মানে সমতা আনার জন্য আমাদের এখনো এই সমস্যা মোকাবিলা করতে হবে।’ তিনি উল্লেখ করেন, পশ্চিমের তুলনায় জার্মানির পূর্ব অংশে বেকারত্বের হার এখনো দ্বিগুণ।
গত রোববার রাত থেকে বার্লিন প্রাচীর পতনের বার্ষিকী উদ্যাপনের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়।
গতকাল রাতে জার্মানির একীভূত হওয়ার প্রতীক হিসেবে ১৯৯০ সালে প্রতিষ্ঠিত ‘ব্রান্ডেনবার্গ গেট’-এ মূল অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে অংশ নেন ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী গর্ডন ব্রাউন, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট নিকোলা সরাকোজি, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভ ও মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন।
অনুষ্ঠানে গর্ডন ব্রাউন বার্লিন, জার্মানি ও ইউরোপের একীভূত হওয়াকে একটি ‘অনন্যসাধারণ’ ঘটনা হিসেবে বর্ণনা করেন। বার্লিন প্রাচীরের পতনের দিনটির কথা স্মরণ করে ফরাসি প্রেসিডেন্ট সারকোজি সামাজিক নেটওয়ার্কিং সাইট ‘ফেসবুক’-এ লিখেছেন, ওই দিন তিনি বার্লিনে ছিলেন এবং প্রাচীরটি ভেঙে ফেলার কর্মযজ্ঞে অংশ নিয়েছিলেন। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি এক বিবৃতিতে বলেন, ‘প্রাচীরের পতনের দিনটিতেই ইতিহাসের সমাপ্তি ঘটেনি। শোষিত জনগণের অধিকার আদায়ে আমাদের আরও সচেষ্ট হতে হবে।’
সম্প্রতি জার্মান পত্রিকা লাইপসিগের ফোলকসাইটুং পরিচালিত এক জরিপে দেখা গেছে, ৭৯ শতাংশ জার্মান এখনো বার্লিন প্রাচীরের পতনকে স্মরণ করে এবং সে জন্য কৃতজ্ঞ তারা। দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সিউলেও বার্লিন প্রাচীরের পতন-বার্ষিকী উদ্যাপন করা হয়। এ উপলক্ষে উত্তর কোরিয়ার সমাজতান্ত্রিক শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে প্রচারপত্র বিলি করে তারা।

No comments

Powered by Blogger.