যুদ্ধাপরাধ এবং দুই নোবেল জয়ীর দুই ভূমিকা by আবদুল গাফ্্ফার চৌধুরী

বাংলাদেশে যখন ’৭১-এর যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চলছে এবং এই বিচার প্রক্রিয়া ব্যর্থ করার জন্য দেশটির ভেতরে ও বাইরে বিরাট চক্রান্ত চলছে, তখন বিশ্বব্যাপী আরেকটি যুদ্ধাপরাধের বিচারের দাবি ক্রমশই সোচ্চার হয়ে উঠেছে। এই যুদ্ধাপরাধের প্রধান দুই অভিযুক্ত আমেরিকার সাবেক প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশ জুনিয়র এবং ব্রিটেনের সাবেক প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ার।


এই যুদ্ধাপরাধেরও বিচারের দাবি এতকাল ঠেকিয়ে রাখা হয়েছে এবং এই দাবি যাতে ভবিষ্যতে আর কোন দিন না ওঠে, তার জন্য শক্তিধরদের বিরাট চক্রান্ত চলছে।
কথায় বলে ধর্মের কল বাতাসে নড়ে। এই শতকের গোড়ার (২০০৩) একটি ভয়ানক যুদ্ধাপরাধের বিচারের দাবি তাই এতদিন ঠেকিয়ে রাখা গেলেও তা আবার নতুনভাবে উঠেছে এবং এই দাবি অপ্রতিরোধ্য। পশ্চিমা রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহলেরও ধারণা, আজ হোক কাল হোক টনি ব্লেয়ার ও জর্জবুশকে হেগের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে আসামির কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবেই। সেই সঙ্গে দাঁড়াতে হবে সাবেক বুশ এডমিনিস্ট্রেশনের ডিক চেনী, ডোনাল্ড রামসফিল্ড, পল ওলফউইজ প্রমুখ যুদ্ধাপরাধের আরও কয়েকজন অভিযুক্তকে।
এই অন্যায় ও বর্বর যুদ্ধের হোতারা মনে করেছিলেন, গোটা মানবতার বিরুদ্ধে তাঁদের এই ক্ষমার অযোগ্য অপরাধের কথা বিশ্ববাসী ভুলে গেছে। তাঁরা তাঁদের চেহারা থেকে এই শতকের গোড়ার সবচাইতে বড় কলঙ্কের দাগ মুছে আবার বিশ্ববাসীর কাছে আদৃত হয়ে উঠতে পারবেন। জর্জ বুশ নিজের দেশে এবং বহির্বিশ্বে কয়েকবার জনতার হাতে লাঞ্ছিত হয়ে এখন অনেকটা ‘ঘর বৈঠা’ হয়েছেন কিন্তু টনি ব্লেয়ার শুধু মিথ্যাবাদী রূপেই তাঁর নিজের দেশের মানুষের দ্বারাই আখ্যাত হননি; একজন অত্যন্ত নির্লজ্জ লোক হিসেবেও আখ্যাত হয়েছেন।
তাঁর ক্ষমতার লোভের পাশাপাশি রয়েছে প্রচুর অর্থলোভ। ব্রিটেনের সাবেক প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নাম ভাঙিয়ে তিনি বড় বড় মাল্টিন্যাশনাল, আরবের শেখদের ব্যবসা-বাণিজ্যের কনসালটেন্ট সেজে দু’হাতে টাকা কামাচ্ছেন। কিন্তু এই অর্থবিত্ত তাঁকে শান্তি দিতে পারছে না। মধ্যপ্রাচ্যের ইরাক যুদ্ধে যাঁর জঘন্য মিথ্যাচারিতা এখন প্রমাণিত এবং যে মিথ্যাচারিতার জন্য এক ইরাক যুদ্ধেই ১০০.০০০ থেকে এক মিলিয়নের মধ্যে মানুষ নিহত হয়েছে বলে জানা যায়, সেই গণহত্যার অপরাধ টনি ব্লেয়ারকে পিছু তাড়া করে চলছে। তিনি মধ্যপ্রাচ্যে শান্তির দূত নিযুক্ত হয়েছিলেন। কারও কাছে তিনি গ্রহণযোগ্য হননি, তাঁর খায়েশ হয়েছিল ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট পদে দাঁড়াবেন। যুদ্ধাপরাধের অপরাধ তাঁর সেই খায়েশ পূরণের পথে বাধা হয়েছে।
মিথ্যাচারণে অসাধারণ দক্ষ এবং অসাধারণ নির্লজ্জ লোক বলেই তিনি এখনও জনসমক্ষে মুখ দেখাতে পারছেন এবং এখনও নিজের অপরাধের পক্ষে সাফাই গাইতে পারছেন। অন্য কোন বিবেকবান মানুষ হলে তিনি এখন অনুতাপে দগ্ধ হতেন। নতুন করে মিথ্যা বলে নিজের দেশেও প্রতিবাদের ঝড় সৃষ্টি করতেন না।
সম্প্রতি নোবেল শান্তি পুরস্কার-জয়ী দক্ষিণ আফ্রিকার মনীষী আর্চবিশপ ডেসমন্ড টুটু বুশ ও ব্লেয়ারের যুদ্ধাপরাধী হিসেবে বিচার দাবি করে লন্ডনের ‘অবজারভার’ পত্রিকায় যে প্রবন্ধ লিখেছেন, তা এতদিন পর এই যুদ্ধাপরাধের বিচার দাবিটিকে পুনর্জীবিত করেছে এবং নতুন করে ঝড় সৃষ্টি করেছে। টুটুর এই দাবির পক্ষে জর্জ মনবিওট (এবড়ৎমব গড়হনরড়ঃ), ক্রিস্টোফার লিলি প্রমুখ প্রখ্যাত বুদ্ধিজীবীরা কলম ধরায় টনি ব্লেয়ার বিপাকে পড়ে গেছেন।
এই বিচার দাবি দিন দিন এতই প্রবল হয়ে উঠছে যে, সুদূর আফ্রিকায় বসে বিশপ টুটু দাবিটি তোলাতেই টনি ব্লেয়ার শঙ্কিত না হয়ে পারেননি। তিনি সঙ্গে সঙ্গে টুটুর বক্তব্যের প্রতিবাদ করে আবার নিজের মিথ্যাচারের পুনরুক্তি করেন। তিনি এক বিবৃতিতে বলেন, ‘ইরাকের হাতে ব্যাপক বিধ্বংসী মারণাস্ত্র থাকার ব্যাপারে তিনি কোন মিথ্যাচার করেননি। গোয়েন্দাদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী সে সময় তিনি ওই দাবি করেছিলেন।’ ইরাক যুদ্ধের যৌক্তিকতা দেখাতে গিয়ে তিনি বলেছেন, ‘সাদ্দাম হোসেন হাজার হাজার মানুষকে নির্বিচারে হত্যা করেছেন। রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করেছেন। ইরাকে এখন রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বিরাজ করছে।’
টনি ব্লেয়ারের এই নতুন মিত্যাচারের প্রতিবাদ উঠেছে খোদ ব্রিটেনেই। জর্জ মনবিওট তাঁর ‘ঙহব ংঃবঢ় পষড়ংবৎ ঃড় ংববরহম ইষধরৎ ধঃ ঃযব ঐধমঁব’ (হেগের আদালতে ব্লেয়ারকে হাজির করার দিকে আরও একটি পদক্ষেপ) শীর্ষক নিবন্ধে (ঢাকার দি ইন্ডিপেন্ডেন্ট পত্রিকায় ৬ সেপ্টেম্বর তারিখে পুনর্মুদ্রিত) ব্লেয়ারের কুযুক্তিগুলোকে একে একে খ-ন করেছেন। গোয়েন্দাদের রিপোর্ট যে নির্ভরযোগ্য নয় এবং তা উদ্দেশ্যমূলকভাবে তৈরি করা হয়েছিল, তা ব্লেয়ারও জানতেন। এই ব্যাপারে একজন বিশেষজ্ঞকে আত্মহত্যা করতে হয়েছিল, যে আত্মহত্যার দায় ব্লেয়ারের উপরেও বর্তায় বলে অনেকেই অভিযোগ করেন।
ইরাক যুদ্ধ যে অন্যায় এবং অবৈধ এবং জাতিসংঘের সনদ ভঙ্গকারী, এই ব্যাপারে ব্লেয়ারের কেবিনেট মন্ত্রিরা তাঁকে সতর্ক করেছেন। ব্লেয়ারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জ্যাক স্ট্র পর্যন্ত তাঁকে এই যুদ্ধের অবৈধতা সম্পর্কে হুঁশিয়ার করেছেন। তাঁর এ্যাটর্নি জেনারেল পর্র্যন্ত তাঁকে বোঝানোর চেষ্টা করেছেন। তাঁর দলের অধিকাংশ পার্লামেন্ট সদস্য তাঁর যুদ্ধনীতির বিরোধিতা করেছেন। তিনি দলের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশের বিরোধিতা অগ্রাহ্য করে, এমন কি লিবারেল ডেমোক্র্যাট দলের বিরোধিতাও উপেক্ষা করে তখনকার প্রধান বিরোধী দল কনজারভেটিভ এমপিদের ভোটের সাহায্যে পার্লামেন্টে এই অবৈধ যুদ্ধে নামার প্রস্তাব পাস করান।
ইরানের বিরুদ্ধে যে আট বছরব্যাপী যুদ্ধে নেমেছিলেন সাদ্দাম হোসেন, সেই যুদ্ধের প্ররোচনা ছিল আমেরিকা ও ব্রিটেনেরই। সাদ্দাম হোসেনকে তখন রাসায়নিক অস্ত্রসহ বিভিন্ন মারণাস্ত্র সরবরাহ করেছে আমেরিকাই। মধ্যপ্রাচ্যে সাদ্দাম হোসেনের শক্তিশালী হয়ে ওঠা এবং ইসরাইল ও পশ্চিমা তেল-স্বার্থের জন্য হুমকি হয়ে ওঠার পরই তাঁকে ক্ষমতা থেকে অপসারণের সিদ্ধান্ত হয়। আর এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করার জন্য বারো বছরের বেশি সময় ধরে ইরাকের বিরুদ্ধে যে অর্থনৈতিক অবরোধ সৃষ্টি করা হয়, তাতে অনাহারে, অপুষ্টিতে ১৭ লাখ নারী ও শিশুর মৃত্যু হয় বলে বিখ্যাত পশ্চিমা সাংবাদিক জন পিলজার এবং ব্রিটিশ এমপি জর্জ গ্যালোয়ে তথ্য প্রকাশ করেন। এরপর মিথ্যা অজুহাতে ইরাকের ওপর হামলা চালিয়ে আরও মিলিয়নের মতো নিরপরাধ সিভিলিয়ানকে হত্যা করা হয়।
একুশ শতকের এই গণহত্যা কি কুড়ি শতকের হিটলারের গণহত্যার অপরাধের সঙ্গে তুলনীয় নয়? জর্জ মনবিওট তাঁর প্রবন্ধে লিখেছেন, ‘ডরঃযড়ঁঃ ষবমধষ লঁংঃরভরপধঃরড়হ ঃযব ধঃঃধপশ ড়হ ওৎধয় ধিং ধহ ধপঃ ড়ভ সধংং সঁৎফবৎ. ওঃ পধঁংবফ ঃযব ফবধঃযং ড়ভ নবঃবিবহ ১০০.০০০ ধহফ ধ সরষষরড়হ ঢ়বড়ঢ়ষব, ধহফ ৎধহশং ধসড়হম ঃযব মৎবধঃবংঃ পৎরসবং ঃযব ড়িৎফ যধং বাবৎ ংববহ.’
(আইনের বৈধতা ছাড়াই ইরাক আক্রমণ গণহত্যার সমতুল্য। ১০০.০০০ থেকে এক মিলিয়নের মধ্যে রয়েছে নিহতদের সংখ্যা। বিশ্বের বিশাল অপরাধগুলোর মধ্যে এটি একটি।)
বিশপ টুটু লন্ডন অবজারভারে প্রকাশিত তাঁর নিবন্ধে বলেছেন, ইরাকে হামলা চালানোর পর ইতিহাসের যে কোন সময়ের চাইতে বিশ্ব অনেক বেশি অস্থিতিশীল হয়েছে। ২০০৩ সালে বুশ ও ব্লেয়ার ইরাকে গণবিধ্বংসী অস্ত্র আছে বলে মিথ্যা প্রচারণা চালিয়েছিলেন। ওই মিথ্যার উপর ভিত্তি করেই ইরাকে হামলা চালানো হয়। ইরাক আক্রমণের ফলশ্রুতি সিরিয়ার বর্তমান গৃহযুদ্ধ। এখন ইরানকেও কেন্দ্র করে মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিতিশীলতা বাড়ানোর তৎপরতা চলছে। ইরাকে ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে নির্বিচারে মানুষ হত্যার জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে বুশ ও ব্লেয়ারের বিচার হওয়া উচিত।’
বিশপ টুটুর এই দাবির অনুকূলে সারাবিশ্বেই সাড়া সৃষ্টি হয়েছে। এমন কি টনি ব্লেয়ারের নিজের দেশ ব্রিটেনেও। স্বাভাবিকভাবেই বুশ ব্লেয়ার এখন শঙ্কিত। ব্লেয়ার নির্লজ্জ, তাই সাফাই গেয়েছেন, ইরাকে এখন রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বেড়েছে। শুধু ইরাক নয়, গোটা মধ্যপ্রাচ্য এখনও যেখানে রক্তাক্ত ও অস্থিতিশীল এবং যে অস্থিতিশীলতার প্রতিক্রিয়ায় সারাবিশ্ব ভয়াবহ অর্থনৈতিক মন্দার সম্মুখীন, সেখানে ব্লেয়ার সাহেব ইরাকে স্থিতিশীলতা বিরাজ করার খোয়াব দেখছেন এবং প্রলাপোক্তি করছেন।
কিন্তু যতই দিন যাচ্ছে, ততই বুশ-ব্লেয়ার যুদ্ধাপরাধী হিসেবে অভিযুক্ত হবেন এবং তাঁদের বিচার হবে এই সম্ভাবনা প্রকট হয়ে উঠছে। বাংলাদেশের ’৭১-এর যুদ্ধাপরাধীরা বিচার এড়িয়েছে ৪০ বছর। কিন্তু পাপ বাপকেও ছাড়ে না, তাদেরও ছাড়েনি। একদিন যে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার অসম্ভব মনে হয়েছিল, বাংলাদেশে ৪০ বছর পর তা সম্ভব হয়েছে। অন্তত বিচার শুরু হয়েছে। এই শতকের (২০০৩) গালফ যুদ্ধের অভিযুক্ত গণহত্যাকারীদেরও বিচার এতদিন অসম্ভব বলে বিবেচিত হওয়ার পর এখন দেখা যাচ্ছে, তা মোটেই অসম্ভব নয় বরং বিচারের দিনটি সম্ভবত দ্রুত ঘনিয়ে আসছে।
জর্জ মনবিওট তাঁর নিবন্ধে সে কথাও বলেছেন, ‘ইষধরৎ রিষষ হড়ি ভরহফ যরসংবষভ ংযঁঃ ড়ঁঃ ড়ভ ঢ়ষধপবং যিবৎব যব ধিং ড়হপব বিষপড়সব. ঙহব ফধু যব সধু ভরহফ যরসংবষভ ংযঁঃ রহ.’ (ব্লেয়ার এখন দেখবেন, যেসব জায়গায় আগে তাঁকে অভ্যর্থনা জানানো হতো, সেসব জায়গার দরজা তাঁর জন্য বন্ধ। একদিন তিনি নিজেকে সকল দ্বাররুদ্ধ অবস্থায় দেখতে পারেন।)

॥ দুই ॥
দক্ষিণ আফ্রিকার বিশপ টুটু নোবেল শান্তি পুরস্কার পেয়েছেন। বাংলাদেশের ড. মুহাম্মদ ইউনূসও নোবেল শান্তি পুরস্কার পেয়েছেন। কিন্তু দু’জনের চরিত্র ও ভূমিকা সম্পূর্ণ ভিন্ন। পৃথিবীর যেখানেই অশান্তি ও অন্যায় ঘটে, সেখানেই বিশপ টুটু সোচ্চার। তিনি ব্যবসায়ী নন, মানবকল্যাণে নিবেদিত মনীষী। বুশ-ব্লেয়ারের যুদ্ধাপরাধের বিচার দাবি করেই তিনি ক্ষান্ত হননি; সম্প্রতি দক্ষিণ আফ্রিকান লিডারশিপ সংক্রান্ত অধিবেশন থেকে তিনি এই বলে বেরিয়ে আসেন যে, মি. ব্লেয়ার যে শীর্ষ বৈঠকে উপস্থিত আমি তাতে যোগ দিতে স্বস্তিবোধ করছি না।’
বাংলাদেশের নোবেল শান্তি পুরস্কার জয়ী ড. ইউনূস গত চল্লিশ বছরের মধ্যে ’৭১-এর যুদ্ধাপরাধীদের বিরুদ্ধে একটি কথা বলেছেন কি? একবারও তাদের বিচার দাবি করেছেন কি? বাংলাদেশ যাতে এই মানবতার শত্রু ঘৃণ্য যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বিনা বাধায় সম্পন্ন করতে পারে, সেজন্য তিনি তাঁর আন্তর্জাতিক প্রভাবকে একবারও কাজে লাগিয়েছেন কি? সারা মধ্যপ্রাচ্যসহ পাকিস্তানে আমাদের নোবেল জয়ীর বন্ধু আমেরিকা যে ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে এবং এখনও চালাচ্ছে, তার বিরুদ্ধে একটি কথা, একটি শান্তির বাণী তিনি ভুলেও উচ্চারণ করেছেন কি? ঢাকায় ইউনূস সেন্টার এ সম্পর্কে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রচার করে আমাদের অজ্ঞানতা দূর করতে পারেন।

লন্ডন : ২৫ সেপ্টেম্বর, মঙ্গলবার, ২০১২

No comments

Powered by Blogger.