সামাজিক বনায়ন by মোঃ মশিউর রহমান মাজু

সামাজিক বনায়ন বনভূমি বৃদ্ধির আধুনিকতম চিন্তাধারা। এ পদ্ধতিতে সমাজের সর্বস্তরের জনগণকে নিয়ে বনের পরিমাণ বৃদ্ধির লক্ষ্যে গ্রামীণ বসতভিটা, রাস্তার ধার, বাঁধের পাড়, অনাবৃত পাহাড়ি অঞ্চলে গাছ লাগানো হয়। সত্তরের দশকে উত্তরাঞ্চলে শুরু হওয়া এ প্রকল্প আশির দশকের গোড়ায় উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে কমিউনিটি ফরেস্টি নামকরণ করা হয়।


সামাজিক বনায়নের নামে আমরা প্রতিনিয়ত বন-জঙ্গল, ঝোপঝাড় পরিষ্কার করছি। এ বনায়নের নামে সরকার, এনজিওগুলো দেশি গাছকে নিরুৎসাহিত করে বিদেশি আগ্রাসী গাছ দিয়ে (ইউকেলিপটাস, শিরিষ, আকাশমণি, সেগুন, রাবার, মেহগনিতে (শিশু) দেশ ভরে রেখেছে। এ গাছগুলোর বিভিন্ন রাসায়নিক দ্রব্য দেশের পরিবেশকে দূষিত করছে। গাছগুলোর ডালপালা প্রথমদিকে মূল শাখার সঙ্গে ৪০-৪৫ ডিগ্রি কোণে এবং পরিপকস্ফ চিকন ডালপালা একই অবস্থায় ঝুলে থাকে বলে পশু-পাখির বাসা বাঁধা ও বসা কোনোটিই আরামদায়ক হয় না। তাই তারা সেখানে বাসা বাঁধে না।
জলবায়ু ও ভূ-প্রকৃতি অনুযায়ী অঞ্চলভিত্তিক গাছের প্রজাতির উদ্ভব হয়েছে। তাই শীত, গ্রীষ্ম, নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলের গাছপালার জাত বিভিন্ন। খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হলে উৎপাদিত পণ্যের গুণগত ও পরিমাণগত মানোন্নয়ন দরকার। মনোকালচার পদ্ধতিতে চাষাবাদের জন্য প্রাথমিক অবস্থায় ভালো ফসল জন্মালেও পরে অত ভালো হয় না। গবেষণার মাধ্যমে যতই উচ্চফলনশীল, উন্নত, হাইব্রিড জাত উদ্ভাবন করা হোক না কেন, ফসল উৎপাদনের স্বার্থে বন-জঙ্গল ধরে রাখাও গবেষণার বিষয়। আর এর সঙ্গে সামাজিক বনায়নে দেশীয় ফলদ গাছের সমারোহ ঘটাতে হবে দেশে।

হ এম.ফিল গবেষক, পরিবেশ বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

No comments

Powered by Blogger.