স্পেশাল অলিম্পিকের জাতীয় আসর

সাংবাদিকেরা এসে বসে আছেন। পৃষ্ঠপোষকেরাও সবাই পৌঁছে গেছেন। কিন্তু আয়োজকদের দেখা নেই। আয়োজকেরা যেহেতু কেউ নেই, পৃষ্ঠপোষকদের পক্ষ থেকে বারবার অনুষ্ঠান শুরুতে দেরির জন্য ক্ষমা চাওয়া হলো। অবশেষে প্রায় পৌনে এক ঘণ্টা দেরিতে করে স্থানীয় এক হোটেলে শুরু হলো সংবাদ সম্মেলন—স্পেশাল অলিম্পিকের পঞ্চম জাতীয় প্রতিযোগিতা উপলক্ষে।
আগামীকাল আর্মি স্টেডিয়ামে উদ্বোধন করা হবে এই জাতীয় প্রতিযোগিতার। এরপর সারা দেশ থেকে আসা ১৬০ জন প্রতিযোগী নিয়ে দুই দিনব্যাপী প্রতিযোগিতা শুরু হবে বিকেএসপিতে। এই প্রতিযোগিতা থেকে ৭০ জন খেলোয়াড় নিয়ে ছয় মাস মেয়াদি প্রশিক্ষণ শিবির চলবে এথেন্সের বিশ্ব প্রতিযোগিতা সামনে রেখে।
১৯৯৫ সাল থেকেই বাংলাদেশে স্পেশাল অলিম্পিকের কার্যক্রম চলছে। ‘মানসিক প্রতিবন্ধী’ যাদের বলা হয়, সমাজের সেই ব্যতিক্রমী শিশুদের নিয়ে চলছে খেলাধুলার প্রতিযোগিতা আয়োজন। ২০০৭ সালে বাংলাদেশ স্পেশাল অলিম্পিকের হাতে হাত মিলিয়ে কাজ শুরু করে মোবাইল ফোন সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান গ্রামীণফোন।
ওই বছরই বেইজিং বিশ্ব প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশ স্পেশাল অলিম্পিক দল ৩২টি সোনাসহ ৭১টি পদক জিতে চমকে দিয়েছিল সবাইকে। সেই আসরের অনুপ্রেরণা নিয়ে আরেকটি বিশ্ব প্রতিযোগিতায় যাচ্ছে বাংলাদেশ দল।
এথেন্সে এবারের বিশ্ব প্রতিযোগিতার আসর বসছে আগামী বছর জুলাই মাসে। তবে এবারের আসরে বাংলাদেশের জন্য একটি খারাপ খবর, থাকছে না ক্রিকেট। ২০০৭ বেইজিং গেমসের ক্রিকেট চ্যাম্পিয়ন হিসেবে বাংলাদেশ জিতেছিল ১১টি সোনা।
এ কারণেই বাংলাদেশ স্পেশাল অলিম্পিক কমিটির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আশরাফ-উদ-দৌলা ২০০৭-এর সাফল্য পুনরাবৃত্তির প্রতিশ্রুতি দিতে পারলেন না, ‘আমরা এবার আগের বারের মতো অতগুলো পদক জিততে হয়তো পারব না।’
তা না পারলেও ক্ষতি নেই। সংবাদ সম্মেলনে গ্রামীণফোনের বিপণন-যোগাযোগ বিভাগের প্রধান সৈয়দ তাহমীদ আজিজুল হক বললেন, ‘সাফল্যর চেয়েও বড় কথা হলো তাদের নিয়মিত খেলাধুলার মধ্যে রাখা। এই খেলোয়াড়দের করুণার চোখে দেখার দরকার নেই। আসুন, তাদের মূল স্রোতের খেলোয়াড় হিসেবে বিবেচনা করেই আমরা তাদের অনুসরণ করি।’

No comments

Powered by Blogger.