দুর্নীতির আলোচনায় ভারতীয় সংসদের অধিবেশন ভন্ডুল

বিষয় দুর্নীতি। সরকার ও বিরোধী দুই পক্ষই দুর্নীতি নিয়ে আলোচনায় এতটাই সরব যে ভারতীয় সংসদের উভয় কক্ষের অধিবেশনই ভন্ডুল হয়ে গেল। গতকাল ছিল বাজেট অধিবেশনের দ্বিতীয় পর্বের প্রথম দিন। বিকেলে অনড় বিরোধীদের চাপে লোকসভার স্পিকার সুমিত্রা মহাজন শেষ পর্যন্ত আলোচনার দাবি মেনে নেন। আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টা থেকে চার ঘণ্টার জন্য ব্যাংক কেলেঙ্কারি নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা। তবে রাজ্যসভার চেয়ারম্যান ভেঙ্কাইয়া নাইডু ভোটাভুটিসহ আলোচনায় রাজি হননি। ফলে লোকসভায় বিতর্ক হলেও রাজ্যসভার অধিবেশন চলা নিয়ে সংশয় থেকেই যাচ্ছে। বিরোধীরা যে ব্যাংক কেলেঙ্কারির ঘটনা এবং এর খলনায়ক নীরব মোদি ও মেহুল চোকসিদের দেশান্তরি হওয়ার বিষয়টি তুলবে তা প্রত্যাশিতই ছিল। লোকসভা ও রাজ্যসভা দুই কক্ষেই কংগ্রেস ও অন্য বিরোধীরা এই বিষয় নিয়ে আলোচনার জন্য মুলতবি প্রস্তাব জমা দেয়। পাশাপাশি ক্ষমতাসীন বিজেপি সরব হয় সাবেক অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরমের পুত্র কার্তির দুর্নীতি নিয়ে। তাঁদের দাবি, বাবার সাহায্যে পুত্রের দুর্নীতিগ্রস্ত হয়ে ওঠা নিয়ে বিতর্ক হোক। এই পাল্টাপাল্টি দাবির ফলে একটা সময় দুই কক্ষের অধিবেশনই সারা দিনের জন্য মুলতবি করে দেওয়া হয়। তার আগে রাজ্যসভায় বিজেপির মন্ত্রী পীযূষ গোয়েল অভিযোগ করেন, হীরা ব্যবসায়ী নীরব মোদি ও মেহুল চোকসিরা পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাংকের টাকা তছরুপ শুরু করেছিলেন কংগ্রেস আমল থেকে।
দেশকে তাঁরা বিভ্রান্ত করতে চাইছেন। কংগ্রেসের আনন্দ শর্মা এই অভিযোগের জবাব দেন। মুলতবি প্রস্তাব তোলার সময় তিনি বলেন, ব্যাংক জালিয়াতির জবাব বিজেপি সরকারকে দিতেই হবে। প্রধানমন্ত্রীকে জানাতে হবে, কী করে তাঁর নাকের ডগা দিয়ে হাজার হাজার কোটি টাকা জালিয়াতি করে মোদি-চোকসিরা দেশ ছেড়ে চলে যেতে পারেন। ভারতের রাজনীতি যেভাবে তেতে রয়েছে, তাতে সংসদের অধিবেশন কদিন সুষ্ঠুভাবে চলবে তা নিয়ে সংশয় প্রবল। গুজরাট, রাজস্থান ও মধ্য প্রদেশের সাম্প্রতিক নির্বাচনগুলোতে বিজেপিকে কোণঠাসা করে কংগ্রেস উজ্জীবিত ছিল। কিছুটা থমকে ছিল বিজেপি। কিন্তু ত্রিপুরা, মেঘালয় ও নাগাল্যান্ড জয় বিজেপিকে চনমনে করে তুলেছে। দলগতভাবে ঠিক হয়েছে, বিরোধীরা দুর্নীতি নিয়ে গলা চড়ালে সরকারপক্ষও কংগ্রেসের দুর্নীতি নিয়ে স্বর জোরালো করবে। উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ভোটে কংগ্রেস সেভাবে শক্তি ও অর্থ খরচ করেনি। দোলের সময় কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধীও চলে যান ইতালি, অসুস্থ নানির সঙ্গে সময় কাটাতে। ভোটে বিপর্যয়ের পর রাহুল এই প্রথম প্রতিক্রিয়া জানালেন। টুইট করে তিনি বলেন, জনগণের রায় তাঁরা মাথা পেতে নিয়েছেন। উত্তর-পূর্বাঞ্চলে দলের শক্তি বাড়াতে তাঁরা নতুন উদ্যমে নামবেন।

No comments

Powered by Blogger.