প্রায় ১৯ লাখ ‘ভুয়া’ লাইসেন্স জব্দের নির্দেশ হাইকোর্টের

ফিটনেসবিহীন যান চলাচলে হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা
দেশের সব ধরনের সড়কে ফিটনেসবিহীন মোটরযান চলাচল বন্ধের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সরকারকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে আদালত দেশের প্রায় ১৯ লাখ গাড়িচালকের ‘ভুয়া’ লাইসেন্স জব্দ ও তাঁদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতেও সরকারকে নির্দেশ দিয়েছেন।
বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ গতকাল সোমবার স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে এ আদেশ দেন। রোববার একটি ইংরেজি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদন বিবেচনায় নিয়ে দেওয়া এই আদেশে আদালত বলেন, ওই প্রতিবেদন অনুসারে ১৫ থেকে ২১ জুলাই এক সপ্তাহ সময়ের মধ্যে দেশে ১৫৪টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে, যাতে ১৯১ জন মারা গেছেন। কারণ, প্রায় ১৯ লাখ ভুয়া গাড়িচালক বেপরোয়াভাবে সড়ক দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন।...গত জুনে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) করা পরিসংখ্যান বিশ্লেষণে দেখা যায়, দেশের ১৮ লাখ ৭৭ হাজার গাড়িচালকের বৈধ লাইসেন্স নেই।
আদেশে বলা হয়, এত বিপুলসংখ্যক চালক ভুয়া লাইসেন্স নিয়ে মোটরগাড়ি চালাচ্ছেন এবং নাগরিকদের জানমালের গুরুতর ক্ষতি করছেন, এটা জানার পরও তাঁদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তা জানতে রুল জারি করা হলো। সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ও বিআরটিএর চেয়ারম্যানকে চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে হবে।
এই রুল বিচারাধীন থাকা অবস্থায় বিবাদীদের তিনটি নির্দেশনা বাস্তবায়নের আদেশ দেন আদালত। প্রথমত, কথিত ১৮ লাখ ৭৭ হাজার গাড়িচালকের ভুয়া লাইসেন্স জব্দ এবং ওই লাইসেন্সধারী ও ব্যবহারকারীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে। দ্বিতীয়ত, দেশের সব ধরনের সড়কে ফিটনেসবিহীন মোটরযান চলাচল বন্ধের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। তৃতীয়ত, ১৯৮৩ সালের মোটরযান অধ্যাদেশ অনুসারে মোটরযান হিসেবে অনুমোদিত নয়—এমন সব ধরনের মোটরযান চলাচল বন্ধের জন্য ব্যবস্থা নিতে হবে।
আদালতের আদেশের পর ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তাপস কুমার বিশ্বাস সাংবাদিকদের বলেন, এই তিনটি নির্দেশনা বাস্তবায়ন করা হলো কি না, তা আগামী ৩০ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন আকারে জানানোর জন্য বিআরটিএর চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। আগামী ২ সেপ্টেম্বর বিষয়টি পরবর্তী শুনানির জন্য রাখা হয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.