ক্ষমতাধরদের মদতে প্রেস ক্লাব দখল করা হয়েছে -সংসদে স্বতন্ত্র এমপি তাহজীব

জাতীয় প্রেস ক্লাব দখলের অভিযোগ করা হয়েছে সংসদে। স্বতন্ত্র এমপি তাহজীব আলম সিদ্দিকী গতকাল পয়েন্ট অব অর্ডারে এ অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, আগে হতো ভূমি দখল, ক্যাম্পাস দখল, ভোটের বুথ দখল, বাজার দখল। নতুন সংস্কৃতি শুরু হয়েছে। এখন জাতির বিবেক দখল করা হচ্ছে। সাংবাদিকরাই জাতির বিবেক। যেখানে দুর্নীতি, দুর্বৃত্তায়ন ও মূল্যবোধের অবক্ষয়- সেখানেই সাংবাদিকরা জাতির বিবেক হিসেবে প্রতিবাদ করবেন। আর সেই সাংবাদিকের এক পক্ষ জাতীয় প্রেস ক্লাব দখল করে বসে আছেন। ক্ষমতাধরদের মদতে প্রেস ক্লাব দখল করা হয়েছে উল্লেখ করে তাহজীব বলেন, অতীতে নির্বাচিত প্রতিনিধিরাই প্রেস ক্লাব চালাতেন। কিন্তু এবার শুরু হলো দখলদারি সংস্কৃতি। সবকিছু দখল হতে হতে জাতির বিবেকও তাহলে দখল হয়ে গেল! তিনি বলেন, সাংবাদিকদের মধ্যে দলাদলির খেলা চলছে। দলাদলির বিষবাস্পে সাংবাদিকদের মিলনমেলার প্রাণকেন্দ্র প্রেস ক্লাব ক্ষতবিক্ষত। একই ছাদের নিচে হলেও প্রেস ক্লাবে রয়েছে দুই পক্ষের মধ্যে সন্দেহের প্রাচীর। তিনি আরও বলেন, আমাদের জাতি গঠনের ক্রান্তিলগ্নে ষাটের দশকেও আমরা তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া ও শহীদ সিরাজুদ্দীন হোসেনের মতো সাংবাদিকদের জাতির পথপ্রদর্শক কিংবা আলোর দিশারী হিসেবে পেয়েছি। কিন্তু মর্মাহত চিত্তে প্রেস ক্লাবে গিয়ে জানতে পারলাম, আজকের সাংবাদিক গোষ্ঠীর মধ্যে সেই মূল্যবোধ আর নেই। সাংবাদিকরা সব অন্যায়-অনাচারের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে জাতিকে জাগ্রত করবেন বলেও প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন তিনি।
৯ মাইল দূরত্ব পাড়ি দিতে কেন ৭২ ঘণ্টা
এদিকে রেলসেতু ভেঙে নিমজ্জিত তেলবাহী ট্রেনের দুটি ওয়াগন উদ্ধারের জন্য যাওয়া একটি অত্যাধুনিক জাহাজের ৯ মাইল দূরত্ব পাড়ি দিতে কেন ৭২ ঘণ্টা সময় লাগলো তা নিয়ে সংসদে প্রশ্ন তুলেছেন জাসদের কার্যকরী সভাপতি মইন উদ্দীন খান বাদল। তিনি এ ব্যাপারে সংশিষ্ট কর্তৃপক্ষের সমন্বয়হীনতা ও গাফিলতির অভিযোগ তুলে এ ব্যাপারে স্পিকারের রুলিং দাবি করেন। পয়েন্ট অব অর্ডারে তিনি বলেন, ১৯শে জুনের এই দুর্ঘটনায় পানিতে তেল মিশে যাওয়ার তিনদিন পর চট্টগ্রাম বন্দর থেকে তেল সরানোর কাজে ব্যবহৃত একটি জাহাজ ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে। এরই মধ্যে কর্ণফুলী হয়ে তেল হালদাতেও ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। একটি অত্যাধুনিক জাহাজের ৯ মাইল দূরত্ব পাড়ি দিতে কেন ৭২ ঘণ্টা সময় লাগলো? আবার জাহাজটি ঘটনাস্থলে যাওয়ার পরও চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে কিছু করা যায় কিনা। গেলেন তিনদিন পর, তারপরও কাজ না করে দেখছেন কি করা যায়! এই বিষয়ে সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোর সমন্বয়হীনতার বিষয় খতিয়ে দেখার দাবি করে বাদল বলেন, রেল সেতুগুলো অনেক আগে থেকেই নাজুক ছিল। বারবার বলার পরও এসব সেতুর মেরামতে কোন বরাদ্দ পাওয়া যায়নি। সারা দেশের সেতুর জন্য টাকা হয়, বোয়ালখালী উপজেলার সেতুর জন্য একটা পয়সাও বের হয় না। আর রেলপথ মন্ত্রণালয় যেখানে জানতো যে সেতুটি ক্ষতিগ্রস্ত, সেখানে কেন সেতুটি দিয়ে নিয়মিত রেল চলাচলের অনুমতি দিয়ে রাখা হয়েছে? দুর্ঘটনার পরপরই সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয় ও দপ্তরকে দুর্ঘটনার বিষয়টি অবহিত করা হলেও কারও কাছ থেকে যথাযথ সাড়া মেলেনি বলেও তিনি অভিযোগ করেন।

No comments

Powered by Blogger.