বিশ্বব্যাপী মার্কিনবিরোধী বিক্ষোভ

সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধের নামে মানবতার ওপর বর্বর নির্যাতন চালানোর প্রতিবাদে বিশ্বব্যাপী সমালোচনা ও বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে। দেশটির গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ’র অমানবিক নিষ্ঠুর নির্যাতনের রিপোর্ট প্রকাশিত হওয়ার পর সারা পৃথিবীতে নিন্দা ও প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশসহ জড়িতদের শাস্তি দাবি করেছেন তারা। প্রকাশ্যে বিবৃতি দিয়েছে ইউরোপীয় কমিশন, জার্মানি, চীন, ইরান, আফগানিস্তান, উত্তর কোরিয়া ও পাকিস্তান। বৃহস্পতিবার এএফপি এ খবর দিয়েছে। চীন, ইরান ও উত্তর কোরিয়ার অভ্যন্তরীণ মানবাধিকার নিয়ে সবসময় সরব ওয়াশিংটন। এবার যুক্তরাষ্ট্রের বর্বরতার বিরুদ্ধে কঠোর সমালোচনা করেছে তারা। মার্কিন মিত্র বলে খ্যাত জার্মানিও সিআইএ’র নিন্দা জানিয়ে জড়িতদের বিচার দাবি করেছে। জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফ্রাঙ্ক ওয়াল্টার স্টেইনমিয়ের বলেন, ‘গণতন্ত্র, উদার নৈতকিতা ও মূল্যবোধের এমন চরম অবমূল্যায়ন কোনোভাবেই আর ঘটতে দেয়া যাবে না।’ ইউরোপীয় কমিশনের মুখপাত্র ক্যাথেরিন রায় সিনেটের এ রিপোর্টের স্বচ্ছতাকে স্বাগত জানিয়ে মার্কিন কর্তৃপক্ষের এমন মানবাধিকার লংঘনের ব্যাপারে হুশিয়ারি দিয়েছেন। ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মার্জিয়ে আফখাম বলেছেন, আমেরিকা নিজেকে মানবাধিকারের রক্ষক হিসেবে দাবি করে প্রতি বছর বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মানবাধিকার লংঘন সম্পর্কে প্রতিবেদন তৈরি করে। কিন্তু মার্কিন প্রশাসনের হাতে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়।
এদিকে, আমেরিকাকে নির্যাতনের পথ থেকে সরে আসার পরামর্শ দিয়েছে চীন। বুধবার চীন জানিয়েছে, আমেরিকার বন্দি নির্যাতন সংক্রান্ত নীতি সংশোধন করা উচিত। পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র তাসনিম আসলাম সাপ্তাহিক সংবাদ ব্রিফিংয়ে বলেছেন, ‘সিআইএ’র নির্যাতনের বিষয়ে মার্কিন সিনেট যে রিপোর্ট প্রকাশ করেছে ইসলামাবাদ তার নিন্দা জানায়। এটা আন্তর্জাতিক আইনের লংঘন। মানবাধিকারের আইনগুলো অবশ্যই মেনে চলতে হবে।’
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা বিভাগের সাবেক কম্পিউটার বিশেষজ্ঞ স্নোডেন বলেছেন, বন্দিদের ওপর অমানবিক নির্যাতন চালিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ করেছে। প্যারিসে অ্যামনেস্টির এক সম্মেলনে এক ভিডিও বার্তা পাঠিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে গোপন তথ্য ফাঁস করে দেয়ার চাঞ্চল্যকর ঘটনার এই নায়ক স্নোডেন বলেন, সিনেট প্রকাশিত এই রিপোর্ট নানা কারণে গুরুত্বপূর্ণ। এই রিপোর্ট প্রমাণ করেছে জিজ্ঞাসাবাদের নামে যুক্তরাষ্ট্র মানবাধিকারের ব্যাপক লংঘন করে ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ করেছে। ওদিকে, বন্দিদের ওপর সিআইএ’র নির্যাতনের সবকিছু সাবেক প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ জানতেন বলে জানিয়েছেন তারই ভাইস প্রেসিডেন্ট ডিক চেনি। ফক্স নিউজের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, কোনো কিছ্? প্রেসিডেন্টের অজানা ছিল না। বৃহস্পতিবার বিবিসি এ খবর দিয়েছে। ডিক চেনি বলেন, জিজ্ঞাসাবাদ কর্মসূচি সম্পর্কে তার (বুশ) যা জানার দরকার ছিল তার সবই তিনি জানতেন।

No comments

Powered by Blogger.