খালেদা জিয়ার লিভ টু আপিলের আদেশ আজ

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় অভিযোগ আমলে নেয়া ও অভিযোগ গঠন বাতিল বিষয়ে খালেদা জিয়ার লিভ টু আপিলের ওপর আজ আদেশ দেয়া হবে। প্রধান বিচারপতি মো. মোজাম্মেল হোসেনের নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ শুনানি গ্রহণ শেষে রোববার আদেশের এ দিন ধার্য করেন। অন্যদিকে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় করা লিভ টু আপিলের ওপর আপিল বিভাগে শুনানি অব্যাহত রয়েছে। এ দুটি মামলায় আজ বিশেষ জজ আদালত-৩ এ সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য দিন ধার্য রয়েছে। রোববার সকালে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় করা লিভ টু আপিলের ওপর শুনানিতে অংশ নেন আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন। পরে শুনানি প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের বলেন, বাংলাদেশের লাখ লাখ মামলা বিভিন্ন আদালতে দীর্ঘদিন পর্যন্ত মুলতবি রয়েছে। সেসব মামলা শুনানির জন্য সরকারপক্ষ থেকে এতটা উৎসাহ কখনও দেখান হয় না। এই মামলায় সরকারের এত উৎসাহের মূল কারণ, এটা একটা রাজনৈতিক মামলা এবং এখানে খালেদা জিয়া আসামি। এছাড়া এই মামলাটা নিয়ে এত তাড়াহুড়ো করার কোনো কারণ নেই।
এ সময় তিনি বলেন, বর্তমান প্রধান বিচারপতি দায়িত্ব নেয়ার পর আপিলের শুনানির জন্য দুটি দিন নির্দিষ্ট করেছিলেন। কিন্তু এই মামলার ক্ষেত্রে সেটারও খেলাপ করে একনাগাড়ে শুনানি করা হচ্ছে। এর ফলে জনমনে একটা বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে, খালেদা জিয়ার মামলা নিয়ে এত উৎসাহ কেন?
আদালতের শুনানিতে তিনি বলেন, জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টে সরকার কোনো অর্থ দেয়নি। একটা পয়সাও এখানে আত্মসাৎ হয়নি। এখানে কোনো অনিয়ম হলে ট্রাস্ট আইন অনুযায়ী বিচার হতে পারে। এই বিষয়টি নিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলা করার কোনো আইনগত ভিত্তি নেই। এর আগে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় করা লিভ টু আপিলের শুনানি করেন অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন ও এজে মোহাম্মদ আলী। শুনানিকালে আদালতে উপস্থিত ছিলেন ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার রাগীব রউফ চৌধুরী, ব্যারিস্টার এহসানুর রহমান প্রমুখ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টে অনিয়মের অভিযোগে দুদক ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় মামলা করে দুদক। ২০১১ সালের ৮ আগস্ট জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে অর্থ লেনদেনের অভিযোগ এনে খালেদা জিয়াসহ চারজনের নামে তেজগাঁও থানায় আরও একটি মামলা করে দুদক।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় ২০০৯ সালের ৫ আগস্ট অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। আদালত একই বছরের ৭ সেপ্টেম্বর এই মামলায় অভিযোগ আমলে নেন। অভিযোগ আমলে নেয়ার আদেশ বাতিল চেয়ে খালেদা জিয়ার পক্ষে হাইকোর্টে একটি আবেদন দায়ের করা হয়। ২০১১ সালের ১৪ ডিসেম্বর হাইকোর্ট ওই আবেদন খারিজ করে রায় দেন। এই রায়ের বিরুদ্ধে বেগম জিয়া ২০১২ সালের ২৬ ফেব্র“য়ারি আপিল বিভাগে লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) দায়ের করেন।
অন্যদিকে গত ১৯ মার্চ এ দুটি মামলায় অভিযোগ গঠন করেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৩ এর বিচারক বাসুদেব রায়। এ অভিযোগ গঠন আইনানুগ হয়নি দাবি করে তা বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেছিলেন খালেদা জিয়া। এই দুটি আবেদন গত ২৩ এপ্রিল খারিজ করেন হাইকোর্ট। এর বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে খালেদার পক্ষে লিভ টু আপিল দায়ের করা হয়। এর মধ্যে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় করা দুটি লিভ টু আপিলের ওপর আজ আদেশ দেয়া হবে। আর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় করা লিভ টু আপিলের শুনানি অব্যাহত রয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.