শিক্ষাভবনে ছাত্রলীগ যুবলীগের গুলিবিনিময়

টেন্ডারবাজিকে কেন্দ্র করে শিক্ষাভবনে সরকার দলীয় দু’টি সংগঠন ছাত্রলীগ-যুবলীগের গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। এ সময় উভয় পক্ষের অন্তত ৬ জন আহত হয়েছেন। আহতদের ঢাকা মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পুরো ঘটনার সময় পুলিশকে নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করতে দেখা যায়। প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ জানায়, গতকাল সকাল সাড়ে ১১টা থেকে থেমে থেমে কয়েক দফা এ সংঘর্ষ হয়। শিক্ষা ভবনের সামনে গতকাল সকাল থেকেই প্রায় শতাধিক কর্মী নিয়ে মহড়া দেন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ও বর্তমানে যুবলীগের আইসিটি বিষয়ক সম্পাদক শফিকুল ইসলাম ওরফে টেন্ডার শফিক। আর সাড়ে ১১টার দিয়ে ৩০ থেকে ৩৫ জন কর্মী নিয়ে শিক্ষা ভবনের সামনে আসেন অপর গ্রুপের প্রধান সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ও বর্তমানে আওয়ামী লীগের উপ-কমিটির সহ-সম্পাদক মিজানুর রহমান। এ নিয়ে দুই গ্রুপের কর্মীদের মধ্যে চলে পাল্টাপাল্টি মহড়া। এক পর্যায়ে দুপুর ১২টার দিকে শফিক গ্রুপের কর্মীরা পিস্তল, হকিস্টিক, রাম দা, লোহার রড, ছুরি নিয়ে মিজানুর রহমানের ওপর হামলা চালায়। এই সময় শফিক গ্রুপের এক ক্যাডার প্রকাশ্যে পিস্তল উঠিয়ে হুমকি দেয় মিজানকে। এ সময় মিজান গ্রুপের ক্যাডাররা তাকে ধাওয়া দেয়, ধাওয়া খেয়ে পালানোর সময় পিস্তল ফেলে পালিয়ে যায় ওই ক্যাডার। পরে ওই ভবনের এক কর্মকর্তা পিস্তলটি নিজের হেফাজতে রাখেন। সন্ধ্যায় দিকে ওই ক্যাডার সেই পিস্তলটি নিয়ে যায়। এ সময় মিজান গ্রুপের অন্য কর্মীরা মারধরের শিকার হয়। মিজানের মাথা ফেটে যায় ও শরীরের বিভিন্ন স্থান জখম হয়। রক্তাক্ত অবস্থায় মিজানুর রহমানকে নেয়া হয় ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে। জানা গেছে, শিক্ষার মানোন্নয়নের প্রকল্প (সেকায়েপ), বিভিন্ন মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের উন্নয়ন কাজসহ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সকল উন্নয়ন ও সংস্কার কাজ বাস্তবায়ন হয় শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের (ইইডি) মাধ্যমে। তবে গতকাল শিক্ষা ভবনে কোন টেন্ডার ড্র বা এর শিডিউল কেনা ও জমার কার্যক্রম ছিল না। সূত্র জানায়, শিক্ষা ভবনে বর্তমানে মহড়া দেয়া দু’টি গ্রুপের একটির প্রধান হচ্ছেন শিক্ষা ভবনেই টেন্ডারবাজির ঘটনায় ২০০০ সালে ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কৃত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মুহসিন হলের সাবেক সভাপতি শফিক ওরফে টেন্ডার শফিক। ঠিকাদারি সংক্রান্ত কাজেই ওই বছরে শিক্ষা ভবনের সামনে প্রতিপক্ষ গ্রুপের কাছে ব্যাপক মারধরের শিকার হয়েছিল তৎকালীন ছাত্রলীগ নেতা শফিকুল ইসলাম। কিন্তু বিগত মহাজোট সরকারের আমল থেকে এখন পর্যন্ত শিক্ষা ভবনের পুরো ঠিকাদারি কাজই শফিকের নিয়ন্ত্রণে আছে। এমনকি মিজানুর রহমানসহ তার গ্রুপের কর্মীরা শফিকের সঙ্গে ঠিকাদারি করতো। সম্প্রতি মিজানুর রহমান আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের কিছু কর্মী নিয়ে আলাদা গ্রুপ গঠন করে ঠিকাদারি কাজ নিয়ন্ত্রণে নেয়ার চেষ্টা করে। এ নিয়ে গত এক মাস ধরে শিক্ষা ভবনে উত্তপ্ত পরিস্থিতি বিরাজ করছে। ঘটনার বিষয়ে রমনা জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার শিবলী নোমান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, এ ঘটনায় একজন আহত হয়েছে তবে কাউকে আটক করা হয়নি। কেউ মামলা করলে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে।

No comments

Powered by Blogger.