ইউক্রেনে আগাম নির্বাচন দাবি

ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি প্রত্যাখ্যান করায় তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়েছে ইউক্রেনের জনগণ। রাজধানী কিয়েভের ‘ইনডিপেন্ডেন্ট স্কয়ারে’ সরকারের এ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়েছে বিক্ষুব্ধরা। সোমবার সকালে একহাজারের বেশি বিক্ষোভকারীরা বুলডোজার দিয়ে রাজধানী কিয়েভের প্রেসিডেন্ট কম্পাউন্ডের এক দিক ভেঙে ফেলেছে। এ সময় লাঠিচার্জ, টিয়ারগ্যাস ও ফ্ল্যাশ গ্রেনেড নিক্ষেপ করে পুলিশ। তবু পিছু হঠেনি বিক্ষোভকারীরা। বিপ্লব স্লোগানে ঐক্যবদ্ধ থেকে দখল করে নিয়েছে ‘সিটি হল’। এদিকে, গত রাত থেকে ঐতিহাসিক ‘ইনডিপেন্ডেন্ট স্কয়ারে’ রাতভর অবস্থান করে বিক্ষোভকারীরা। ইইউ’র বাণিজ্য সংক্রান্ত চুক্তি প্রত্যাখ্যান করায় বিরোধী দল ও বিক্ষোভকারীরা প্রেসিডেন্ট ভিক্টর ইয়ানুকুভিচের পদত্যাগের দাবি তুলছে। সেই সঙ্গে আগাম নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে তারা। বর্তমান সরকার পদত্যাগ না করা পর্যন্ত তারা ইনডিপেন্ডেন্ট স্কয়ার ছেড়ে যাবে না বলেও ঘোষণা দিয়েছে বিক্ষোভকারীরা। এদিকে, বিক্ষোভ-সমাবেশ নিষিদ্ধ করার প্রতিবাদে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের রাস্তায় নেমে এসেছেন বিক্ষুব্ধ জনতা।রোববার সরকার বিক্ষোভ সমাবেশ নিষিদ্ধ করলে তিন লাখ মানুষ রাজপথে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেই তার প্রতিবাদ জানায়। ইউক্রেনের রাশিয়াপন্থী সরকার ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার চুক্তি বাতিল করলে তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলে দেশটির বিরোধী দল।
পরিস্থিতি সামাল দিতে বিক্ষোভ সমাবেশ নিষিদ্ধ করা হয়। উগ্র জাতীয়তাবাদী নেতা ওলে তায়ানিবো দেশব্যাপী হরতালের ডাক দিয়েছেন। তার দল ফাদারল্যান্ড পার্টির সমর্থকরা সরকারি কয়েকটি ভবন দখল করে নিয়েছেন। ২০০৪-০৫ সালে অরেঞ্জ বিপ্লবের ঘটনারই পুনরাবৃত্তি ঘটছে ইউক্রেনে। বিরোধী রাজনীতিকরা বিক্ষোভকারীদের শান্ত থাকার অনুরোধ জানিয়ে বলেছেন, বিক্ষোভকারীদের ওপর দমনপীড়ন চালানো জায়েজ করার জন্যই প্রেসিডেন্ট ভিক্টর ইয়ানকভিচের সদর দফতরে সহিংসতার ঘটনা ঘটিয়েছে সরকার। বিরোধী দলীয় নেতা ভিটালি ক্লিৎকো প্রেসিডেন্ট এবং তার সরকারের পদত্যাগ দাবি করে বলেছেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নে যুক্ত হওয়ার জন্য দেশবাসীর স্বপ্নকে তারা ‘চুরি করেছে’। বিক্ষোভকারীদের অবস্থান ইউক্রেনের রাজধানী কেইভে দেশটির প্রেসিডেন্ট ভিক্টর ইয়ানুকোভিচের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে রাস্তায় তাঁবু খাটিয়ে হাজার হাজার বিক্ষোভকারী অবস্থান নিয়েছে। অনেক বিক্ষোভকারী রাজধানী কেইভের ‘ইন্ডিপেন্ডেন্স স্কয়ারে’ রাত কাটাচ্ছে। অনেক বিক্ষোভকারী স্থানীয় সিটি হলে পুলিশ প্রতিবন্ধকের মধ্যে অবস্থান করছে।ন এর আগে রোববার বিক্ষোভ র‌্যালি নিষিদ্ধের সরকারি সিদ্ধান্তে প্রতিবাদ জানাতে ১ থেকে ৫ লাখ বিক্ষোভকারী রাস্তায় নেমে আসে। রাজধানী কিয়েভে প্রেসিডেন্ট ভবনের বাইরে পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ হয়। পুলিশ তাদের লক্ষ্য করে টিয়ার গ্যাস ছুড়ে মারে। এতে বেশ কিছু বিক্ষোভকারী আহত হয়। অন্যদিকে পুলিশ দাবি করে তাদের প্রায় ১০০ জন কর্মকর্তা আহত হয়েছে।
আলোচনায় ইউক্রেন সরকার
বিক্ষোভের মুখে রাজধানী কিয়েভে সৃষ্ট অচলাবস্থা নিরসনে আলোচনায় বসতে যাচ্ছে ইউক্রেন সরকার ও বিরোধীরা। সোমবারই এই আলোচনা শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।
দেশটির পার্লামেন্টের স্পিকার ভ­াদিমির রিব্যাক জানিয়েছেন, চলমান সংকটের ব্যাপারে সব পক্ষকেই এই আলোচনায় মতামত ব্যক্ত করার সুযোগ দেয়া হবে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সঙ্গে ব্যবসায় সংক্রান্ত চুক্তি সই করতে প্রত্যাখ্যান করায় প্রেসিডেন্ট ভিক্টর ইয়ানুকভিচের সরকারের বিরুদ্ধে গত সপ্তাহে রাস্তায় নামে বিরোধীরা। এএফপি, আল জাজিরা, সিএনএন রয়টার্স।

No comments

Powered by Blogger.