দুই দিদিয়েরের আবেগের ম্যাচ

দুজনের নামে অদ্ভুত এক মিল—শুরুটা দিদিয়ের দিয়ে। অন্তত আজকের জন্য নামের মতো ভাগ্যটাও মিলে যাচ্ছে দিদিয়ের দ্রগবা ও দিদিয়ের দেশমের। দুজনই আজ মুখোমুখি হচ্ছেন পুরোনো ক্লাবের বিপক্ষে।
চেলসির আইভরিয়ান স্ট্রাইকার দ্রগবা এখন বড় তারকা। তবে তাঁর এই তারকা হয়ে ওঠার ভিত্তিটা কিন্তু স্থাপিত হয় ফ্রান্সের ক্লাব মার্শেইয়েই। চেলসিতে নাম লেখানোর আগে মার্শেইয়ে একটি মৌসুমই খেলেছেন দ্রগবা। সেই মৌসুমটিতেই দ্রগবার পিঠে তারকা শব্দটি সেঁটে গেছে। ফরাসি এই ক্লাবটির প্রতি অন্যরকম একটা ভালোবাসাও তাই আছে দ্রগবার। বর্তমানে মার্শেইয়ের কোচ দেশম অবশ্য তারকা হওয়ার পরই চেলসিতে যোগ দিয়েছিলেন। ফ্রান্সের হয়ে বিশ্বকাপ জিতেছেন ১৯৯৮ সালে। এরপর জুভেন্টাস ছেড়ে নাম লেখান চেলসিতে। মাত্র এক মৌসুমই খেলেছেন। তবে ওই এক মৌসুমেই ক্লাবটিকে ভালোবেসে ফেলেছেন।
চ্যাম্পিয়নস লিগের গ্রুপ পর্বে চেলসি-মার্শেই ম্যাচ আজ পুরোনো স্মৃতি ফিরিয়ে আনছে দ্রগবা ও দেশমের মনে। তবে পেশাদার পৃথিবীতে আবেগ চেপে রাখাটাই নিয়ম। সেটি দেশমের জন্য যতটা সহজ হবে, দ্রগবার জন্য তা নয়। কারণ এর আগেও চেলসির মুখোমুখি হয়েছেন দেশম। সেটা ২০০৪ সালের চ্যাম্পিয়নস লিগে। দেশম তখন মোনাকোর কোচ। পুরোনো ক্লাবকে হারিয়েই চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে তুলেছিলেন তাঁর দলকে। আর ২০০৪ সালে মার্শেই ছেড়ে আসার পর এই প্রথম স্মৃতিবিজড়িত ক্লাবের মুখোমুখি হচ্ছেন দ্রগবা।
চেলসির জন্য অবশ্য মার্শেইয়ের মুখোমুখি হওয়া এই প্রথম নয়। এর আগে দুই দল মুখোমুখি হয়েছে দুবার। তাতে ১-১-এ সমতা। মার্শেই ইউরোপিয়ান প্রতিযোগিতায় সর্বশেষ চারটি ‘অ্যাওয়ে’ ম্যাচে অপরাজিত থাকলেও আজ ফেবারিট মানতে হবে চেলসিকেই। স্টামফোর্ড ব্রিজে খেলা আর চ্যাম্পিয়নস লিগে নিজেদের মাঠে ২২ ম্যাচ খেলে মাত্র একটিতেই হেরেছে চেলসি।
এসি মিলান-আয়াক্স ম্যাচটি কাগজে-কলমে অনেক বড়। কারণ দুই দলই সাবেক চ্যাম্পিয়ন। তবে আয়াক্সের সেই সুদিন আর নেই। ইউরোপিয়ান প্রতিযোগিতার সর্বশেষ ১৩ ম্যাচে মাত্র ১টিই জয় চারবারের ইউরোপ-সেরাদের। ইতালিয়ান ক্লাবগুলোর বিপক্ষে তারা আরও নিষ্প্রভ, সর্বশেষ ৭ ম্যাচের ৬টিতেই হার।
অন্যদিকে আয়াক্সের বিপক্ষে খেলা সর্বশেষ ৩টি ম্যাচেই জিতেছে মিলান। ম্যাচটি আমস্টারডামে নিজেদের মাঠে, তাতেও কি আয়াক্স খুব একটা ভরসা পাচ্ছে? চ্যাম্পিয়নস লিগে সর্বশেষ ৭টি অ্যাওয়ে ম্যাচের মাত্র ১টিতেই হেরেছে মিলান।
মিলান-আয়াক্সের ‘জি’ গ্রুপের আরেক বড় দল রিয়াল মাদ্রিদ। তিন দল মিলে শিরোপা জিতেছে ২০ বার। এই গ্রুপকে ‘মৃত্যুকূপ’ বলা হবে, তাতে আর আশ্চর্য কী! তিন পরাশক্তির সঙ্গে পড়ে হাঁসফাঁস করতে থাকা ফরাসি ক্লাব অজেরি আজ রিয়ালের প্রতিপক্ষ। দুই দলের এটাই প্রথম সাক্ষাৎ। এই দুই দলের শক্তির পার্থক্য বিচার করতে অবশ্য মুখোমুখি লড়াইয়ের ইতিহাসের প্রয়োজন পড়ে না। রেকর্ড ৯ বার ইউরোপ-সেরার মুকুট পরা রিয়ালকে এমনিতেই এগিয়ে রাখা যায়।
তবে ম্যাচটা অজেরির মাঠে আর নিজেদের মাঠে ইউরোপিয়ান প্রতিযোগিতায় সর্বশেষ ১৬টি ম্যাচের মাত্র একটিতেই হেরেছে তারা। আর রিয়াল মাদ্রিদ ফরাসি প্রতিপক্ষের মাঠে সর্বশেষ ৫ ম্যাচের ৪টিই হেরেছে। এর সঙ্গে হোসে মরিনহোর দলের বড় দুশ্চিন্তা হয়ে দেখা দিয়েছে গোল-খরা।
ক্রিস্টিয়ানো রিয়াল মাদ্রিদের জার্সি গায়ে চ্যাম্পিয়নস লিগে ৭ ম্যাচে ৭ গোল করেছেন। সর্বশেষ ১৩ ম্যাচে তাঁর ১১ গোল। দলে আছেন গঞ্জালো হিগুয়েইন, করিম বেনজামার মতো নামী-দামি স্ট্রাইকার। তার পরও গোল-খরা বলা হচ্ছে স্প্যানিশ লিগে রিয়াল ৫ ম্যাচে মাত্র ৬ গোল করতে পারায়। কোচ হোসে মরিনহোকে তাই বলতে হচ্ছে, ‘আমরা জানি, আমাদের প্রমাণিত গোল স্কোরার আছে। কিন্তু ভয়টা হচ্ছে, এ মুহূর্তে কেউ গোল পাচ্ছে না।

No comments

Powered by Blogger.