রোগ নির্ণয় করতে লেজারপ্রযুক্তি

আগেভাগেই রোগ নির্ণয় করতে শিগগিরই এক্স-রে বা রঞ্জনরশ্মি ব্যবহারের প্রযুক্তির জায়গা নিয়ে নেওয়ার সম্ভাবনা তৈরি করেছে লেজাররশ্মির প্রযুক্তি। গবেষকেরা জানিয়েছেন, আগামী পাঁচ বছরে এই প্রযুক্তির ব্যাপক ব্যবহার শুরু হতে পারে।
রোগ শনাক্ত করার ক্ষেত্রে লেজারপ্রযুক্তিতে মূলত রমণ বর্ণালি পরীক্ষণ পদ্ধতি ব্যবহার করা হবে। এর মাধ্যমে স্তন ক্যানসার, দাঁতের ক্ষয় ও হাড় দুর্বল হয়ে যাওয়ার মতো রোগ আগেভাগেই শনাক্ত করা সম্ভব হবে। বিজ্ঞানীদের ধারণা, এতে বিভিন্ন রোগের চিকিৎসা দ্রুত, কম খরচে ও সুনির্দিষ্টভাবে করা সম্ভব হবে।
রমণ বর্ণালি পরীক্ষণ পদ্ধতির মাধ্যমে অণু থেকে বিক্ষিপ্ত আলোর ঘনত্ব ও তরঙ্গদৈর্ঘ্য পরিমাপ করা হয়। রাসায়নিক দ্রব্য ও ওষুধ তৈরির কারখানায় এই পদ্ধতি ব্যবহূত হচ্ছে। উদাহরণ হিসেবে বলা চলে, আগুনের শিখার বৈশিষ্ট্য নির্ণয়ে রমণ বর্ণালি পরীক্ষণ পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়। কীভাবে জ্বালানি পুড়ছে তা পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে পণ্য পুড়ে যাওয়ার কারণে সৃষ্ট দূষণের পরিমাণ কমিয়ে আনা সম্ভব।
যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়নের অধ্যাপক মাইকেল মরিস মানুষের হাড় পর্যবেক্ষণের কাজে দুই বছর ধরে রমণপদ্ধতি ব্যবহার করছেন। এখন পর্যন্ত তিনি মৃত ব্যক্তিদের হাড় নিয়ে গবেষণা করেছেন। তবে মরিস বলেন, জীবিত মানুষের দেহেও এই পদ্ধতি কার্যকর প্রমাণিত হতে পারে। এর মাধ্যমে বর্তমানে প্রচলিত অনেকগুলো প্রক্রিয়া ও রোগনির্ণয়ের পদ্ধতি বদলে দেওয়া সম্ভব।
এই পদ্ধতির সবচেয়ে উপকারী দিক হলো, দেহে কাটা-ছেঁড়া করতে হয় না, প্রচলিত প্রক্রিয়াগুলোর চেয়ে এ পদ্ধতি দ্রুততর এবং অনেক বেশি নির্দিষ্টভাবে রোগ নির্ণয় করা সম্ভব।
রোগ নির্ণয়ে এই পদ্ধতি কীভাবে কাজ করবে ব্যাখ্যা করতে গিয়ে মরিস বলেন, একজন ব্যক্তি অসুস্থ হয়ে পড়লে, বা অসুস্থ হতে পারেন এমন অবস্থার সৃষ্টি হলে, তাঁর দেহের অসুস্থ কোষগুলোর রাসায়নিক সংমিশ্রণ সুস্থ কোষের চেয়ে আলাদা হয়। রমণপদ্ধতি ব্যবহার করে এই পরিবর্তন শনাক্ত করা যায়। পরিবর্তনের মাত্রার কম-বেশির ওপর নির্ভর করে অসুস্থ হওয়ার মাত্রা শনাক্ত করা সম্ভব।

No comments

Powered by Blogger.