সু চির সঙ্গে জান্তা সরকারের মন্ত্রীর বৈঠক

মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী অং সান সু চির সঙ্গে বৈঠক করেছেন জান্তা সরকারের লিয়াঁজো (দুই পক্ষের সংযোগ রক্ষাকারী) কর্মকর্তা। গতকাল বুধবার একটি রাষ্ট্রীয় অতিথিশালায় ওই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকের স্থায়িত্ব ছিল ৪৫ মিনিট। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা এএফপিকে এ কথা জানান।
অং সান সু চি এবং শ্রমমন্ত্রী অং চির মধ্যকার ওই বৈঠকে কী আলোচনা হয়েছে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানাননি ওই কর্মকর্তা।
অক্টোবরের শুরু থেকে এ নিয়ে তিনবার বৈঠক করলেন সু চি এবং অং চি। গত সপ্তাহে অং সান সু চির চলমান গৃহবন্দিত্বের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত আপিল শুনতে সুপ্রিম কোর্ট রাজি হওয়ার পর এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হলো।
২০ বছরের মধ্যে ১৪ বছরই সু চিকে গৃহবন্দী করে রেখেছে সামরিক জান্তা। ১৯৯০ সালে অনুষ্ঠিত মিয়ানমারের সর্বশেষ গণতান্ত্রিক নির্বাচনে সু চির দলের বিপুল বিজয় মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানায় জান্তা সরকার।
গত নভেম্বরে জান্তাপ্রধান থান শুয়ের কাছে একটি চিঠি লেখেন অং সান সু চি। তিনি চিঠিতে মিয়ানমারের ওপর থেকে পশ্চিমা বিশ্বের অবরোধ তুলে নিতে সহযোগিতা এবং থান শুয়ের সঙ্গে সরাসরি আলোচনার প্রস্তাব দেন। ওই চিঠির পর সর্বশেষ এই বৈঠককে দুই পক্ষের মধ্যে পুনঃসম্পর্ক স্থাপনের চিহ্ন হিসেবে দেখা হচ্ছে।
অক্টোবরের শুরুতে পাঁচ দিনের মধ্যে দুবার অং সান সু চির সঙ্গে বৈঠক করেন শ্রমমন্ত্রী অং চি। নভেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী কার্ট ক্যাম্পবেলের সঙ্গে বৈঠকের পর সু চিকে সংবাদমাধ্যমের সামনে হাজির হওয়ার বিরল সুযোগ দেয় জান্তা সরকার। এএফপি।
সু চি অসত্: রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম
অং সান সু চিকে ‘অসত্’ আখ্যা দিয়েছে মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয়গণমাধ্যম।
রাষ্ট্রপরিচালিত তিনটি পত্রিকায় গতকাল প্রকাশিত মন্তব্য প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সামরিক নেতাদের সঙ্গে সু চির বৈঠকের প্রস্তাব এবং পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার জন্য চাপ দেওয়ার ব্যাপারে তিনি আন্তরিক এবং সত্ নন। গৃহবন্দী সু চি সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত করার চেষ্টা করেছিলেন এবং তাঁর আচরণ অত্যন্ত প্রশ্নসাপেক্ষ।
২৫ সেপ্টেম্বরে আরও একটি চিঠিতে সু চি মিয়ানমারের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে নেওয়ার স্বার্থে জান্তা নেতা এবং পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে বৈঠক করার ইচ্ছা প্রকাশ করেন।
কিন্তু ভারত ও চীনের সঙ্গে মিয়ানমারের জান্তা সরকারের বাণিজ্যের কারণে সু চির এই প্রচেষ্টা কাজে আসেনি বলে মন্তব্য করেছেন সমালোচকেরা।
মিয়ানমারের নিউ লাইট পত্রিকা এক মন্তব্যে বলেছে, ‘তার সব চিঠি অসততারই বহিঃপ্রকাশ। এর উদ্দেশ্য ক্ষমতাসীন সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করা, সব দোষ সরকারের ঘাড়ে দেওয়া।’

No comments

Powered by Blogger.