দলবদলের প্রথম দিনে শুধুই সোনালী ব্যাংক

মওলানা ভাসানী হকি স্টেডিয়ামের সবুজ টার্ফের পাশেই রেলিং ঘেঁষে দাঁড়িয়ে আরিফুল হক প্রিন্স, হাবুল ইসলাম, মওদুদুর রহমান শুভরা। সবারই মুখ শুকনো। ফেডারেশনের দ্বিতীয় তলার সম্মেলন কক্ষে চলছে আগামী মৌসুমের প্রিমিয়ার হকি লিগের দলবদল। সেদিকে যেন ভ্রূক্ষেপই নেই কারও। এবারের দলবদলে যে উত্তেজনার ছোঁয়াই খুঁজে পাচ্ছেন না তাঁরা!
আবাহনীর স্ট্রাইকার শুভ তো বলেই ফেললেন, ‘দলবদল কি না বুঝতেই পারছি না। এ রকম দলবদল জীবনেও দেখিনি।’ মোহামেডানের হাবুলও তাল মেলালেন তাঁর সঙ্গে, ‘ইতিহাসে এই প্রথম দেখছি এ রকম দলবদল। আগে দেখতাম কে কোন দলে যাবে তা নিয়ে চলত চাপা উত্তেজনা। দুই-এক সপ্তাহ আগেই কথাবার্তা চূড়ান্ত হয়ে যেত। এবার কিছুই হচ্ছে না।’
হবে কীভাবে; আবাহনী, মোহামেডান, ঊষার মতো হকির বড় ক্লাবগুলো তো এই সময়ে দলবদল মানতেই চায়নি। লিগ কমিটির সম্পাদক আনভীর আদেল অবশ্য সময় বাড়ানোয় ক্লাবগুলো মত বদলাবে বলে আশা করছেন, ‘মোহামেডান আমাদের আশ্বস্ত করেছে, আবাহনীও জানিয়েছে সভা করে সিদ্ধান্ত জানাবে। এরই মধ্যে সোনালী ব্যাংক দলবদল করে ফেলেছে। এ ছাড়া পুলিশ, ঊষাও আসবে।’ তবে মোহামেডান ও আবাহনী এখনো দলবদল সম্পর্কে মনস্থির করতে পারেনি। আবাহনীর হকি কর্মকর্তা শহীদুল্লাহ বললেন, ‘আমার আজই (কাল) বাইলজ হাতে পেয়েছি। ক্লাবের সবার সঙ্গে বসে সিদ্ধান্ত নেব কী করা যায়।’
বাইলজে এবার একটা পরিবর্তনই এসেছে। গত মৌসুমে যেখানে মাত্র তিনজন বিদেশিকে নিবন্ধন করানোর সুযোগ ছিল, এবার তা বেড়ে পাঁচজনে দাঁড়িয়েছে। শুধু তা-ই নয়, ইচ্ছা করলে ক্লাবগুলো এই পাঁচজনকেই একই সঙ্গে মাঠে নামাতে পারবে (গতবার দুজন খেলতে পারতেন)। এমন একটি সিদ্ধান্তে অসন্তুষ্টই প্রিন্স, ‘বিদেশি পাঁচজনকে একসঙ্গে খেলানোটা আমি সমর্থন করি না। যদি আবাহনী পাঁচ ভারতীয়কে আর মোহামেডান পাঁচ পাকিস্তানিকে আনে তাহলে তো আবাহনী-মোহামেডান ম্যাচ ভারত-পাকিস্তান হয়ে যাবে।’
কাল দলবদলের প্রথম দিনে এসেছে শুধু সোনালী ব্যাংকই। নিবন্ধন করিয়েছে মোট দশজন খেলোয়াড়কে, যাদের আটজনই নতুন। এর মধ্যে মোহামেডান থেকে এসেছেন ইরফান, সুজন ও মাসুম; আবাহনী থেকে ফিরোজ ও রকি, ঊষা থেকে তুহিন; আজাদ থেকে রিয়াজ এবং ওয়ারী থেকে প্রবীর। গতবার লিগে চতুর্থ হয়েছিল সোনালী ব্যাংক, অধিনায়ক আশিকুজ্জামান এবার শিরোপা লড়াইয়ে নামার প্রত্যয় জানালেন।
নয় দিনব্যাপী দলবদল চলবে ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত।

No comments

Powered by Blogger.