বাল্যবিবাহে এগিয়ে ভারত: ইউনিসেফ

অর্থনৈতিক উন্নতির পথে হাঁটা শুরু করলেও এখনো সামাজিক উন্নতির পথে ততটা অগ্রসর হতে পারেনি ভারত, পাকিস্তান ও নেপালের মতো দেশগুলো। ইউনিসেফের সাম্প্রতিক একটি প্রতিবেদন প্রকাশ্যে এনেছে উপমহাদেশ তথা এশিয়ার বেশ কিছু দেশে শিশুদের করুণ অবস্থার কথা। বাল্যবিবাহ থেকে শুরু করে শিশুশ্রম ও শিশু পাচারের মতো নানা সামাজিক অত্যাচারের কথা বলা হয়েছে ওই প্রতিবেদনে।
বাল্যবিবাহের ক্ষেত্রে এগিয়ে আছে ভারত। সারা বিশ্বে যত বাল্যবিবাহের ঘটনা ঘটে, এর এক-তৃতীয়াংশ ঘটে ভারতে। ১৮ বছর হওয়ার আগেই ২০০৭ সালে সারা বিশ্বে বিয়ে হয়ে গিয়েছিল প্রায় আড়াই কোটি মেয়ের। ভারত, পাকিস্তান ও নেপালে ১০ বছর বয়স হতে না হতেই বিয়ের কথা পাকা হয়ে যায় ছোট ছেলেমেয়েদের—এ রকম বহু তথ্যই উঠে এসেছে ইউনিসেফের এই প্রতিবেদনে।
উপমহাদেশের বিভিন্ন দেশে বাল্যবিবাহের যে প্রবণতা দেখা গেছে, সে বিষয়ে ইউনিসেফের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টরের বক্তব্য, সমাজের কনিষ্ঠতম সদস্যদেরই যদি বাল্যবিবাহের দিকে ঠেলে দেওয়া হয়, তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়, তাহলে কোনো সমাজের উন্নতি হতে পারে না।
সাক্ষরতার হার বাড়লেও পরম্পরা ও ধর্ম মেনে বাল্যবিবাহের মতো কুপ্রথা এখনো পুরোদমে চলছে ভারত ও পাকিস্তানে। অপ্রাপ্তবয়স্ক ছেলেমেয়েদের বিয়ের কারণে শিশুরা যে সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে, তাও তুলে ধরা হয়েছে এই প্রতিবেদনে। বাড়িতে ও বাইরে তারা যে শারীরিক ও মানসিক হেনস্তার শিকার হচ্ছে, সে কারণে নানাভাবে শিশুদের বিকাশে ঘাটতি থেকে যাচ্ছে।
শুধু বাল্যবিবাহেই থেমে নেই এশিয়ার এই দেশগুলো। এসব দেশে কোনো রকম নিরাপত্তা ছাড়াই বেড়ে উঠছে শিশুরা। আর এর মধ্যেই তাদের শিশুশ্রম থেকে শুরু করে শিশু পাচারকারীদের ফাঁদেও পা দিতে হচ্ছে।
ইউনিসেফের এই প্রতিবেদনে একটি বিষয় স্পষ্ট, শিশুরা যে অত্যাচারের শিকার হচ্ছে, এর হাত থেকে তাদের বাঁচানোর পথ এখনো তৈরি হয়নি।

No comments

Powered by Blogger.