আশুলিয়ায় উৎপাদনে ফিরেছে তৈরি পোশাক শ্রমিকরা
সরজমিন খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শিল্পাঞ্চলে কোথাও কোনো শ্রমিক বিক্ষোভ নেই ও শ্রমিকরা রাস্তায় নামেননি। কারখানাগুলোর নিরাপত্তায় সেনাবাহিনী, বিজিবি, র্যাব ও শিল্প পুলিশ সদস্যরা মোতায়েন রয়েছে বলেও জানান তিনি। শুক্রবার বিকালে আশুলিয়ার জামগড়া এলাকায় বিনোদন পার্ক ফ্যান্টাসি কিংডম মাঠে আয়োজিত এক শ্রমিক সমাবেশে কারখানায় কাজে যোগ দেয়ার আহ্বান জানান বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি খন্দকার রফিকুল ইসলাম। জানা গেছে, বিভিন্ন দাবিতে টানা কয়েক দিন ধরেই শ্রমিকরা আন্দোলন করছে। কিন্তু মালিকপক্ষ দাবি মেনে না নিয়ে শ্রমিকদের সঙ্গে কোনো আলোচনায় বসেনি। যেসব কারখানাগুলোতে শ্রমিক এবং মালিকপক্ষ বসে আলোচনা হয়েছে, সেই কারখানাগুলোতে কাজ শুরু হয়েছে। কিন্তু কিছু কারখানায় শ্রমিকরা কাজে যোগ দিতে এসে বন্ধ দেখে ফিরে যায়। এ ছাড়া সকালে শ্রমিকরা কাজে যোগ দেয়ার পরেও কিছু কারখানায় উত্তপ্ত পরিস্থিতি তৈরি হলে ছুটি ঘোষণা করেন কারখানা কর্তৃপক্ষ। বাংলাদেশ গার্মেন্টস ও সোয়েটার্স শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের আইন বিষয়ক সম্পাদক খায়রুল মামুন মিন্টু বলেন, শনিবার সকালে বেশির ভাগ পোশাক কারখানায় কাজ শুরু করেছে শ্রমিকরা। তবে কয়েকটি কারখানায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে মালিকপক্ষ।
গত বৃহস্পতিবার শ্রমিক অসন্তোষের জেরে শিল্পাঞ্চল আশুলিয়ায় ১৩(১) ধারা মোতাবেক ৮৬টি কারখানা বন্ধ ছিল। এ ছাড়া ১৩৩টি কারখানা কর্তৃপক্ষ সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছিল। এসব কারখানার বেশির ভাগই খুলে দিয়েছে। এদিকে শ্রমিকদের বিরুদ্ধে কারখানা ভাঙচুর ও কারখানা কর্মকর্তাদের মারধরের অভিযোগ এনে ২০ শ্রমিককের নামে মামলার প্রতিবাদে জামগড়া এলাকায় মদিনাপেল ফ্যাশন ক্রাফট লিমিটেডের শ্রমিকরা কারখানার সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে। আয়োজিত মানববন্ধন থেকে শ্রমিকরা হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহার ও বন্ধ কারখানা খুলে দেয়ার দাবি জানিয়েছে। আশুলিয়া শিল্প পুলিশ-১ এর পুলিশ সুপার সারোয়ার আলম বলেন, শিল্পাঞ্চল আশুলিয়ায় মোট কারখানা রয়েছে ১ হাজার ৮৬৩টি। এরমধ্য অধিকাংশই পোশাক কারখানা। গত কয়েকদিনের চেয়ে শিল্পাঞ্চলের পরিস্থিতি অনেকটাই স্বাভাবিক। তবে দাবি-দাওয়া নিয়ে সুরাহা না হওয়ায় এখন পর্যন্ত ১৩ (১) মোতাবেক ৩৯টি কারখানা বন্ধ রয়েছে। এ ছাড়া ১৩টি কারখানায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। এসব কারখানার মধ্যে অধিকাংশই পোশাক কারখানা। দুই একটি রয়েছে ওষুধ ও জুতা তৈরির কারখানা। তিনি আরও বলেন, শনিবার শিল্পাঞ্চলের কোথাও কোনো কারখানায় অস্থিরতা দেখা যায়নি। এমনকি সড়ক অবরোধসহ কারখানায় হামলা বা ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটেনি। শিল্পাঞ্চলে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এ ছাড়া শিল্পাঞ্চলে যৌথবাহিনীর টহলও অব্যাহত রয়েছে।
No comments