মত প্রকাশের স্বাধীনতা: আফ্রিকা পারে, আমরা নই by কামাল আহমেদ

মত প্রকাশের স্বাধীনতা বিষয়ে গত ৫ ডিসেম্বর আফ্রিকায় এক যুগান্তকারী রায় এসেছে। রায়টি দিয়েছেন আফ্রিকান কোর্ট অন হিউম্যান অ্যান্ড পিপলস রাইটস। অনেকটা ইউরোপীয় মানবাধিকার আদালত, ইউরোপিয়ান কোর্ট অব হিউম্যান রাইটসের (ইসিএইচআর) আদলে গঠিত আফ্রিকার এই আঞ্চলিক আদালত কাজ শুরু করেন ২০০৪ সালের ২৫ জানুয়ারি।
বুর্কিনা ফাসোর পত্রিকা লা ওরাগান–এর (বাংলায় যার অর্থ দাঁড়ায় প্রলয়) সম্পাদক লোহে ইসা কোনাটের আনা মামলায় আফ্রিকান কোর্ট অন হিউম্যান অ্যান্ড পিপলস রাইটস রায় দিয়েছেন যে একজন ম্যাজিস্ট্রেট ও সরকারি কৌঁসুলির অবমাননার দায়ে তাঁকে যে কারাদণ্ড ও জরিমানা করা হয়েছে, তা তাঁর মত প্রকাশের স্বাধীনতার লঙ্ঘন। ২০১২ সালের নভেম্বরে মি. কোনাটেকে এক বছরের কারাদণ্ড এবং প্রায় সাড়ে ১২ হাজার ডলার জরিমানা করা হয়। কারাদণ্ডের পরিণতিতে তাঁর পত্রিকার প্রকাশনাও বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু এখন তাঁকে তাঁর বন্দীকালীন সময়ের জন্য ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশের পাশাপাশি বুর্কিনা ফাসোকে তাঁর ফৌজদারি আইনে মানহানির বিধান সংশোধনেরও আদেশ দিয়েছেন আফ্রিকান কোর্ট অন হিউম্যান অ্যান্ড পিপলস রাইটস। মত প্রকাশের স্বাধীনতা এবং সাংবাদিকদের সুরক্ষাবিষয়ক সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানগুলো এই রায়কে যুগান্তকারী অভিহিত করে বলেছে যে এর ফলে আফ্রিকায় আরও কার্যকর, শক্তিশালী ও স্বাধীন সংবাদমাধ্যম গড়ে তোলার সুযোগ তৈরি হলো (সূত্র: কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্টস, সিপিজের ৫ ডিসেম্বর ২০১৪-তে প্রকাশিত বিবৃতি এবং ওপেন সোসাইটি ফাউন্ডেশনসের ১১ ডিসেম্বর প্রকাশিত বুলেটিন)। নানা ধরনের রাজনৈতিক অস্থিরতা, গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ও সংঘাতপীড়িত আফ্রিকা মহাদেশের সব দেশই যে এই আদালত প্রতিষ্ঠার সনদে অংশ নিয়েছে তা নয়, তবে ২৭ সদস্যের আফ্রিকান ইউনিয়নের ১৫টি দেশই এর এখতিয়ার মেনে নিয়েছে। ইউরোপ ও আফ্রিকায় মানবাধিকার ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা সুরক্ষায় বহুজাতিক আদালত বা বিচারিক ব্যবস্থার দিকনির্দেশনায় যে অগ্রগতি হচ্ছে, দুর্ভাগ্যজনকভাবে সার্ক বা আসিয়ানের দেশগুলো সে রকম কোনো পরীক্ষা-নিরীক্ষায় আজও আগ্রহী হয়নি।
মত প্রকাশের স্বাধীনতা ও অবমাননা বা মানহানির অপরাধ—এ দুইয়ের সীমারেখা খুবই সূক্ষ্ম ও স্পর্শকাতর, যে কারণে এ বিষয়ে বিতর্কের শেষ নেই। তবে কর্তৃত্ববাদী ও স্বৈরাচারী শাসকেরা এবং তাঁদের পরিষদ সব সময়ই তাঁদের দুর্বলতা, দুর্নীতি, অপকর্ম, অনৈতিক বা আইনবহির্ভূত কর্মকাণ্ড লোকচক্ষুর আড়ালে রাখার জন্য সংবাদমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণ ও ভীতি প্রদর্শনের উপায় হিসেবে মানহানির আইনকে ব্যবহার করে এসেছেন। গণতন্ত্রায়ণের এই যুগে সেই একই ধারা যে চলতে পারে না, সেই উপলব্ধি বিশ্বের নানা প্রান্তে যখন দৃশ্যমান হচ্ছে, তখন প্রশ্ন উঠতেই পারে যে বাংলাদেশে আমরা কোন পথে হাঁটছি। গত এক বছরে সংবাদপত্রের সম্পাদকদের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা হয়েছে কতগুলো, তার কোনো সঠিক হিসাব কারও কাছে আছে কি না সন্দেহ। তবে পত্রিকাবিশেষের ক্ষেত্রে এই সংখ্যা উদ্বেগজনক পর্যায়ে পৌঁছেছে। সম্প্রতি এর সঙ্গে যোগ হয়েছে আদালতের স্পর্শকাতর আচরণ।
ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনামলে চালু হওয়া আচারবিধি—আদালত অবমাননার আইন যে অনেকাংশেই গণতন্ত্রের ধারণার সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয়, তা এখন বিভিন্ন দেশে মেনে নেওয়া হয়েছে। ওই একই কারণে আইনটিকে গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করতে ব্রিটিশরা অন্তত তিনবার সংস্কারের পর তার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ—আদালতকে কলঙ্কিত করার অপরাধ–সম্পর্কিত বিধান একেবারে বিলোপ করার কথাই বিবেচনা করছে। বস্তুত, গণতান্ত্রিক বিশ্বের অধিকাংশ রাষ্ট্রেই এ আইনের সংস্কার এত দূর পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছে যে তা প্রায় অচল আইনে পরিণত হয়েছে। তার জায়গায় প্রাধান্য পেয়েছে মত প্রকাশের স্বাধীনতা।
এসব সংস্কারের ফলে আদালত অবমাননার আইনে মূলত সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য দেওয়া হয় বিচারকে প্রভাবিত করার চেষ্টা প্রতিকারে। বিপরীতে, মত প্রকাশের স্বাধীনতার উদারনৈতিক ব্যাখ্যায় কোনো রায়ের সমালোচনা কিংবা আদালত বা বিচারকের ত্রুটি চিহ্নিত করা, বিশেষ করে তা যদি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত না হয়ে ন্যায়বিচার ও জনস্বার্থে হয়ে থাকে, তাহলে তা গ্রহণযোগ্য গণতান্ত্রিক আচরণ হিসেবেই বিবেচিত হয়। ব্রিটেনে এই আইনের জন্মের পেছনে যে একধরনের ঔপনিবেশিক মানসিকতা কাজ করেছিল, তার প্রমাণ মেলে ১৮৯৯ সালে ম্যাকলয়েড বনাম সেন্ট অবিন মামলার রায়ে। ওই মামলায় প্রিভি কাউন্সিল যুক্তি দেয় যে আদালতকে কলঙ্কিত করার চেষ্টা ইংল্যান্ডে অচল হয়ে পড়লেও অশ্বেতাঙ্গ উপনিবেশগুলোতে ইংলিশ আদালতের মর্যাদা বজায় রাখার জন্য এই আইনি ব্যবস্থাটি প্রয়োজন (সূত্র: কনটেম্পট অব কোর্ট: স্ক্যান্ডালাইজিং দ্য কোর্ট, প্রকাশক, স্টেশনারি অফিস, গ্রেট ব্রিটেন)। এ ধরনের আরও কয়েকটি মামলায় আদালতকে কলঙ্কিত করার চেষ্টা অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হয়েছে, যে কারণে তার মূল বিচারিক বিবেচনা ছিল উপনিবেশগুলোর জনগোষ্ঠীর অধিকাংশই হচ্ছে ‘অশ্বেতাঙ্গ’ বা ‘অশিক্ষিত’ অথবা ‘ছোটলোক’ (সূত্র: মত প্রকাশের স্বাধীনতাবিষয়ক আন্তর্জাতিক সংগঠন, আর্টিকেল নাইন্টিনের প্রকাশনা, ২০০০ সাল)।
আদালতকে কলঙ্কিত করার দায় সম্পর্কে চমকপ্রদ সিদ্ধান্ত পাওয়া যায় অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলস রাজ্যের অ্যাটর্নি জেনারেল বনাম মুন্ডে মামলায়। এতে বিচারপতি হোপ বলেন, ‘পার্লামেন্টসহ সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর কাজে যেভাবে সমালোচনা করা হয়, আদালতের কাজগুলোর সে রকম কঠোর সমালোচনা করতে না পারার কারণ নেই। সত্য হচ্ছে, একটি মুক্ত সমাজে জনপ্রতিষ্ঠানগুলোর অবশ্যই নিজেদের গুণের ওপর প্রতিষ্ঠিত হওয়া উচিত। তারা যদি নিজেদের জনগোষ্ঠীর আস্থা ও সম্মান অর্জন করতে না পারে, তাহলে তাদের জোর করে সমৃদ্ধ করা যায় না। তাদের আচরণ যদি সমাজের আস্থা ও সম্মান অর্জনে সক্ষম হয়, তাহলে সমালোচনা থেকে নিজেদের রক্ষা করার জন্য তাদের বিশেষ কোনো আইনের প্রয়োজন নেই (সূত্র: মত প্রকাশের স্বাধীনতাবিষয়ক আন্তর্জাতিক সংগঠন, আর্টিকেল নাইন্টিনের প্রকাশনা, ২০০০ সাল)।
‘আর সে কারণেই ব্রিটেন, অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডে আদালত অবমাননা আইনে বিচারব্যবস্থার প্রতি জনগণের আস্থা ক্ষুণ্ন করার ঝুঁকি আসলেই আছে কি না, তা নির্ধারণের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। সেখানে ঝুঁকিটি ‘প্রচ্ছন্ন’ হলে তা বিবেচ্য হয় না। আর যুক্তরাষ্ট্রে আদালতকে কলঙ্কিত করার দায় আরও সংকীর্ণ হয়েছে বহু দশক আগে থেকেই। সেখানকার সুপ্রিম কোর্ট এটা স্পষ্ট করে দিয়েছেন, যেকোনো প্রকাশনার কারণে আদালত অবমাননা হবে তখনই, যখন তা বিচার পরিচালনায় স্পষ্ট ও জীবন্ত ঝুঁকি তৈরি করবে। ইউরোপীয় মানবাধিকার আদালত, ইউরোপিয়ান কোর্ট অব হিউম্যান রাইটস (ইসিএইচআর) এ বিষয়ে আইনগত বিধিনিষেধ এবং আদালতের কর্তৃত্ব বজায় রাখার প্রয়োজন ছাড়া অন্যান্য ক্ষেত্রে গণতান্ত্রিক সমাজে আদালত অবমাননা আইনের প্রয়োজনীয়তার বিষয়েই ভিন্ন মত পোষণ করেছেন।
গণতান্ত্রিক দেশগুলোতে আদালত অবমাননার দায়ে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার যেসব নজির আছে, সেগুলোর অধিকাংশই হলো বিচারকাজকে বাধাগ্রস্ত বা বিচারকে প্রভাবিত করার চেষ্টার জন্য। যে কারণে বিচারাধীন বিষয়ে খবর পরিবেশন এবং আদালতে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার আগ পর্যন্ত অভিযুক্ত ব্যক্তির নির্দোষ হিসেবে বিবেচিত হওয়ার অধিকারের প্রতি শ্রদ্ধা দেখানোর বিষয়গুলোতে সাংবাদিকদের বিশেষ প্রশিক্ষণের প্রয়োজন হয়। আমাদের দেশে বিচারাধীন বা সাব-জুডিস বিষয়ে সংবাদ প্রচার ও প্রকাশের ক্ষেত্রে ন্যূনতম কিছু নিয়ম অনুসরণ বা নীতিমালা মেনে চলার চল খুব একটা নেই। তবে তার জন্য কাউকে যে জবাবদিহি করতে হয়েছে তা–ও নয়। গণমাধ্যমে বিচার বা মিডিয়া ট্রায়াল বাংলাদেশে অনেকটা স্বাভাবিক বিষয়ে পরিণত হয়েছে। অন্যদিকে নিষ্পত্তি হওয়া মামলার রায়ের সমালোচনার ক্ষেত্রে আমাদের সংশয়ের শেষ নেই। রায়ের সমালোচনাকে অনেক সময়ই আদালত অবমাননা বলে ধরে নেওয়া হয়। কিন্তু বাস্তবে রায়ের সমালোচনার অর্থ রায় অমান্য করা নয়।
আদালত অবমাননার ব্যাখ্যা অনেক বিস্তৃত ও বিচিত্র হতে পারে। এটি যেমন ঘটতে পারে আদালতের মধ্যে কোনো ঘটনায়, তেমনি আদালতের বাইরে নানা মন্তব্য, বিবৃতি বা প্রকাশনার মাধ্যমে। আদালত অবমাননা ঘটতে পারে যেমন একটি রাষ্ট্রের নিজস্ব সীমানার মধ্যে প্রকাশিত কোনো প্রকাশনায়, তেমনি বহির্দেশের কোনো প্রকাশনায়—বিশেষ করে ইন্টারনেটনির্ভর প্রকাশনা, সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোয়—যেটি আদালতের এখতিয়ারভুক্ত এলাকায় নয়। ডিজিটাল বিপ্লবের পরিণতিতে বিভিন্ন প্রকাশনা এখন রাষ্ট্রের সীমানা ভেদ করতে সক্ষম হওয়ায় আইন সংস্কার এখন প্রায় প্রত্যেক দেশেই জরুরি হয়ে পড়েছে। ব্রিটেনে আদালতকক্ষে সাংবাদিকেরা টুইটার ব্যবহারের সুবিধা পাচ্ছেন। এ ছাড়া আদালত অবমাননা আইনের নতুন সংস্কারের উদ্যোগ-আয়োজন চলছে। এ লক্ষ্যে ব্রিটেনের আইন কমিশন ২০১২-এর নভেম্বর থেকে ২০১৩-এর ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এ বিষয়ে গণশুনানি করেছে। তবে এই উদ্যোগের আগেই লর্ডসভার সদস্য লর্ড প্যাননিক আদালতকে কলঙ্কিত করার দায় বিলোপের প্রস্তাব করেছেন। সাবেক ব্রিটিশ মন্ত্রী পিটার হেইনের আত্মজীবনীতে একজন বিচারক সম্পর্কে কটু মন্তব্য থাকার কারণে যে অভিযোগ দায়ের হয়েছিল, সেই মামলাও আর বিচার পর্যন্ত গড়ায়নি। কার্যত ১৭৬৫ সালে সূচিত এই আইনে ১৯৩১ সালের পর আর কখনো কাউকে বিচার করা সম্ভব হয়নি। আদালতের সমালোচনা নিষিদ্ধ থাকা মত প্রকাশের স্বাধীনতার সঙ্গে সাংঘর্ষিক—এই যুক্তিতে এখন এই আইনের অংশবিশেষ বাতিলের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে (স্ক্যান্ডালাইজিং এ জাজ মে নো লংগার বি অ্যান অফেন্স, দ্য গার্ডিয়ান, অাগস্ট ১০, ২০১২)।
বাংলাদেশের নতুন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা দায়িত্ব গ্রহণের পর আইনজীবী সমিতির সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বলেছেন যে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক আমলের আইনগুলোকে গণতন্ত্রের উপযোগী করে তুলতে হবে (চিফ জাস্টিস: মেক ব্রিটিশ—এরা লজ ফিট ফর ডেমোক্রেসি, ঢাকা ট্রিবিউন, ১৯ জানুয়ারি, ২০১৫)। পত্রিকাটিতে প্রকাশিত বিবরণ অনুযায়ী তিনি দেশের দেওয়ানি, ফৌজদারি, সাক্ষ্য, সাজাবিষয়ক আইনসহ অন্য অনেক আইন ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক আমলে তৈরি উল্লেখ করে বলেছেন যে এগুলোতে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের কোনো প্রতিফলন নেই।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও সম্প্রতি ভিন্ন এক প্রসঙ্গে বলেছেন যে ‘ব্রিটিশদের গোলামি করেছি আমরা। তাদের হেরিটেজ রক্ষা করার কোনো প্রয়োজন আমাদের আছে বলে অন্তত আমি মনে করি না (ঐতিহ্য রক্ষার নামে অপ্রয়োজনীয় দালান নয়: বাংলাদেশ প্রতিদিন ২৯ ডিসেম্বর, ২০১৪)।’ আবাসন–সংকট সমাধানের অংশ হিসেবে ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক স্থাপনাগুলো সংরক্ষণের পাশাপাশি ঔপনিবেশিক আমলের কিছু কিছু স্থাপনা ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেওয়ার সময় তিনি এ কথা বলেন। মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী এবং রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোতে আসীন আমলাদের আবাসন চাহিদার প্রয়োজনে মিন্টো রোড বা হেয়ার রোডের লাল দালানগুলো শেষ পর্যন্ত ভাঙা পড়বে কি না জানি না। তবে ঔপনিবেশিক শাসনামলের ধ্বংসাবশেষ বা অবশিষ্টাংশকে জঞ্জাল গণ্য করে সেই কথিত কালিমা মুছে ফেলার আকাঙ্ক্ষায় প্রধানমন্ত্রী যদি আন্তরিক হয়ে থাকেন, তাহলে তাঁর উচিত হবে শত বছরের স্থাপত্যগুলো ভেঙে ফেলার আগে সেকেলে শাসনরীতির আচারবিধিগুলো বদলে ফেলা। বিশেষ করে ২০১৩ সালে তাঁর সরকারের তৈরি করা আদালত অবমাননার যে আইন সুপ্রিম কোর্টে সংবিধানসম্মত নয় বলে বাতিল ঘোষিত হয়েছে সেই আইনকে এমনভাবে সংস্কার করা, যাতে মত প্রকাশের স্বাধীনতা কোনোভাবেই খর্ব না হয়।
কামাল আহমেদ: সাংবাদিক।

No comments

Powered by Blogger.