পুরো দলই ম্যাচসেরা

বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের ফাইনালে ওঠার কৃতিত্ব মামুনুলদের। তাই ম্যাচ পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে হাসিমুখে প্রিয় শিষ্য অধিনায়ক মামুনুল ও সেরা খেলোয়াড় জাহিদ হোসেনকে নিয়েই আসলেন ডাচ কোচ ডি ক্রুইফ। দেখেই উপস্থিত মিডিয়া কর্মীরা তাদের স্বাগত জানালেন। শিষ্যদের কৃতিত্ব দিতে কার্পণ্য করলেন না গুরু ডি ক্রুইফও। তার কথায়, ‘৯০ মিনিট দারুণ ফুটবল খেলেছে ছেলেরা। তারা আমাকে শতভাগই দিয়েছে।
এই ফলাফলে আমি ভীষণ খুশি। একটা চাপ তো ছিলই। যা থেকে আমরা মুক্ত। এখন আমরা ফাইনালে। ডিফেন্ডার রায়হান, মিডফিল্ডার মামুনুল, ফরোয়ার্ড জাহিদ- ম্যাচে যে যার দায়িত্বটা ঠিকভাবে পালন করেছে। যে কারণে ফল আমাদের পক্ষে এসেছে।’ তিনি যোগ করেন, ‘ম্যাচ সেরা শুধু জাহিদই নয়। পুরো দল এর ভাগিদার। সবাই দেশের জন্য খেলেছে। অনেকদিন পর সবাইকে হাসিখুশি দেখেছি। শেষ ১৫-২০ মিনিট ডিফেন্সিভ খেলে লং শটে আক্রমণ করতে বলেছি। ওরা তাই করেছে। তাছাড়া আমরা নির্ভার ছিলাম। থাইল্যান্ড বেশ ভালো ও সুসংগঠিত দল। মাঝমাঠে পাঁচজন বনাম পাঁচজন খেলা হয়েছে। কাউকে ছাড়া হয়নি। তবে ফাইনালে চাপটা বেড়ে গেল। পেশাদার ফুটবলে এমনই হয়। কখন যে টেনশন, কখন যে নির্ভার তা বোঝা মুশকিল। তবে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। ফাইনালের আগে আমরা মাত্র একদিন সময় পাচ্ছি। আর মালয়েশিয়া দু’দিন। আগামীকাল (আজ) সুইমিং, জিম প্র্যাকটিস করে সবাইকে সতেজ করতে হবে। অধিনায়ক মামুনুল ইসলাম বলেন, ‘সবার আগে দেশের ১৭ কোটি মানুষকে ধন্যবাদ আমাদের সমর্থন দেয়ার জন্য। বাফুফে সভাপতিকে ধন্যবাদ যে আমাদের ওপর তার বিশ্বাস রয়েছে। তার ছোট ছোট টিপসগুলো আজকের ম্যাচে আমাদের কাজে লেগেছে।’ তিনি যোগ করেন, ‘আমরা আগেই ঠিক করেছিলাম থাইল্যান্ডকে কোনো সুযোগ দেব না।
সেভাবেই খেলেছি। দলের সবাইকে ধন্যবাদ। যে যার জায়গা থেকে ভালো খেলেছে। অন্য সময় যেটা হয় আমরা একজনের দিকে তাকিয়ে থাকি। মনে করি, যে স্ট্রাইকার সেই গোল করবে। কিন্তু আজ সেটি হয়নি। ডিফেন্ডার হয়েও গোল করেছেন নাসির।’ অধিনায়ক আরও বলেন, ‘এই ম্যাচে আমরা অনেক বেশি সতর্ক ছিলাম। প্রথম ম্যাচের ভুলগুলো আমরা দ্বিতীয় ম্যাচে করিনি। সেমিফাইনালে ভুলগুলো আরও কমে এসেছে। ফাইনালে আরও বেশি সতর্ক থাকতে হবে আমাদের। দিনে দিনে আমরা উন্নতি করছি। এটাই আমাদের সেরা খেলা নয়। সামনে রয়েছে ফাইনাল। আমি এখনও নিজের পারফরম্যান্সে সন্তুষ্ট হতে পারছি না। ফাইনালে চ্যাম্পিয়ন হতে পারলে সেটাই আমার সেরা পারফরম্যান্স হবে।’ ম্যাচ সেরা জাহিদ বলেন, ‘মনে কোনো কষ্ট নেই। দেশের জন্য খেলেছি। ফাইনালে চ্যাম্পিয়ন হলেই বলব সেরা পারফরম্যান্স করেছি। রেফারি তাদের ফেভার করেছে। আমি পাগলামি করিনি। তাহলে আমাকে কার্ড দেখিয়ে বের করে দিত।
তাই ধৈর্য ধরেছি। শেষদিকে আমাকে উঠিয়ে নেয়ায় একটু খারাপ লেগেছে, তবে বিরক্ত হইনি।’ হেরে যাওয়ায় গোমরা মুখ করে সংবাদ সম্মেলনে আসেন থাই যুব দলের কোচ চোকতাভি ফোমরাত। তার কথায়, ‘প্রথমভাগে দু’দল রোমঞ্চকর ফুটবল খেলেছে। তবে বাংলাদেশই এগিয়েছিল। নাসির সে স্লাইডিং করেছে তা সত্যিই দর্শনীয়। আমাদের ডিফেন্ডাররা কড়া পাহারায় রাখলেও সে ছিল অনেক গতিময়। যে কারণে তাকে কভার করা সম্ভব হয়নি। আমরা যথেষ্ট অভিজ্ঞতা নিয়ে গেলাম। মূলত আমার দলটি ছিল অলিম্পিকভিত্তিক। অলিম্পিকের জন্য এই ম্যাচগুলো কাজে লাগবে। হেরে গেলেও অলিম্পিকে এর কোনো প্রভাব পড়বে না। খেলোয়াড়দের পারফরম্যান্সে আমি খুশি। বাংলাদেশের এই আয়োজনে আমরা অনেক খুশি। বাংলাদেশকে শুভেচ্ছা। তারা দেশবাসীকে একটি সুন্দর ম্যাচ উপহার দিয়েছে। তারা আগের চেয়ে বেশ ভালো খেলেছে। আসলে পুরো স্টেডিয়াম ছিল তাদের পক্ষে। দর্শকদের জন্য ম্যাচে আমাদের মনযোগ দিতে একটু সমস্যা হয়েছে। দর্শকদের চিৎকার আমাদের জন্য বড় একটা চাপ ছিল।’

No comments

Powered by Blogger.