ফেসবুকের কল্যাণে...

ফেসবুকের কল্যাণে দুরবস্থা থেকে উদ্ধার হলেন এক গৃহকর্মী। ফিলিপাইনের নাগরিক ওই গৃহকর্মী সৌদি আরবে কর্মরত ছিলেন। কিন্তু তাকে যে পরিবেশে রাখা হতো তা তিনি ভিডিওতে ধারণ করে পোস্ট করেছেন ফেসবুকে। এর সুবাদে তাকে উদ্ধার করা হয। এ খবর দিয়েছে বিবিসি। নারগেলিন মেন্ডেজ নামের ফিলিপাইনি ওই গৃহকর্মী ফেসবুকে ভিডিওটি পোস্ট করেন। সেখানে দেখানো হয় তার ঘুমানোর জন্য জীর্ণ একটি স্থান। কিভাবে নির্যাতন করে তার সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা মালিক, সেটিরও একটি বর্ণনা ভিডিওতে দিয়েছেন তিনি। এতে তিনি বলেন, তারা আমার এক সহকর্মীকে মেরেছে। তারা আমাকেও মেরেছে। দয়া করে আমাদের সাহায্য করুন। আমি আপনাদের কাছে সাহায্য ভিক্ষা চাইছি। এ ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয়। কেবল ফিলিপাইনে নয়, মধ্যপ্রাচ্যে যেসব দেশের শ্রমিকরা কাজ করেন, সেসব দেশেও এই ভিডিও খুব বেশি ছড়িয়ে পড়ে। একই সঙ্গে স্পেন, যুক্তরাষ্ট্র ও উপসাগরীয় দেশগুলোতেও ছড়িয়ে পড়ে ভিডিওটি। প্রায় ৫ লাখ বার দেখা হয়েছে তা। এই ভিডিওটি প্রকাশের পর ফিলিপাইনের একটি অভিবাসী শ্রমিক অধিকার সংগঠন সৌদি আরবের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে। জেদ্দায় অবস্থিত ফিলিপাইনের দূতাবাস জানিয়েছে, ওই গৃহকর্মীকে কর্তৃপক্ষ তার মালিকের কাছ থেকে উদ্ধার করেছে। এখন দূতাবাস ভবনেই তিনি আছেন। এক্সিট ভিসা পেলেই তিনি চলে যাবেন দেশে। প্রসঙ্গত, সৌদি আরবসহ অন্যান্য উপসাগরীয় দেশে কাফালা নামের এক ধরণের বিতর্কিত শ্রমিক নীতিমালা রয়েছে। এর মাধ্যমে চাকরিদাতারা অভিবাসী কর্মীদের উপর ব্যাপক নিয়ন্ত্রণ আরোপ করতে পারেন। এমনকি কর্মীদের পাসপোর্ট ও ভিসা নিয়ন্ত্রণ করেন চাকরিদাতা। ফলে কর্মীদের নির্যাতন করতে এসবকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেন তারা। এ সপ্তাহে অনুষ্ঠিত গালফ কো-অপারেশন কাউন্সিল গৃহকর্মীদের ব্যাপারে নতুন নিয়মের কথা ঘোষণা করেছে। এর মধ্যে রয়েছে দৈনিক ৮ ঘণ্টা কাজ, বার্ষিক ছুটি, ওভারটাইমের জন্য ক্ষতিপূরণ ও সপ্তাহে কমপক্ষে একদিনের ছুটি। এই নিয়ম অনুসারে মালিকের আওতামুক্তভাবে বসবাস ও নিজের পাসপোর্ট নিজের কাছে রাখার অধিকার দেয়া হয়েছে গৃহকর্মীদের। তবে এ নীতি যতদিন পর্যন্ত বাস্তবায়ন না হচ্ছে, ততদিন সবকিছু মালিকরা নিয়ন্ত্রণ করবে। গৃহকর্মীদের এতটাই নিয়ন্ত্রণ করা হয় যে, প্রায়ই নিজেদের দুরবস্থা নিয়ে কিছু বলারও সাহস পায় না তারা।

No comments

Powered by Blogger.