দেশের সকল ক্ষেত্রে আজ অনিশ্চয়তার অন্ধকার -প্রাক্তন ছাত্রলীগ ফাউন্ডেশনের আলোচনা সভায় নেতারা

দেশে বর্তমানে প্রতিহিংসা ও অপরাজনীতি চলছে। আজকে যে রাজনীতি বহমান সেখানে গণতান্ত্রিক চর্চা নেই, সহনশীলতা নেই, নেই শ্রদ্ধাবোধ। কটাক্ষ ও কু-রাজনীতির কারণে রাজনীতিসহ সকল ক্ষেত্রে মূল্যবোধের অবক্ষয় ঘটেছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রাক্তন ছাত্রলীগ ফাউন্ডেশনের আলোচনা সভায় অংশ নেয়া ছাত্রলীগের সাবেক নেতারা। তারা বলেছেন, শুধু রাজনীতিতে নয়, সমাজের সকল ক্ষেত্রে আজ অনিশ্চয়তার অন্ধকার বিরাজ করছে। গণতন্ত্রের মানসপুত্র হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর ৫২তম জন্মদিন উপলক্ষে জাতীয় প্রেস ক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে গতকাল আলোচনা সভার আয়োজন করে প্রাক্তন ছাত্রলীগ ফাউন্ডেশন। সংগঠনের আহ্বায়ক নূরে আলম সিদ্দিকীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় ছাত্রলীগের সাবেক শীর্ষস্থানীয় নেতারা বক্তব্য দেন। নূরে আলম সিদ্দিকী বলেন, আজকে প্রতিহিংসা ও অপরাজনীতি চলছে। যে রাজনীতি আছে সেখানে কি সহনশীলতা আছে? গণতন্ত্রের চর্চা আছে? রাজনীতিসহ সমাজের সব ক্ষেত্রে কালবৈশাখীর অনিশ্চয়তার অন্ধকার বিরাজ করছে। এ থেকে পরিত্রাণ পেতে হলে সোহরাওয়ার্দী ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শের  পথ ধরতে হবে। দুই নেত্রীর সমালোচনা করে তিনি বলেন, দুই নেত্রী কল্পনা করছেন, কেয়ামত পর্যন্ত হয় উনি নইলে তিনি ক্ষমতায় থাকবেন। তিনি বলেন, একজন বলেছেন ২০১৯ সালের নির্বাচনেও শেখ হাসিনা জিতে হ্যাটট্রিক করবেন। আমি বলি কপাল খুলতে দেরি লাগে কিন্তু পুড়তে বেশি সময় লাগে না। নূরে আলম সিদ্দিকী বলেন, আমি বঙ্গবন্ধুর আওয়ামী লীগের বিরোধিতা করি না। কিন্তু শেখ হাসিনার কমিউনিস্ট রাজনীতির বিরোধিতা করি। শেখ হাসিনার একমাত্র শত্রু দুর্নীতি। আপনি দুর্নীতিবাজদের শাস্তি প্রদান করুন। বর্তমান সংসদের সমালোচনা করে সাবেক এই ছাত্রলীগ নেতা বলেন, ৮০ ভাগ সংসদ সদস্য শাসনতন্ত্র পড়েননি, সংসদীয় কার্যপ্রণালী পড়েননি। তারা শুধু ব্যস্ত শেখ হাসিনার স্তূতিতে। ছাত্রলীগের সামপ্রতিক কর্মকা-ের বিষয়ে তিনি বলেন, ছাত্রলীগের কর্মকা-ের জন্য আমি তাদের দোষারোপ করি না। কারণ মাছের পচন শুরু হয় মাথা থেকে। ছাত্রলীগের জন্য আমার কষ্ট হয়। ওয়ান ইলেভেনের সময় বিএনপির শীর্ষস্থানীয় নেতাদের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলা প্রত্যাহার না হওয়ার বিষয়ে নূরে আলম সিদ্দিকী বলেন, খালেদা জিয়াকে ফাঁসি দিয়ে দেন আমার আপত্তি নেই। কিন্তু ওয়ান ইলেভেনের সময় আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে করা সব মামলা প্রত্যাহার করা হলো আর বিএনপির একটি মামলাও প্রত্যাহার করা হলো না- এটা গণতান্ত্রিক চর্চা নয়। আলোচনায় অংশ নিয়ে ডাকসুর সাবেক ভিপি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, আওয়ামী লীগ এমন একটা দল যারা তাদের ব্যক্তিগত গ-ির বাইরে কাউকে মূল্যায়ন করে না। যেমন সোহরাওয়ার্দীকেও করেনি। তিনি বলেন, গণতন্ত্রের মানসকন্যা এখন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ক্ষমতায় আছেন। কিন্তু বিগত ৫ই জানুয়ারি যে নির্বাচন হলো এটাকে কি নির্বাচন বলা চলে? প্রাক্তন ছাত্রলীগ ফাউন্ডেশনের নেতা পীর হাবিবুর রহমান বলেন, বর্তমানের বন্ধ্যত্ব  রাজনীতির কাছে জনগণের আকাঙক্ষা ও চাওয়ার কিছু নেই। এখনকার  রাজনীতিকরা যা বলেন তা তারা বিশ্বাস করেন না। আর যা বিশ্বাস করেন তা তারা বলেন না। তিনি বলেন, আজ একদলীয় শাসন ব্যবস্থা চলছে। যদি সংসদে বিরোধী দল থাকতো তাহলে এ সমস্যা হতো না। আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি নুরুল ফজল বুলবুল, সাবেক ছাত্র নেতা এম এ রশীদ, ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান, সাবেক মন্ত্রী আবুল হাসান চৌধুরী, আবুল কাশেম, চট্টগ্রামের সাবেক মেয়র মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী প্রমুখ।

No comments

Powered by Blogger.