ইসরাইলে নিষেধাজ্ঞা চায় সিরিয়া

ইসরাইলের বিরুদ্ধে বিশ্বের সব দেশকে নিষেধাজ্ঞা আরোপের আহ্বান জানিয়েছে সিরিয়া। ইসরাইলের বিমান হামলার প্রতিবাদ জানিয়ে জাতিসংঘে লেখা সিরিয়ার চিঠিতে এ আহ্বান জানান হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, দামেস্ক সরকারের বিরুদ্ধে লড়াইরত বিদেশী মদদপুষ্ট সন্ত্রাসীদের প্রতি ইসরাইলের সরাসরি সমর্থনের বিষয়টি এ বিমান হামলার মধ্য স্পষ্ট হয়ে গেছে। সিরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় রোববার এ চিঠি জাতিসংঘে পাঠিয়েছে। রাজধানী দামেস্কের প্রধান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং নিরাপদ কিছু এলাকায় ইসরাইল বোমা হামলা করেছে বলে এক বিবৃতিতে সিরীয় সেনাবাহিনী অভিযোগ করার পর এ প্রতিবাদপত্র পাঠান হয়।
এ জাতীয় আগ্রাসনের রোধে জাতিসংঘ সনদে বর্ণিত সব ব্যবস্থা গ্রহণেরও আহ্বান জানান হয়েছে এ চিঠিতে।
এদিকে ব্রিটেনভিত্তিক বিরোধী সূত্র থেকে বলা হয়েছে, সিরিয়ার দিমাস শহর থেকে অন্তত ১০টি বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। ইহুদিবাদী ইসরাইলের সেনাবাহিনী এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকার করেছে।
২০১১ সাল থেকে সিরিয়ার বর্তমান সংকটের শুরুর পর ইসরাইল দেশটির বিরুদ্ধে কয়েক দফা বিমান হামলা করেছে। এছাড়া দেশটিতে তৎপর বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোকে তেল আবিবের প্রশিক্ষণ ও অর্থের জোগান দেয়ার খবরও প্রকাশিত হয়েছে।
এদিকে রাজনৈতিকভাবে সিরিয়ার চলমান সংকট সমাধান করার আহ্বান জানিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি।
তিনি বলেছেন, ‘ইরান ও রাশিয়াসহ সব দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা একমত হবেন যে, সিরিয়া সংকটের কোনো সামরিক সমাধান নেই। রাজনৈতিক উপায়ে আলোচনার মাধ্যমেই কেবল সিরিয়ার গৃহযুদ্ধের অবসান হতে পারে।’
ওয়াশিংটনে মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক এক সম্মেলনে জন কেরি রোববার এসব কথা বলেছেন। তিনি আরও বলেন, মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন ইস্যুতে আমেরিকার গভীরভাবে জড়িত হওয়া উচিত কারণ তা না হলে আঞ্চলিক সমস্যাগুলো আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ছড়িয়ে পড়বে।
ইসরাইলের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপের চিন্তা করছে যুক্তরাষ্ট্র। প্রায় দু’মাস আগেই এমন একটি প্রস্তাব উঠেছিল কংগ্রেসে। কিন্তু তা এখনও বাস্তবায়ন না হওয়ায় শুক্রবার কংগ্রেসের ৪৫ সদস্যের একটি দল শুক্রবার ওবামাকে এ ব্যাপারে চিঠি লিখেছেন। পূর্ব বায়তুল মুকাদ্দাস বা জেরুজালেম ও অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে অবৈধ বসতি নির্মাণ অব্যাহত রাখার পরিপ্রেক্ষিতে ওয়াশিংটন এ পরিকল্পনা করছে বলে খবর দিয়েছে ইসরাইলের প্রভাবশালী পত্রিকা টাইমস অব ইসরাইল এবং দৈনিক হারেৎজ। পত্রিকা দুটির খবরে বলা হয়েছে- গত অক্টোবর মাসে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার বৈঠকের পর থেকে মার্কিন কর্মকর্তারা এ নিয়ে চিন্তা করছেন। ওই বৈঠকে বসতি নির্মাণ নিয়ে ওবামার সঙ্গে নেতানিয়াহুর ব্যাপক মতবিরোধ ও উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়।
ওবামা প্রশাসন অব্যাহতভাবে বলে আসছে, অধিকৃত ভূখণ্ডে বসতি নির্মাণের কারণে শান্তি প্রক্রিয়া নস্যাৎ হবে। তবে মার্কিন কর্মকর্তারা পত্রিকায় প্রকাশিত এ রিপোর্ট সম্পর্কে কোনো কথা বলতে রাজি হননি। শুক্রবার এক প্রেস ব্রিফিংয়ে হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি জোশ আর্নেস্টের কাছে প্রকাশিত খবর নিয়ে জানতে চাওয়া হয়। তিনি তখন বলেন, ‘আমি কোনো অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে কথা বলতে চাইছি না।’
তবে আর্নেস্ট বলেন, ইসরাইলের ওই বসতি নির্মাণ অবৈধ এবং এ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।
এদিকে সর্বশেষ যুক্তরাষ্ট্র ইসরাইল অধ্যাদেশ ২০১৪ তে দুই দেশের প্রতিরক্ষা, নিরাপত্তা, জ্বালানি, গবেষণা, উন্নয়ন, বাণিজ্য, পানি ব্যবস্থাপনা ও শিক্ষা খাতে সহযোগিতা বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে। কিছুদিন আগেই এই বিল পাস হয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.