আমেরিকার শেকড় থেকে শিরায় শিরায় বর্ণবাদ : ওবামা

আমেরিকার শেকড় থেকে শিরায় শিরায় বর্ণবাদ। আমেরিকার বর্তমান সমাজ ব্যবস্থার শেকড়েই গভীরভাবে গেঁথে আছে বর্ণবাদ, সাদা-কালো বিদ্বেষ। এমন কথাই স্বীকার করে নিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। হোয়াইট হাউসে নাগরিক অধিকার আন্দোলনের একদল তরুণ কর্মীর সঙ্গে আলাপচারিতায় ওবামা বলেছেন, বর্ণবৈষম্য আমাদের সমাজে গভীরভাবে প্রোথিত, এটা আমাদের ইতিহাসের সঙ্গে জড়িত। সোমবার এ খবর দিয়েছে ওয়াশিটংন পোস্ট ও ডেইলি মেইল। বিইটি টেলিভিশনের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে ওই বৈঠকের কথা উল্লেখ করে ওবামা বলেন, আমি তাদের বলেছি, বর্ণবৈষম্য আমাদের সমাজের আদি প্রবাহ। এটা আমাদের ইতিহাস। এ বৈষম্য রোধের ব্যাপারে ওবামা বলেন, আমেরিকা আগের চেয়ে উন্নতি করেছে। এটা আমাদের এই আশা দেয় যে, ভবিষ্যতে আরও উন্নতি হবে। ওভাল অফিসের ওই তরুণ নাগরিক অধিকার কর্মীদের মধ্যে ফার্গুসনের একজন বিক্ষোভকারীও ছিল। ওবামা বলেন, আমি এ ব্যাপারে বিভিন্ন গোষ্ঠী ও সংগঠনের সঙ্গে সংলাপ চালিয়ে যাব। এ সমস্যা রাতারাতি সমাধান করা সম্ভব নয়। তবে দুটো বিষয় আমি বলতে পারি। প্রথমত, আমেরিকা আগের চেয়ে উন্নতি করেছে। আর দ্বিতীয়ত, আমাদের উপলব্ধিতে এসেছে এটা অত্যন্ত অমানবিক একটা যন্ত্রণার ব্যাপার। গত ৫০ বছর ধরে যা চলছে, তা আর চলতে দেয়া যায় না।
পূর্বাঞ্চলে নতুন করে বিক্ষোভ
যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালির্ফোনিয়ায় দ্বিতীয় দিনেও ব্যাপক বিক্ষোভ ভাংচুর ও লুটপাট হয়েছে। ভাংচুরের জের ধরে পুলিশের সঙ্গে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে বিক্ষোভকারীদের। সোমবার এএফপি জানায়, কৃষ্ণাঙ্গ হত্যার প্রতিবাদে বার্কলি ও সিয়াটল শহরে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের পর দেশটির পূর্ব উপকূলের শহরগুলোতে নতুন করে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। এসময় বিক্ষুব্ধ জনগণ ভাংচুর ও লুটপাট চালায়। রোববার সারাদিনই এ এলাকায় বিক্ষোভ সামলাতে পুলিশকে হিমশিম খেতে হয়। মিসৌরির ফার্গুসনে ১৮ বছরের নিরস্ত্র কৃষ্ণাঙ্গ তরুণকে গুলি করে হত্যায় সংশ্লিষ্ট শ্বেতাঙ্গ পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ না আনার আদালতের সিদ্ধান্তের পর যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে প্রতিবাদ বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। নিউইয়র্ক, শিকাগো, মিয়ামি, ডেট্রয়েট, অকল্যান্ড, ফিলাডেলফিয়াসহ যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন শহরে প্রতিবাদ বিক্ষোভ হয়। শিকাগোর বিক্ষোভকারীরা আমি নিঃশ্বাস নিতে পারছি না, হাত তোল, গুলি করো না লেখা সংবলিত ব্যানার নিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। এরই মধ্যে নিউইয়র্কে পুলিশের অসর্তকতায় আরেক কৃষ্ণাঙ্গ ব্যক্তির মৃত্যুর ক্ষেত্রেও অপর একজন শ্বেতাঙ্গ পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আদালতের অভিযোগ না আনার সিদ্ধান্তে আগের ক্ষোভে নতুন ইন্ধন যুক্ত হয়। চলতি বছরের জুলাইয়ে এক শ্বেতাঙ্গ পুলিশ কর্মকর্তা নিউইয়র্কে রাস্তায় ফেলে ঘাড়ের পেছনে হাত দিয়ে চেপে ধরে কৃষ্ণাঙ্গ এরিক গার্নারের দেহ তল্লাশির সময় তার মৃত্যু হয়েছিল। এই দুটি ঘটনার প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে আসে যুক্তরাষ্ট্রের শ্বেতাঙ্গ-কৃষ্ণাঙ্গ সব বর্ণের নাগরিকরা।

No comments

Powered by Blogger.