ভারতে যৌন হয়রানি রোধে কমিক চরিত্র

ভারতে ধর্ষণ ও যৌন হয়রানির বিরুদ্ধে সামাজিক প্রতিরোধ তৈরির লক্ষ্যে ‘প্রিয়ার শক্তি ’ নামে একটি কমিক চরিত্র তৈরি করেছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত আমেরিকান চলচ্চিত্রকার রাম দেবীনেনি। সিনেমায় নির্যাতিত মেয়েটিকে সুপারহিরো হিসেবে দেখানো হয়েছে, যিনি ধর্ষিত হবার পর আত্মহনন না করে নিপীড়কদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন। কিন্তু এমন চলচ্চিত্রের সাথে ভারতের প্রথাগত চলচ্চিত্রের পার্থক্য কতটা? জানতে চাইলে পশ্চিমবঙ্গের নারী অধিকার কর্মী অধ্যাপক শাশ্বতী ঘোষ বলেন, “সবাই কিন্তু হিন্দি সিনেমা দিয়ে ভীষণভাবে প্রভাবিত। হিন্দি সিনেমায় যা দেখানো হয় যে একটি মেয়ে যদি এভাবে নির্যাতিত হয় তাহলে তার সম্পর্কে হিন্দিতে যে শব্দ ব্যবহার করা হয় তা হলো জিন্দা লাশ। সে হচ্ছে একজন জীবন্ত মৃত মানুষ। সে ধরনের কথাই উঠে আসে”।তিনি আরও বলেন দেখা যায় কেউ ঘটনার শিকার হওয়ার পর সে আইনের উপর ভরসা করতে পারছেনা। বিচার ব্যবস্থা পুলিশ সবাই তাকে বিমুখ করছে। তখন সে নিজের হাতে প্রতিহিংসা তুলে নিচ্ছে। ফলে কোথাও কিন্তু আইন বা বিচার ব্যবস্থার উপর ভরসা রাখার কিছু দেখানো হয়না।মিস ঘোষ বলেন, “আমাদের দেশে ধর্ম এতোটাই গুরুত্ব পায়। কমিক চরিত্র, সেটার সাথে ধর্মীয় অনুষঙ্গ তৈরি করা গেলে সেটাও হয়তো কিছু মানুষের কাছে পৌছাতে পারে বলে মনে হয়”।
তিনি বলেন , “মানুষ তার জয়ের জন্য নিজের মধ্যকার শক্তি প্রয়োজন। আমি কোন অন্যায় করিনি, আমার সাথে অন্যায় করা হয়েছে-এই আত্মশক্তি সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন। তারপরেও চারপাশের মানুষ, যথাযথ চিকিৎসক, বিচারক-পুলিশের কাছে পড়েন তাহলে কিন্তু তিনি শেষ পর্যন্ত সুবিচারের আশা করেন”।
তিনি বলেন, “তার লড়াই কিন্তু তার একার না। বাকীদেরও বিশ্বাস করতে হবে যে তিনি কোন অন্যায় করেননি”।
তিনি আরও বলেন শুধু পুরুষরা নয়, মেয়েরাও অনেক সময় নিগ্রহের জন্য নিজেকে দায়ী করে। নিগৃহিতার উপর দোষারোপের পর্ব চলতে থাকে। ধর্মীয় অনুষঙ্গের মধ্যে কমিক করা হলে আপত্তি করবো তা নয়, তবে এর বাইরেও তা হতে পারে।
সূত্র: বিবিসি বাংলা

No comments

Powered by Blogger.