‘সরকার তাসের ঘরের মতো ভেসে যাবে’ -খালেদা জিয়া

ন্যায়সঙ্গত বিদ্রোহের সময় এসেছে দাবি করে নেতাকর্মীদের প্রস্তুতি সম্পন্ন করার নির্দেশনা দিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন ও ২০দলীয় জোটের শীর্ষ নেতা খালেদা জিয়া। বলেছেন, অন্যায়ের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করা ন্যায়সঙ্গত। আজ সে ন্যায়সঙ্গত বিদ্রোহ সংগঠিত করার সময় এসেছে। বিজয়ের মাসে সে প্রস্তুতি আমাদের সম্পন্ন করতে হবে। তিনি বলেন, আমাদের বসে থাকার আর কোন উপায় নেই। দেশের জনগণ আন্দোলন চায়, পরিবর্তন চায়। তারা ভোটাধিকার ফিরে পেতে চায়। ভোট দিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে চায়। সে জন্য তারা বিএনপি ও ২০ দলের প্রতি আন্দোলন করার জন্য প্রতিনিয়ত আহ্বান জানাচ্ছে। আমি যেখানেই যাচ্ছি, দলে দলে লোক এসে আন্দোলনের দাবি জানাচ্ছে। কাজেই জনগণকে সঙ্গে নিয়ে অচিরেই আমাদেরকে আন্দোলন শুরু করতে হবে। আমরা অস্ত্রের মোকাবিলায় জনগণকে সঙ্গে নিয়ে পথে নামবো। আজ রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল আয়োজিত মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশে দেয়া প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান। খালেদা জিয়া বলেন, আমাদের আন্দোলন হবে শান্তিপূর্ণ, নিয়মতান্ত্রিক, জনগণের আন্দোলন। জনগণের সে আন্দোলনে স্বৈরাচারী, অবৈধ সরকার তাসের ঘরের মতো ভেসে যাবে। তিনি বলেন, আমাদের দাবি খুব সামান্য। এদেশে গত ৫ই জানুয়ারি কোন ভোট হয়নি। ভোট ছাড়া কোন সরকার বৈধ হতে পাওে না। কাজেই এখন একটি অবৈধ সরকার জোর করে ক্ষমতায় আছে। আমরা একটি সত্যিকারের নির্বাচন চাইছি। যে নির্বাচনে ভোটাররা নির্বিঘেœ ও বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনায় ভোট দিতে পারবে। প্রতিদ্বন্দ্বী সকল রাজনৈতিক দল অংশ নিতে পারবে। সকল দলের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড থাকবে। কেউ ক্ষমতাসীন থেকে কেউ ক্ষমতাহীন থেকে নির্বাচন হতে পারে না। আর নির্বাচন কমিশন, প্রশাসন, পুলিশ এগুলোকে দল-নিরপেক্ষ অবস্থানে আনতে হবে। সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। খালেদা জিয়া বলেন, এমন একটি নির্বাচনের পন্থা আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে বের করার আহ্বান আমরা দীর্ঘদিন ধরে জানিয়ে আসছি। এর মধ্যে প্রায় এক বছর চলে গেছে। মানুষের অবস্থা ও দেশের পরিস্থিতি দিন-দিন খারাপ হচ্ছে। সকলের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। কিন্তু আমাদের শান্তিপূর্ণ আহ্বানে তারা সাড়া দেয়নি। তিনি বলেন, ৫ই জানুয়ারির প্রহসনে বিএনপিসহ কোন বিরোধীদল অংশ নেয়নি। এভাবে বিনাভোটে না-কি তারা গণতন্ত্র ও সংবিধান রক্ষা করেছে! আসলে সংবিধান, গণতন্ত্র, তারা রক্ষা করেছে ক্ষমতাকে। আর কেড়ে নিয়েছে জনগণের অধিকার। আর এ প্রহসনের উদ্দেশ্যেই তারা খেয়ালখুশি মতো একতরফাভাবে সংবিধান তছনছ করে ফেলেছিল। তারা মনে করে, তাদের এসব ধূর্ত অপকৌশল দেশ-দুনিয়ার মানুষ কিছুই বোঝে না।
খালেদা জিয়া বলেন, আমরা রক্ত দিয়ে গণতন্ত্র ও ভোটের অধিকার কায়েম করেছিলাম। আজ দেশে গণতন্ত্র নেই। বৈধ কোন গণতান্ত্রিক সরকার নেই। ভোটের অধিকার কেড়ে নেয়া হয়েছে। ন্যায়বিচার ও সুবিচার হরণ করা হয়েছে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে মানুষ দিশাহারা। মাদক-সন্ত্রাস-প্রশ্নপত্র ফাঁসে শিক্ষা ও তারুণ্য আজ বিপথগামী। সন্ত্রাস আজ সর্বব্যাপী। দখল ও দলীয়করণে সব প্রথা-প্রতিষ্ঠান বিপন্ন।
খালেদা জিয়া বলেন, আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধ ছিল জাতীয় জনযুদ্ধ। মুষ্টিমেয় বিরোধীতাকারী ছাড়া, দল-মত নির্বিশেষে সকল স্তরের মানুষ ছিল স্বাধীনতার পক্ষে। বাংলাভাষী সৈনিক, সীমান্তরক্ষী, আনসার, পুলিশের পাশাপাশি বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার তরুণেরা এবং ছাত্র-যুবকেরা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে যুদ্ধ করেছে। দুর্ভাগ্যের বিষয় স্বাধীনতার ঊষালগ্ন থেকেই মহান স্বাধীনতাযুদ্ধের সাফল্যকে দলীয়করণ করার অপচেষ্টা শুরু হয়। সেই হীন উদ্দেশ্যেই স্বাধীনতাযুদ্ধের ইতিহাসকেও বিকৃত করার প্রক্রিয়া চলে। আমি মুক্তিযোদ্ধা ভাই-বোনদেরকে বলবো, আপনারা দৃঢ়কণ্ঠে বলবেন, স্বাধীনতাযুদ্ধ কোন দলের যুদ্ধ ছিল না। এটা ছিল জাতীয়, জনযুদ্ধ। স্বাধীনতাযুদ্ধকে দলীয়করণের অপচেষ্টার বিরুদ্ধে আপনারা অতীতেও দাঁড়িয়েছেন, সব সময় দাঁড়াতে হবে।
বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, একটি দল দাবি করেÑ তারা স্বাধীনতাযুদ্ধ সংগঠিত ও নেতৃত্ব দিয়েছে। তাদের দাবি কতটা অসার তা এখন সেই দলভুক্ত লোকদের লেখা বই-পত্র এবং বক্তব্য থেকেই পরিষ্কার হয়ে গেছে। এখন ভিন্নমত পোষণ করলেই মুক্তিযোদ্ধাদেরকেও তারা ‘রাজাকার’ ও ‘পাকিস্তানের চর’ বলে লেবেল এঁটে দিতে দ্বিধাবোধ কওে না। আমি বলতে চাই, স্বাধীনতাযুদ্ধকে এভাবে দলীয় সম্পত্তিতে পরিণত করা সম্ভব হবে না। ইতিহাস তার স্বাভাবিক গতিতেই চলবে। গালাগালি ও হুমকি দিয়ে ইতিহাসের গতিপথ পরিবর্তন করা যাবে না। তিনি বলেন, নিরস্ত্র জনগণের ওপর সামরিক আক্রমণ কতটা নৃশংস ও ভয়াবহ হতে পারে, সে কথা কল্পনা করার শক্তিও আওয়ামী লীগের ছিল না। তাই স্বাধীনতার ঘোষণা দেয়ার অস্বীকৃতির পাশাপাশি তাদের সর্বশেষ পরামর্শ ছিল ‘নাকে তেল দিয়ে ঘুমানোর’। আক্রমণের মুখে কোন দিক-নির্দেশনা না দিয়ে পালিয়ে যাওয়া বা আত্মসমর্পণ করা ছাড়া তাদের কোন পথ খোলা ছিল না। তাদের এই ব্যর্থতার পটভূমিতে জিয়াউর রহমান বিদ্রোহ করে হানাদার বাহিনীর অধিনায়ক জানজুয়াকে হত্যা ও বাকিদের বন্দি করেছিলেন। বেতারের মাধ্যমে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে স্বাধীনতাযুদ্ধের সূত্রপাত ঘটিয়েছিলেন। তাঁর ঘোষণাই বিদ্রোহ উন্নীত হয়েছিল বিপ্লবে। প্রতিরোধযুদ্ধ উন্নীত হয়েছিল স্বাধীনতার যুদ্ধে। এটাই বাস্তবতা, ইতিহাসের অমোঘ সত্য। খালেদা জিয়া বলেন, সত্য আরও আছে। স্বাধীনতাযুদ্ধে নেতৃত্বের কথা বলেন? তাহলে শোনেন। ১৯৭১ সালের ১লা এপ্রিল থেকে ৪ঠা এপ্রিল পর্যন্ত বৃহত্তর সিলেটের অন্তর্গত বর্তমান হবিগঞ্জ জেলার তেলিয়াপাড়া চা-বাগানে মুক্তিযুদ্ধের সামরিক কমান্ডাররা বৈঠক করেন। সেই বৈঠকে মুক্তিফৌজ গঠন, সেক্টর বিভাজন এবং সর্বাধিনায়ক নির্ধারণ ও সেক্টর কমান্ডারদের দায়িত্ব ও যুদ্ধ-এলাকা বণ্টন করা হয়। সেই বৈঠকেই রেজিলিউশন নেয়া হয়। নির্বাচিত রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দকে খুঁজে বের করে তাদের সমন্বয়ে একটি সরকার গঠন করতে হবে এবং  সেই সরকারের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক সাহায্য ও সহযোগিতার আহ্বান জানাতে হবে। স্বাধীনতার যে ঘোষণা তখনকার নির্বাচিত রাজনৈতিক নেতাদের দেয়ার কথা ছিল, সেটা তারা দিতে পারেননি। সেটা দিয়েছিলেন জিয়াউর রহমান। মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক ও অধিনায়ক ঠিক করার কাজটিও তারা করতে পারেননি। এটাও সামরিক কমান্ডাররা নিজেরাই করেছেন। প্রবাসী সরকার গঠনের আগেই তা করা হয়েছিল। খালেদা জিয়া বলেন, একটা প্রবাসী সরকার যে গঠন করতে হবে, সেই তাগিদটাও তারা নিজেরা বোধ করেননি। তাগিদটা এসেছিল মুক্তিযুদ্ধের কমান্ডারদের কাছ থেকে। সেই অনুযায়ী ১০ই এপ্রিল আগরতলায় প্রবাসী সরকার গঠিত হয় এবং ১৭ই এপ্রিল মেহেরপুর জেলার সীমান্ত-সংলগ্ন আমবাগানে দেশী-বিদেশী সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে সেই সরকারের অভিষেক, স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রের আনুষ্ঠানিক উপস্থাপনা ও সালাম গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছিল। তিনি বলেন, রণাঙ্গনের লড়াইয়ে তারা অংশ নেয়নি বলেই মুক্তিযোদ্ধাদের কখনও আন্তরিকভাবে সম্মান ও মর্যাদা দেয়নি। ১৬ই ডিসেম্বর পরাজিত পাকিস্তানি সৈন্যদের আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে তারা মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক জেনারেল এম.এ.জি ওসমানী কিংবা প্রধান সেনাপতি অর্থাৎ চিফ অব আর্মি স্টাফ মেজর জেনারেল আবদুর রবের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে পারেনি। তাদের আস্থাভাজন ডেপুটি চিফ অব স্টাফ একে খন্দকারকে সেদিন বাংলাদেশের পক্ষ থেকে পর্যবেক্ষক হিসাবে পাঠানো হয়েছিল। সেই আস্থাভাজন ব্যক্তিটিও যখন স্বাধীনতাযুদ্ধের ইতিহাস ও পূর্বাহ্নের প্রস্তুতিহীনতা সর্ম্পকে কিছু সত্য কথা বলে ফেললেন, তখন তাকেও ‘পাকিস্তানের চর’ আখ্যা দিতে তারা দ্বিধাবোধ করেনি। বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, সাহস ও দেশপ্রেমে বলীয়ান হয়ে সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে তাদের এসব ব্যর্থতা ও দুর্বলতা আমাদের জাতীয় ইতিহাসের অংশ হয়ে আছে। স্বাধীনতা যুদ্ধে বলিষ্ঠ নেতৃত্ব প্রদানের ক্ষেত্রে এসব দুর্বলতার কারণেই স্বাধীনতার ইতিহাস নিয়ে তারা এতটা স্পর্শকাতর। তিনি বলেন, একটি বিশেষ দল স্বাধীনতাযুদ্ধের মনগড়া ইতিহাস বলে চলেছে। সেই খ-িত ও বিকৃত ইতিহাসকে শুদ্ধ করে বলতে গেলে কিংবা একটু চ্যালেঞ্জ করলেই তারা তেলে-বেগুনে জ্বলে উঠে। তথ্য-উপাত্ত দিয়ে কথা বললেও তারা তার সুষ্ঠু জবাব না দিয়ে শুরু করে দেয় অশ্লীল গালিগালাজ ও হুমকি-ধমকি। এর কারণ, স্বাধীনতাযুদ্ধে তাদের ভূমিকা ছিল প্রশ্নবিদ্ধ।  জাতির সেই ঘোর সংকটকালে তারা ইতিহাস-নির্ধারিত দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছিল। তারা স্বাধীনতাযুদ্ধের সময়েও সত্যিকারের সাহস ও দেশপ্রেমের প্রমাণ দিতে পারেনি। জাতীয় স্বাধীনতা অর্জন ও আক্রান্ত জনগণকে রক্ষার চেয়ে তারা নিজেদের ও তাদের পরিবারের নিরাপত্তার কথাই বেশি ভেবেছে। তারা ইতিহাসের সত্যের বদলে আবেগকে আশ্রয় করে নিজেদের ব্যর্থতা ও দুর্বলতাকে ঢাকতে চায়।
বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের সমন্বয়ে গঠিত এই দল মুক্তিযোদ্ধাদের কেন্দ্রে রেখে ইস্পাত কঠিন বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য গঠনে সব সময় সচেষ্ট। কোন মানুষই ত্রুটি-বিচ্যুতি, ভুল-ভ্রান্তি ও ব্যর্থতা থেকে মুক্ত নয়। কেউ-ই সকল সমালোচনার উর্ধ্বে নয়। তাই সরকারে থাকতে আমি নিজে জাতীয় সংসদে একটি প্রস্তাব দিয়ে বলেছিলাম, শেরে বাংলা একে ফজলুল হক, মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, মরহুম শেখ মুজিবুর রহমান ও শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান, জাতির এই পাঁচ কৃতি-সন্তানকে জাতীয় নেতা হিসাবে মর্যাদা দিয়ে সকল বিতর্কের উর্ধ্বে রাখা হোক। দুর্ভাগ্যের বিষয় এতে তাদের সম্মতি মেলেনি। উল্টো তারা শহীদ জিয়া ও অন্যান্য জাতীয় নেতাদের সম্পর্কে কুরুচিপূর্ণ ভাষায় আক্রমণ অব্যাহত রেখেছেন। শহীদ জিয়ার নাম-নিশানা মুছে দেয়ার জন্য সর্বপ্রকার অপচেষ্টা চালিয়েছেন। আমি বলতে চাই, দেশের মানুষ যদি কাউকে সম্মান দিতে না চায়, তাহলে আইন জারি করে কিংবা রাষ্ট্রীয় বা দলমন্য কোন প্রাতিষ্ঠানিক নির্দেশনা দিয়ে তাকে সম্মানিত করা যায় না। বক্তব্যের শুরুতেই তিনি মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা, স্বাধীনতাযুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারসমূহের প্রতি সহানুভূতি, মুক্তিযোদ্ধাদের অভিনন্দন ও দেশবাসীকে বিজয়ের মাসে শুভেচ্ছা জানান।
সমাবেশে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ভূলুন্ঠিত করছে আওয়ামী লীগ। পুরো দেশকে কারাগারে পরিণত করেছে। এমন একটি গ্রাম নেই যেখানে বিএনপি নেতাদের নামে মিথ্যা মামলা দেয়া হয়নি। যার কোন ভিত্তি নেই। তিনি বলেন, এখন আর আমাদের হাতে সময় নেই। জনগণের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনতে হলে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। ৭১- যারা যুদ্ধ করেছিলেন সেই চেতনা নিয়ে তাদেরকে আবারও গণতন্ত্র রক্ষার আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে এলডিপি সভাপতি কর্নেল (অব.) অলি আহমদ বীরবিক্রম বলেন, কেউ দেশকে বাপের তালুক মনে করে ক্ষমতায় জোর করে বসে থাকবে আর দেশের চার কোটি বেকার যুবক আঙুল চুষবে না। অবিলম্বে এই অগণতান্ত্রিক সরকারের পতন হবে। গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, সামনে আমাদের জন্য কঠিন সময় আসছে। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা যদি রাজনৈতিক দলের কর্মী হয়ে যান তাহলে দেশের জন্য বিপদ। জিয়াউর রহমানের নামে আমেরিকার একটি রাস্তার নামকরণ হয়েছেÑ কিন্তু বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত কি করে এর বিরুদ্ধে কথা বলেন। তিনি কি আওয়ামী লীগের লোকÑ এমন প্রশ্ন রাখেন তিনি।  
খালেদা জিয়া সমাবেশস্থলে উপস্থিত হলে মুক্তিযোদ্ধা দলের পক্ষ থেকে তাকে একটি ক্রেস্ট উপহার দেয়া হয়। মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাতের সভাপতিত্বে সমাবেশে কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জে. (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বীরপ্রতীক, বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, মির্জা আব্বাস, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, মেজর (অব.) হাফিজউদ্দিন আহমেদ বীরবিক্রম, শমসের মবিন চৌধুরী বীরবিক্রম, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর, অর্থবিষয়ক সম্পাদক আবদুস সালাম,  প্রচার সম্পাদক জয়নুল আবদিন ফারুক, কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি এড. ফজলুর রহমান, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাধারণ সম্পাদক শফিউজ্জামান খোকন, মুক্তিযোদ্ধা দলের কেন্দ্রীয় নেতা ইসমাঈল হোসেন বেঙ্গল, শাহ মো. আবু জাফর, লেবু কাজী, মেজর (অব.) আসাদুজ্জামান, কর্নেল (অব.) মনিরুজ্জামান, আবদুল মান্না, মোজাফফর আহমেদ, মুকছেদ আলী, আবদুল হালিম, ইঞ্জিনিয়ার ড. শাহ আলম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। এছাড়া সমাবেশে সাংবাদিক ও কবি ফরিদ কামাল একটি কবিতা আবৃতি করেন।
১০ মুক্তিযোদ্ধাকে সম্মাননা
অনুষ্ঠানে ১০ মুক্তিযোদ্ধার হাতে ২০ হাজার টাকা করে নগদ আর্থিক সহায়তা ও সম্মানান তুলে দেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। সম্মাননাপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধারা হলেনÑ মোশাররফ হোসেন, খোরশেদ আলম, জিয়াউল হক, মতিউর রহমান, মো. শাহজাহান, আবু ইউসুফ হাওলাদার, আবদুল আজিজ, মো. রমজান আলী, আবুল কালাম আজাদ ও মো. মোহন মিয়া।

No comments

Powered by Blogger.